ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি হামলায় গতকাল রোববার অন্তত ৭২ জন নিহত হয়েছেন। গাজার চিকিৎসাসেবা–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাতে এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল ইসরায়েলি হামলায় শুধু গাজা সিটি ও উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৭ জন।
গাজা সিটিতে অবস্থানরত আল-জাজিরার সাংবাদিক মোয়াথ আল-কাহলৌত স্থানীয় আল-আহলি হাসপাতালের পরিস্থিতিকে ‘বিপর্যয়কর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়ুনগাজায় ২৪ ঘণ্টায় ৮১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা২৮ জুন ২০২৫মোয়াথ আল-কাহলৌত জানান, জেইতুন ও সাবরা এলাকার পাশাপাশি আল-জাওয়িয়া বাজারে ইসরায়েলি হামলায় আহত বেশ কিছু বেসামরিক মানুষ এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসেন।
আল-জাজিরার সাংবাদিক বলেন, ‘সেখানে প্রচুর আহত মানুষের ভিড়। তাঁদের মধ্য শিশুরাও রয়েছে। তাঁদের সবার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত শয্যা ও চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই। অনেকে মাটিতে পড়ে থেকে কাতরাচ্ছেন। তীব্র সংকটের কারণে হাসপাতালটি সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।’
গতকালের নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে খাদ্যসহায়তা নিতে যাওয়া অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি রয়েছেন। চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, রাফার উত্তরাঞ্চলে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত একটি সহায়তাকেন্দ্রে ত্রাণ নেওয়ার জন্য জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলায় এই পাঁচজন নিহত হন।
আরও পড়ুনগাজার শিশুদের এসব ছবি হৃদয় ভেঙে দেয়২০ ঘণ্টা আগেহামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
তবে গত শুক্রবার ইসরায়েলের সংবাদপত্র হারেৎজ এক গবেষণার বরাতে জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এটি উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ শতাংশের সমান।
আরও পড়ুনগাজায় অনাহারে ৪ বছরের শিশুর মৃত্যু, তীব্র অপুষ্টিতে ৭০ হাজারের বেশি২৫ মে ২০২৫আরও পড়ুনইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রায় ১ লাখ ফিলিস্তিনি নিহত২৮ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
রায় ঘোষণার পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত সরকার: রিজওয়ানা হাসান
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ সোমবার সকালে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে ‘দ্য সোল অব জুট’ নামে এক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
দেশের নাশকতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বিদেশ থেকে কারা ইনফ্লুয়েন্স করেছে, দেশ থেকে কারা ওই বাসটাকে আগুন দেওয়ার জন্য ইনফ্লুয়েন্স করেছে, নামগুলো আপনারা জানেন। তদন্ত করে সরকার যে নামগুলো পাচ্ছে, সে নামগুলোই দিচ্ছে বলে আমার বিশ্বাস। এরপর কারও যদি মনে হয় তাঁর কাছে আরও তথ্য আছে, তাহলে সরকারকে জানান।’
সহিংসতা নিয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকার বিষয়ে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, সহিংসতা, ককটেল মারা এসব ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও আরও একটু দায়িত্বশীল হওয়ার সুযোগ আছে। গণমাধ্যম চাইলে আতঙ্কটা ছড়াতে পারে; আবার যারা এই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত, তাদের নিন্দা করে সহিংসতার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পারে।
গতকাল রোববার রাতে রিজওয়ানা হাসানের বাসায় ককটেল বিস্ফোরণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন ‘আপনার বাসায় ককটেল মারবে আর আপনি নিশ্চিন্ত থাকবেন, তা তো হতে পারে না। তবে আতঙ্কিত হওয়া এক জিনিস, আর নিশ্চিন্ত না থাকা আরেক জিনিস। এবং সতর্ক হওয়া আরেক ব্যাপার। কথা হচ্ছে যে এ রকম একটা শান্ত পরিবেশে যে এ রকম অস্থিতিশীলতা গড়ে তোলা হচ্ছে, এটার ব্যাপারে জনমত গড়ে তুলতে হবে। আপনারা এগিয়ে আসুন। সরকারের যা করার সরকার তা করবে।’
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘যাতে সহিংসতা বৃদ্ধি না পায়, সে জন্য গণমাধ্যম এগিয়ে আসুক। যাতে সহিংসতা বৃদ্ধি না পায় সে বার্তাটা যেন গণমাধ্যম প্রচার করে।’
গতকাল রাত ৯টার দিকে রাজধানীর সেন্ট্রাল রোড এলাকায় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাসার সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।