নতুন মামলায় গ্রেপ্তার মমতাজসহ ৪ জন, রিমান্ডে সাবিনা-মুরাদ
Published: 30th, June 2025 GMT
ঢাকার কোতোয়ালি থানার দায়ের করা হত্যা মামলায় মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (৩০ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্রের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এছাড়া, হত্যা মামলায় ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাসকে, ধানমন্ডিতে শিক্ষার্থী শামীম হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদকে এবং যাত্রাবাড়ীতে মাদ্রাসাশিক্ষক মঈনুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা মামলায় নোয়াখালী জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো.
এদিকে, শেরেবাংলা নগর থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এবং ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিনের দুই দিন এবং রাজধানীর ধানমন্ডিতে আব্দুল মোতালেব ওরফে মুন্না নিহতের মামলায় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদককে এক দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।
এরআগে চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। সাবিনা আক্তার তুহিনের সাত দিন এবং শাহে আলম মুরাদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির দিন সোমবার ধার্য করেন। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালত হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত চার জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। দুই জনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
শাওন মুফতি হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৫ আগস্ট রাতে শাওন মুফতি আন্দোলনে অংশ নিয়ে তাঁতীবাজার মোড়ের বুকের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। এর দুই ঘণ্টা পর রাত দেড়টায় তাকে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় তার মা মাকসুদা বেগম গত ২৮ মে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া, অজ্ঞাত আরো ১০০–১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
যাত্রাবাড়ীতে মাদ্রাসাশিক্ষক মঈনুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৭৪ জনের বিরুদ্ধে ২০ সেপ্টেম্বর থানায় মামলা করেন মঈনুলের বাবা কামরুল ইসলাম। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২১ জুলাই বেলা দুইটার দিকে যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া উড়ালসড়কে ছাত্র-জনতার মিছিল চলছিল। মিছিলে অংশ নেন মঈনুল। তখন স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিলে হামলা চালান ও গুলি ছোঁড়েন। এতে মঈনুল গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিন রাতে তিনি মারা যান। নিহত মঈনুল ডেমরার আহসানুল হিকমা মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন।
শামীম হত্যা মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় ছাত্র জনতার সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন শিক্ষার্থী শামীম (১৩)। মিছিলটি কলাবাগান এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের অতর্কিত আক্রমণে আহত হন শামীম। এরপর তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে পরের দিন ৬ আগস্ট ডাক্তার মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় গত ৩ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২৮ জনের নামে মামলা করেন নিহতের মা জাহানারা বেগম।
সাবিনা আক্তারের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে যুব মহিলা লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইশরাত জাহান নাসরিনসহ অজ্ঞাতনামা ১৪ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতিকারী শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামনে নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল করে।
পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের কার্যক্রম গতিশীল ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের পদত্যাগের দাবি করে স্বাধীন দেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করে। এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ।
শামীম হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট ধানমন্ডিতে ১৪ বছরের শিশু আব্দুল মোতালেব ওরফে মুন্না নিহত হন। পরে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়।
ঢাকা/এম/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ধ নমন ড জ র কর আগস ট ঘটন য় মঈন ল আওয় ম সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
নাটোরে রাস্তা নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষে এনসিপি নেতাসহ আহত ৫
নাটোরের বড়াইগ্রামে রাস্তা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। সোমবার (৩০ জুন) সকালে উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
আহতরা হলেন- এনসিপির বড়াইগ্রাম উপজেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক নুহু ইসলাম (৩৪), তার বাবা রফিকুল ইসলাম রাফি (৭০), মুরাদ হোসেন (৯২), তার ছেলে সেলিম হোসেন (৩৩) ও স্ত্রী রাহেদা বেগম (২৮)। গুরুতর আহত মুরাদ হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এবং অন্য চারজনকে বড়াইগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রীরামপুর গ্রামে মুরাদ হোসেনের ব্যক্তিগত জমিতে অনেক আগে থেকে পায়ে চলাচলের একটি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। বৃষ্টি হলেই সেখানে কাদা জমে। সম্প্রতি এনসিপির দলীয় ফান্ড থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে নুহু ইসলাম ওই রাস্তায় ইট বিছাতে যান। এতে বাধা দেন মুরাদ হোসেন। এ নিয়ে আজ কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আহত হন কয়েকজন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ভ্যান চুরিকে কেন্দ্র করে ২ পক্ষের সংঘর্ষ
গাজীপুরে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষ
এনসিপি নেতা নুহু ইসলাম বলেন, “আমাদের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে চলাচলের রাস্তাটি কাঁচা হওয়ায় বৃষ্টি হলেই কাদা জমে। দলীয় ফান্ড থেকে সহায়তা নিয়ে সেখানে ইটের কাজ করতে গেলে মুরাদ হোসেনসহ তারা লোকজন হামলা করেন। তারা আমাকে ও বাবাকে জখম করেছে।’
মুরাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল হাই বলেন, “আমাদের ব্যক্তিগত জমি দিয়ে পায়ে চলার রাস্তা দিয়েছি। সেটাই পাকা করে দখলের চেষ্টা করছিলেন নুহু ইসলামরা। বাবা নিষেধ করতে গেলে তারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমার বাবা, ভাই ও ভাবিকে গুরুতর জখম করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমার বাবার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।”
বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “এ ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জেনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ