যৌতুকের টাকা না পেয়ে সন্তানকে বিক্রি
Published: 1st, July 2025 GMT
যৌতুকের টাকা না পেয়ে নবজাতক সন্তানকে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত ওই নারীকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জয়শ্রী গ্রামে।
অভিযুক্ত স্বামী জয়শ্রী গ্রামের হাতেম আলী সরদারের ছেলে মনজুর আলম সরদার (৪৪)। ভুক্তভোগী নারীর নাম রোজিনা বেগম (৩০)।
রোজিনা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকেই মনজুর আলম তাকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে বাবার বাড়ি থেকে কয়েক দফায় মোটা অঙ্কের যৌতুক আদায় করেন। সর্বশেষ বাবার বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আনার জন্য চাপ দেন।
তিনি আরও জানান, তিন মাস পূর্বে তাদের ছেলে হয়। কিন্তু স্বামী তাকে জানায়, ছেলে নয়, মেয়ে হয়েছে এবং অসুস্থ হওয়ায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর সে মারা গেছে। লাশ দেখতে চাইলে তার স্বামী বলেন, লাশ আনা হয়নি।
রোজিনা বেগম জানান, গত ৩০ জুন বিকেলে তিনি জানতে পারেন মনজুর আলম নবজাতক ছেলেকে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় মনজুর আলম তাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।
প্রতিবেশীদের কাছে রোজিনার স্বজনরা খবর পেয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে উজিরপুর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে মনজুর আলম সরদার বলেন, ‘‘আমি মারধর করিনি। উল্টো সে আমাকে মারধর করেছে।’’
নবজাতক বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওই সময় আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তির কাগজে আমি স্বাক্ষর করিনি, তাই এ বিষয়ে আমি দায়ী নই। নবজাতক সন্তানের কি হয়েছে আমি জানি না।’’
উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো.
ঢাকা/পলাশ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মনজ র আলম
এছাড়াও পড়ুন:
লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণে এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে সরকারের চুক্তি
লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এই চুক্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই পক্ষ এ চুক্তিতে সই করে। এতে ডেনমার্ক, বাংলাদেশ সরকার ও বন্দর সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা অংশ নেন।
চুক্তিতে সই করেন এপিএম টার্মিনালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টেইন ভ্যান ডোঙ্গেন ও চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
ডেনমার্কের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইবিএস এপিএম টার্মিনালসের হেড অব ইনভেস্টমেন্ট ভাস্কর সেনগুপ্ত, ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্ডলোসে হ্যানসেন ও বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার। বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.) ও নৌপরিবহন সচিব নুরুন্নাহার চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনবলেন, ‘এই চুক্তি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতির জন্য বড় অবদান। যাঁদের মধ্যে এ নিয়ে সন্দেহ ছিল, আশা করি, আজ তা দূর হবে।’ তাঁর আরও আশা, এই ধারাবাহিকতায় মোংলা সমুদ্রবন্দর পরিচালনায়ও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।
পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী বলেন, ‘লালদিয়া দেখিয়ে দিয়েছে—পিপিপি শুধু তত্ত্বে নয়, বাস্তবেও কার্যকর। ভবিষ্যতেও আমরা বাস্তবায়ন-কেন্দ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নেই মনোযোগ দেব।’ তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক বছরে চারটি নতুন সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে আছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর, একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ও একটি নির্ধারিত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল।
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত পাঁচ দশকে দুই দেশের উন্নয়ন সহযোগিতার সফলতা দেখা গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমাদের সম্পর্ক সহায়তা থেকে ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। মাথাপিছু হিসাবে ডেনমার্ক বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য। বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্য পূরণে লালদিয়া প্রকল্প নতুন মাইলফলক।’
পরিবহন কোম্পানি মেয়ার্স্কের চেয়ারম্যান রবার্ট মেয়ার্স্ক উগলা বলেন, লালদিয়া হবে অত্যাধুনিক গ্রিনফিল্ড টার্মিনাল; সেখানে নিরাপত্তা, অটোমেশন ও স্থায়িত্বের সর্বোচ্চ মান থাকবে। এতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। সেই সঙ্গে লজিস্টিকস খাতের অগ্রযাত্রায় এটি বিশেষ মুহূর্ত হয়ে থাকবে।