ঢাকা সফরে আসছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থার প্রধান
Published: 1st, July 2025 GMT
বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে আলোচনার জন্য তুরস্কের প্রতিরক্ষাশিল্প সংস্থার (এসএসবি) প্রধান অধ্যাপক হালুক গরগুন আগামী ৮ জুলাই ঢাকায় আসছেন।
এক দিনের সফরে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পাশাপাশি তিনি সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এসব বৈঠকে দু’দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো, প্রশিক্ষণ, গবেষণা, সমরাস্ত্র কেনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে ঢাকার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বাড়ছে তুরস্কের। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে বৈচিত্র আনা ও একক নির্ভরতা কমাতে বাংলাদেশ তুরস্কসহ পশ্চিমের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে সমরাস্ত্র কিনছে। এরই অংশ হিসেবে ২০২১ সালে তুরস্কের সমরাস্ত্রের চতুর্থ বৃহত্তম ক্রেতা ছিল ঢাকা। তখন ১০০ কোটি ডলারের সমরাস্ত্রের ক্রয়াদেশ দেয় বাংলাদেশ।
ডিফেন্স টেকনোলজি অব বাংলাদেশের (ডিটিবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, তুরস্কের অন্যতম প্রধান অস্ত্র প্রস্তুতকারক ও প্রতিরক্ষা ঠিকাদার রোকেতসান জুনে বাংলাদেশকে ৩০০ কিলোমিটার (১৮৬ মাইল) পাল্লার টিআরজি-৩০০ কাপলান ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে।
তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানায়, সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিরক্ষা হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিজ (বিওএফ) বিমান প্রতিরক্ষা ও ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রকল্প নিয়েছে। সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ফোর্সেস গোল ২০৩০ অর্জন করা এ প্রকল্পের লক্ষ্য। এক্ষেত্রে তুরস্ক সহায়ক হতে পারে। এ ছাড়া বিগত সাত বছরে তুরস্কের তৈরি বারাক্তার টিবি-২ ড্রোনসহ অন্তত ১৫ ধরনের আধুনিক সমরাস্ত্র কিনেছে বাংলাদেশ।
সমরাস্ত্রবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, আঙ্কারার কাছ থেকে এরইমধ্যে কোবরা আর্মার্ড পারসোনাল ক্যারিয়ার ও স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছে ঢাকা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত রস ক সমর স ত র ত রস ক র
এছাড়াও পড়ুন:
লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণে এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে সরকারের চুক্তি
লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এই চুক্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই পক্ষ এ চুক্তিতে সই করে। এতে ডেনমার্ক, বাংলাদেশ সরকার ও বন্দর সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা অংশ নেন।
চুক্তিতে সই করেন এপিএম টার্মিনালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টেইন ভ্যান ডোঙ্গেন ও চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
ডেনমার্কের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইবিএস এপিএম টার্মিনালসের হেড অব ইনভেস্টমেন্ট ভাস্কর সেনগুপ্ত, ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্ডলোসে হ্যানসেন ও বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার। বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.) ও নৌপরিবহন সচিব নুরুন্নাহার চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনবলেন, ‘এই চুক্তি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতির জন্য বড় অবদান। যাঁদের মধ্যে এ নিয়ে সন্দেহ ছিল, আশা করি, আজ তা দূর হবে।’ তাঁর আরও আশা, এই ধারাবাহিকতায় মোংলা সমুদ্রবন্দর পরিচালনায়ও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।
পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী বলেন, ‘লালদিয়া দেখিয়ে দিয়েছে—পিপিপি শুধু তত্ত্বে নয়, বাস্তবেও কার্যকর। ভবিষ্যতেও আমরা বাস্তবায়ন-কেন্দ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নেই মনোযোগ দেব।’ তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক বছরে চারটি নতুন সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে আছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর, একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ও একটি নির্ধারিত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল।
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত পাঁচ দশকে দুই দেশের উন্নয়ন সহযোগিতার সফলতা দেখা গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমাদের সম্পর্ক সহায়তা থেকে ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। মাথাপিছু হিসাবে ডেনমার্ক বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য। বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্য পূরণে লালদিয়া প্রকল্প নতুন মাইলফলক।’
পরিবহন কোম্পানি মেয়ার্স্কের চেয়ারম্যান রবার্ট মেয়ার্স্ক উগলা বলেন, লালদিয়া হবে অত্যাধুনিক গ্রিনফিল্ড টার্মিনাল; সেখানে নিরাপত্তা, অটোমেশন ও স্থায়িত্বের সর্বোচ্চ মান থাকবে। এতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। সেই সঙ্গে লজিস্টিকস খাতের অগ্রযাত্রায় এটি বিশেষ মুহূর্ত হয়ে থাকবে।