ফিলিস্তিনের গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করার জন্য ‘প্রয়োজনীয় শর্তাবলী’ মেনে নিয়েছে ইসরায়েল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন।

নিজের মালিকানাধীন সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘প্রস্তাবিত চুক্তি কার্যকর থাকার সময় যুদ্ধ বন্ধে (স্থায়ীভাবে) আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করব।’ তবে চুক্তির শর্তের বিষয়ে ট্রাম্প বিস্তারিত কিছু জানাননি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর পোস্টে আরও লেখেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তায় কাতার ও মিসরবাসী কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তাঁরাই চূড়ান্ত চুক্তির প্রস্তাব দেবেন। আশা করি, হামাস চুক্তিটি গ্রহণ করবে। কারণ, এটি আর ভালো হবে না; বরং এটি শুধু আরও খারাপ হতে পারে (অর্থাৎ এ চুক্তিই হামাসের জন্য সবচেয়ে ভালো সুযোগ। যদি তারা এটি প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে ভবিষ্যতে হয়তো আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে)।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালান ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা। ইসরায়েলের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়। ইসরায়েল থেকে দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নেওয়া হয়।

হামলার জবাবে ওই দিনই অবরুদ্ধ গাজায় তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এখন অবধি চলমান থাকা নির্বিচার ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাটিতে ৫৬ হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যাও লাখ ছাড়িয়েছে। এসব তথ্য হামাসনিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।

আরও পড়ুনইসরায়েলের কাছে ৫১ কোটি ডলারের বোমার সরঞ্জাম বিক্রির সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের২১ ঘণ্টা আগে

হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের গতকালের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে নিয়েছে কি না, সেটা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। আর ইসরায়েলের তরফেও জানা যায়নি আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া।

আসছে সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগেই ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির শর্ত মানার বিষয়ে নেতানিয়াহুর ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানালেন। যদিও ট্রাম্প বলে রেখেছেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি ‘অত্যন্ত দৃঢ়’ মনোভাব দেখাবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গতকাল আরও বলেন, নেতানিয়াহু গাজায় লড়াই বন্ধ করতে চান, এটা তিনি বিশ্বাস করেন।

আরও পড়ুনগাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্ত করার দাবিতে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ২৯ জুন ২০২৫আরও পড়ুনইসরায়েলের যুদ্ধবিমানের হামলা থেকে বাদ গেল না ক্যাফেও, গাজায় এক দিনে নিহত ৯৫০১ জুলাই ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীর হাতের কব্জি কাটল সন্ত্রাসীরা

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় দাবি করা চাঁদার টাকা না পাওয়ায় মো. সালাউদ্দিন রিদন (৩২) নামে এক প্রবাসীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমসহ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

আহত মো. সালাউদ্দিন রিদন উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর এলাকার গনি বাড়ির লাকি বেগমের ছেলে। পরিবারের অভিযোগ, হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি।

শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌরাস্তার আলীপুরের কন্ট্রাক্টর পোলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত অবস্থায় রিদনকে প্রথমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী প্রবাসী রিদনের মামা আব্দুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, “রিদন তার মায়ের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত ১ বছর আগে তিনি দেশে আসেন। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে তার নতুন করে কাতার যাওয়ার কথা ছিল। তার মা বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় রয়েছেন। গত ৩-৪ মাস আগে রিদন তাদের আলীপুর গ্রামের নিজ বাড়ির কিছু পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে দেন।” 

তিনি বলেন, “ওই সম্পত্তি বিক্রির পর স্থানীয় রকি, সোহাগ, রাহাত, ফাহাদ ও জাকের রিদনের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে বিরোধ এড়াতে রিদন তার মায়ের পরামর্শে উপজেলার কন্ট্রাক্টর পোল এলাকায় বাসা ভাড়া নেন।”

তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, “শনিবার দুপুরে রিদন মোটরসাইকেলযোগে ভাড়া বাসা থেকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে চৌমুহনী পৌরসভার চৌরাস্তার আলীপুরের জয়নাল আবেদিন স্কুল এলাকায় গতিরোধ করে রকি, সোহাগ, রাহাত, ফাহাদসহ তাদের সহযোগীরা রিদনকে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে বাম হাতের কবজি কেটে দেয় এবং কনিষ্ঠা আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ওই সময় হামলাকারীরা তার সঙ্গে থাকা ৫ লাখ টাকা, একটি মোটরসাইকেল ও একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।”

অভিযুক্ত রকি, সোহাগ, রাহাত, ফাহাদ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ করেন মামা আব্দুল কাদের।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে রকি, সোহাগ ও রাহাতের  মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে। ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/সুজন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ