পটুয়াখালীতে দশমিনায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার চিংগড়িয়ায় হামলার শিকার হন ফাহিম হোসেন (১৮)। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি বাউফলের নওমালা ইউনিয়নের ভাংরা গ্রামে। হামলা থেকে তাকে রক্ষায় এগিয়ে গিয়ে ছুরিকাহত হন ফাহিমের বাবা জাকির হোসেন বয়াতী। তিনি বরিশালে চিকিৎসাধীন। 

এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে হামলাকারী যুবকের চার চাচার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ হয়েছে। তবে কারা এতে জড়িত এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ফাহিমের ওপর হামলার পেছনে এক মাদক কারবারির সঙ্গে বিরোধের বিষয় জানা গেছে। 

নিহত ফাহিম নওমালা আব্দুর রশিদ খান ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। তিনি চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। 

স্বজন, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পণ্য কেনার জন্য ফাহিম পাশের ধলুফকিরের বাজারে যান। সেখানে তার সঙ্গে দেখা হয় মাদক কারবারে অভিযুক্ত শাকিল মীরের সঙ্গে। জমিসংক্রান্ত বিষয়ে তাদের পরিবারের মধ্যে বিরোধ আছে। 

এ ছাড়া সম্প্রতি ফাহিম এলাকাবাসীকে জানান, শাকিল মাদকের বড় সিন্ডিকেটে জড়িত। মঙ্গলবার কৌশলে ফাহিমকে ধলুফকিরের বাজার থেকে সেতুতে নিয়ে যায়। সেখানে এসব বিষয়ে দু’জনের তর্কাতর্কি হয়। এ সময় সেতুর পূর্বপাশের চিংগড়িয়ায় নিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ফাহিমকে উপুর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে শাকিল। এ সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। 

স্বজনেরা জানায়, ফাহিমকে ছুরিকাঘাতে সংবাদ শুনে দ্রুত সেখানে ছুটে যান তাঁর বাবা জাকির হোসেন বয়াতী। এ সময় তাঁকেও ছুরি দিয়ে ১০-১২টি আঘাত করে পালিয়ে যায় শাকিল। স্থানীয় লোকজন দু’জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফাহিমকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর বাবা জাকিরের অবস্থার অবনতি হলে রাতেই বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে পাঠানো হয়।

এদিকে ময়নাতদন্তের পর ফাহিমের লাশ বাড়িতে আনা হলে হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বাড়ির সামনের পাকা সড়কের জানাজা শেষে মরদেহ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। সেখানে কাঁদতে কাঁদতে ফাহিমের চাচা মস্তফা বয়াতী বলেন, ‘ফাহিম বংশের বড় ছেলে। আমরা দুই ভাই বাচ্চাদের মানুষ করতে যখন যেই কাজ পাই.

সেটাই করি। কিন্তু শাকিল ঢাকায় থাকে, দেশে আসে মাঝেমধ্যে। সে কয়েকবার ফাহিমকে শাসাইছে। আর সেই খুনি আমার বাবারে হত্যা করে বুকের ধন কেড়ে নিয়েছে। মোগো আশা শেষ করেছে খুনি, ওর বিচার চাই।’

অভিযুক্তের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ
এদিকে ফাহিম নিহত হওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পরলে গ্রেপ্তার আতঙ্কে মঙ্গলবার রাতেই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায় শাকিল মীরের পরিবারের সদস্যরা। তার বাবা আব্দুর রশিদ মীরের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি। রশিদের ঘরসহ তাঁর ভাই সানু মীর, ছালাম মীর ও কাসেম মীরের খালি বাড়িতে বুধবার দুপুরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয়ভাবে খোঁজখবর নিয়ে এতে কারা জড়িত, এ বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। 

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তারুজ্জামান বলেন, নিহত ফাহিমের বাড়ি বাউফলে। কিন্তু ঘটনাস্থল দশমিনার চিংগড়িয়ায়। তারপরও এ ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা করেছেন। দশমিনা থানার ওসি আব্দুল আলিম বলেন, সন্দেহভাজন শাকিলের চাচা শানু মীরকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে হত্যা মামলা নথিভুক্ত করবেন। 

পুলিশের এই দুটি কর্মকর্তাই জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে শাকিল ও তাঁর চাচাদের ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার সংবাদ পেয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ র ক ঘ ত হত য আগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে রূপান্তরিত সাঁতারুর পদক

দ্বিতীয় দফা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণের পর পররাষ্ট্রনীতিতে আরও কড়াকড়ি আরোপের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও কঠোর নীতি চালু করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যার মধ্যে একটি হলো মেয়েদের খেলায় রূপান্তরিত (ট্রান্সজেন্ডার) ক্রীড়াবিদদের নিষিদ্ধ করা।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের খড়্গ নেমে এসেছে লিয়া টমাসের ওপর। যুক্তরাষ্ট্রের এই রূপান্তরিত সাঁতারুর ব্যক্তিগত অর্জন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে তাঁর রেকর্ড মুছে ফেলার পাশাপাশি শিগগিরই পদক কেড়ে নেওয়া হবে।

রূপান্তরিত সাঁতারু লিয়া টমাসের পদক কেড়ে নেওয়া হবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ