ভুল রেলস্টেশনে নামা কিশোরীকে ‘ধর্ষণ’, যুবক গ্রেপ্তার
Published: 8th, July 2025 GMT
মায়ের সঙ্গে সিলেট থেকে ট্রেনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিজ বাড়িতে ফিরছিল এক কিশোরী (১৭)। সিলেট থেকে ভানুগাছ স্টেশন পর্যন্ত আসনবিহীন টিকিট কাটেন তারা। ট্রেনের বগিতে ভিড় থাকায় ভুল করে কুলাউড়া জংশন স্টেশনে নেমে পড়ে কিশোরী। কিন্তু মাকে খুঁজে না পেয়ে তার সন্দেহ হয়। তবে তার মধ্যেই ট্রেন ছেড়ে দেয়।
বাড়িতে ফিরতে পরবর্তী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিল সেই কিশোরী। তখন আক্তার আলী (২৮) নামের এক গাড়িচালকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ওই ব্যক্তি তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। এমনকি কিশোরীকে জিম্মি করে তার স্বজনের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি।
এ ঘটনায় কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। পরে আক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আক্তারের বাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কায়স্থ গ্রামে। তিনি পেশায় প্রাইভেটকারের চালক। কুলাউড়া রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন সিলেটে ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করতেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার ও কিশোরীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিশোরীর পরিবার হতদরিদ্র। সিলেটের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক স্বজনকে দেখে গত ৩০ জুন মায়ের সঙ্গে সে বাড়িতে ফিরছিল। ট্রেনে ভিড়ের মধ্যে মাকে হারিয়ে ফেলে। ভুলে কুলাউড়া রেলস্টেশনে নামার পর গাড়িচালক আক্তার আলী তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। এতে কিশোরী রাজি হয়ে গাড়িতে ওঠেন। আক্তার তাকে সিলেটের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে বিয়ের আশ্বাস দেন এবং একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন।
এজাহারে বলা হয়, নিখোঁজের সময় কিশোরীর কাছে একটি মোবাইল ফোন ছিল। সিলেটে যাওয়ার পর আক্তার তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। ওই মোবাইল ফোনে থাকা কিশোরীর এক আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে কথা বলেন। তখন তিনি নিজেকে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে জানান, কিশোরী তাঁর হেফাজতে আছে। তাকে ফেরত পেতে বিকাশে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় সোমবার রাতে নগরের কদমতলী এলাকা থেকে কিশোরীকে উদ্ধারের পাশাপাশি আক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কুলাউড়া রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপক দেওয়ান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আক্তার আলী অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কিশোরীকে মৌলভীবাজারের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নিখোঁজের ২ মাস পরে জঙ্গলে মিলল কিশোরের কঙ্কাল
নিখোঁজ দুই মাসে পরে জঙ্গল থেকে মিলন হোসেন (১৫) নামে এক কিশোরের কংঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সুমন মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের আমিন মডেল টাউন হাউজিংয়ের ভেতরের জঙ্গল থেকে ওই কিশোরের কঙ্কাল উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
নিহত মিলন হোসেন নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা থানার পারুলিয়া নোয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে। সে সাভারের আশুলিয়ার পাড়াগাঁও এলাকায় ইউনুস আলীর মালিকানাধীন বাড়িতে ভাড়া থেকে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো।
পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেলে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের মডেল টাউনের পাশে নিহত মিলন হোসেনের শরীরের গেঞ্জি ও প্যান্ট পড়ে থাকতে দেখেন নিহতের মা জোসনা বেগম। একটু সমানে গিয়ে তিনি একটি কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখেন। পরে সাভার মডেল থানা পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল ওহাব বলেন, “মিলনের মা কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের জানায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কঙ্কাল উদ্ধার করে। মূলত নিখোঁজ মিলনের গেঞ্জি প্যান্ট দেখে তার মা জোসনা বেগম তার ছেলের মরদেহ বলে দাবি করেন। আমরা কঙ্কাল উদ্ধার করে ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠিয়েছি।”
তিনি জানান, এ ঘটনায় নিহতের মা জোসনা বেগম আশুলিয়া থানায় একটি নিখোঁজের ঘটনায় মামলা করেছিলেন।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, “মিলন নিখোঁজের ঘটনায় তার মা আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিরেন। মিলন হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আশুলিয়া থেকে সুমন মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনেরগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রসঙ্গত, গত ২৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) সাভারের আশুলিয়ার পাড়াগাঁও এলাকার শামীমের রিকশার গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয় মিলন হোসেন। তার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। পরের দিন মিলনের মা জোসনা বেগম আশুলিয়া থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। এরপরে গত ১৮ নভেম্বর (মঙ্গলবার) জিডিটি মামলা হিসেবে আশুলিয়া থানায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ঢাকা/সাব্বির/এস