চাঁদাবাজির মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ চারজনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ ছাড়া শাহিন হোসেন নামের এক আসামিকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া অন্য আসামিরা হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঢাকা মহানগর মোহাম্মদপুর থানার যুগ্ম সমন্বয়কারী আবদুর রহমান, হাবিবুর রহমান ও মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।

পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সাবেক সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ পাঁচজনকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত চারজনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে শাহিনকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত।

ধানমন্ডিতে গত মে মাসে একজন প্রকাশকের বাসা ঘিরে মব সৃষ্টির ঘটনায় আটক হয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ তিনজন। তখন থানায় গিয়ে নিজের জিম্মায় তাঁদের ছাড়িয়ে নিয়েছিলেন এনসিপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ।

সেই রাব্বিসহ মোহাম্মদপুর এলাকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচজনকে গত রোববার একটি হাসপাতালে চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয় দিয়ে বছিলা এলাকার ‘সেফ হাসপাতালে’ গিয়ে তিন লাখ টাকা দাবি করেন।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় সেনাবাহিনী পাঁচজনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করে। হাসপাতালের মালিক তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। রাব্বির নামে আরও একটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের সেফ হাসপাতালে একটি মৃত শিশু জন্মগ্রহণকে কেন্দ্র করে সমন্বয়ক পরিচয়ে কয়েকজন এসে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় হাসপাতালমালিকের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান তাঁরা। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীকে ফোন করলে সেনাসদস্যরা গিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

আরও পড়ুনথানা থেকে হান্নান মাসউদের ছাড়িয়ে নেওয়া সেই সাইফুলসহ ৪ জন চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এর আগে গত ১৯ মে রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ধানমন্ডিতে হাক্কানী পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার বাসা ঘেরাও করেন। তখনো সাইফুলসহ কয়েকজনকে আটক করেছিল পুলিশ। পরদিন এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ থানায় গিয়ে মুচলেকা দিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে নেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ন ন ন ম সউদ ম হ ম মদপ র সমন বয়ক র ব ব সহ ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

পুরান ঢাকায় মামুন হত্যার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার হননি ‘নির্দেশদাতা’ রনি

রাজধানীর পুরান ঢাকায় আদালত এলাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাঈদ মামুন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল শনিবার সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন তাঁর স্ত্রী বিলকিস আক্তার। তবে মামলায় আসামি হিসেবে তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি। অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে নাম আসা রনি ওরফে ভাগনে রনি এখনো গ্রেপ্তার হননি। পুলিশের ভাষ্য, রনির নির্দেশে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে মামুনকে গুলি করে হত্যা করেন ফারুক ও রবিন।

আরও পড়ুনঅপরাধজগতের দ্বন্দ্বে মামুন খুন, দুই লাখ টাকার বিনিময়ে গুলি করেন দুজন: পুলিশ১২ নভেম্বর ২০২৫

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মামুন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে এ হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের পরদিনই ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন মো. ফারুক হোসেন ফয়সাল (৩৮), রবিন আহম্মেদ ওরফে পিয়াস (২৫), মো. রুবেল (৩৪), শামীম আহম্মেদ (২২) ও মো. ইউসুফ জীবন (৪২)। তাঁদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার হয়েছে। অস্ত্র আইনে মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলায় তাঁরা এখন ডিবি পুলিশের চার দিনের রিমান্ডে আছেন। তাঁদের মধ্যে ফারুক ও রবিন ১০টি গুলি চালিয়ে মামুনকে হত্যা করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আরও পড়ুনমামুন হত্যার পেছনে কি অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণ, শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের নাম আসছে যে কারণে১০ নভেম্বর ২০২৫

গত সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ফটকের বিপরীতে ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় মামুনকে। আদালতে হাজিরা দিয়ে বের হওয়ার সময় খুব কাছ থেকে দুই ব্যক্তি তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও শুটাররা পেছন থেকে গুলি ছোড়েন।

পুলিশ সংবাদ সম্মেলনে জানায়, আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। মামুনকে হত্যার জন্য চুক্তি হয়েছিল মাত্র দুই লাখ টাকার।

আরও পড়ুনশীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন হত্যায় ‘দুই শুটার’সহ ৫ জন আটক১১ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুরান ঢাকায় মামুন হত্যার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার হননি ‘নির্দেশদাতা’ রনি