আজ আসছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল
Published: 15th, October 2025 GMT
ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে আজ বিকেলেই বাংলাদেশে পা রাখবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় ক্রিকেট দল। দুইটি ভিন্ন ফ্লাইটে তাদের ঢাকা পা রাখার সূচি রয়েছে। এদিকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলও আজ বিকেলে দেশে ফিরবে।
বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল সীমিত পরিসরের সিরিজ খেলবে এবার। তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে দুই দলের। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হবে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। চট্টগ্রামে হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
মিরপুরে তিন ওয়ানডে হবে ১৮, ২১ ও ২৩ অক্টোবর। ম্যাচগুলো শুরু হবে দুপুর দেড়টায়। ২৪ অক্টোবর দুই দল চট্টগ্রাম সফর করবে। বন্দরনগরীতে প্রথম টি-টোয়েন্টি হবে ২৭ অক্টোবর ও দ্বিতীয়টি ২৯ অক্টোবর। শেষ টি-টোয়েন্টি হবে ৩১ অক্টোবর। তিন ম্যাচেই খেলা শুরু হবে সন্ধ্যা ছয়টায়।
এবারের সফরে শুধু সাদা বলেই খেলবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটাররা। সবশেষ ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলেছিলেন তারা। টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন তারও তিন বছর আগে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে দল
শাই হোপ (অধিনায়ক), অলিক আথানেজে, আকিম অগাস্ট, জেদিয়া ব্লেডস, কেসি কার্টি, রোস্টন চেজ, জাস্টিন গ্রিভস, আমির জাঙ্গু, শামার জোসেফ, ব্রেন্ডন কিং, গুড়াকেশ মোতি, খারি পিয়েরে, শেরফান রাদারফোর্ড, জেইডেন সিলস ও রোমারিও শেফার্ড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি দল
শাই হোপ (অধিনায়ক), অলিক আথানেজে, আকিম অগাস্ট, রোস্টন চেজ, জেসন হোল্ডার, আকিল হোসেন, আমির জাঙ্গু, শামার জোসেফ, ব্রেন্ডন কিং, গুড়াকেশ মোতি, রোভম্যান পাওয়েল, শেরফান রাদারফোর্ড, জেইডেন সিলস, রোমারিও শেফার্ড ও র্যামন সিমন্ডস।
ঢাকা/ ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট দল
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জের প্রথম শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণ, সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ-প্রতিবাদ
পুকুরপাড়ে ছায়াঘেরা চত্বর। চত্বরের মাঝখানে কিছু জায়গায় চারদিকে পাকা দেয়াল। উত্তর পাশের দেয়ালের মাঝামাঝি সবুজ বৃত্তের মধ্যে লাল সূর্য। লাল-সবুজের সামনেই বেদি। এটি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শহীদ মিনার। ভাষা শহীদদের স্মরণে ১৯৬৬ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল।
প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো এ শহীদ মিনার এখন ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি স্মারকস্তম্ভ। বিষয়টি জানাজানির পর ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। কলেজ ছাত্রদলের পক্ষ থেকে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণকাজ বন্ধ এবং শহীদ মিনার আগের অবস্থায় পুনঃস্থাপনের দাবিতে অধ্যক্ষের কাছে গতকাল মঙ্গলবার স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার একই দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করবেন কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছননগর এলাকায় ১৯৪৪ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। সরকারীকরণ করা হয় ১৯৮০ সালে। কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০২০ সালের ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসব হয়। এ উৎসবের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তখন ক্যাম্পাসে একটি স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। সরকারি কলেজে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণকাজ শুরু হয় মাসখানেক আগে।
এখন শহীদ মিনার ভাঙার প্রতিবাদে অনেকেই সরব হওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ এর দায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে। আর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, তারা কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্ধারণ করে দেওয়া স্থানে এটি নির্মাণ করছে। স্থান নির্ধারণে তাদের কোনো ভূমিকা নেই।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ১৯৭৩-৭৪ সালে সহসভাপতি (ভিপি) ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান। শহীদ মিনার ভাঙার খবর পেয়ে গতকাল বিকেলে ছুটে যান কলেজে; কথা বলেন অধ্যক্ষের সঙ্গে। তিনি জানান, ভাষাশহীদদের স্মরণে ১৯৬৬ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে এ শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। এটিই জেলায় ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী এটি ভেঙে ফেলে। দেশ স্বাধীনের পর ছাত্রনেতারা এটি আবার নির্মাণ করেন।
সাইফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই শহীদ মিনারেই আমরা সভা–সমাবেশ করতাম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর আবেগ, স্মৃতি জড়িয়ে আছে এটির সঙ্গে। কলেজে এত জায়গা থাকতে শহীদ মিনার ভেঙে তার ভেতরে কেন স্মারকস্তম্ভ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, এটিই বুঝতে পারছি না। এতে খুবই মর্মাহত হয়েছি।’
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান জানান, ‘সুনাম ফলক’ নামের এ স্মারকস্তম্ভের নকশা করেছেন ভাস্কর হামিদুজ্জামান। একইভাবে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ের ১২৫ বছর পূর্তির একটি স্মারক নির্মাণ করা হয়েছে। এখন শহরের সরকার সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ৭৫ বছর পূর্তির দুটি স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের কাজ চলছে। সরকারি কলেজের স্মারকটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ লাখ টাকা।
কামরুজ্জামান বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষই স্থানটি নির্ধারণ করেছে। কলেজে আরেকটি শহীদ মিনার নির্মাণ করায় পুরোনোটা ভেঙে সেখানে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত কলেজ কর্তৃপক্ষের। এখানে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো ভূমিকা নেই। তাঁদের পরামর্শ ছিল কলেজের প্রধান ফটকের পাশে ভেতরে উত্তর পাশে এটি নির্মাণের, কিন্তু এতে কলেজ কর্তৃপক্ষ রাজি হয়নি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়াও তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। এরপর কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এটি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর করছে। তারাই স্থান নির্ধারণ করেছে। এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশলীর মন্তব্য জানানোর পর তিনি আবার বলেন,‘আসলে আমরাই তাদের বলেছি, এখানে কাজ করা যাবে কি না। তারা রাজি হওয়ায় এখন কাজ হচ্ছে। এত দিন কেউ কিছু বলেনি। এখন অনেকেই কথা বলছে। আমি ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে নই। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলব।’