উপদেষ্টাদের প্রতি জনগণের অনাস্থা তৈরি হচ্ছে: মজিবুর রহমান
Published: 23rd, July 2025 GMT
মাইলস্টোন কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের পরদিন সেখানে বিক্ষোভের মুখে দুই উপদেষ্টার অবরুদ্ধ থাকা এবং সচিবালয়ে বিশৃঙ্খলা উপদেষ্টাদের প্রতি জনগণের অনাস্থা তৈরির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান (মঞ্জু)। এই দুই ঘটনার মাধ্যমে সরকারের দুর্বলতা প্রকাশ পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি এই ‘দুর্বল সরকার’ দিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচন আয়োজন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
বুধবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে মজিবুর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। মজিবুর রহমান বলেন, সরকার কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। এটি সরকারের একটি বড় ব্যর্থতা। সরকারের গ্রহণযোগ্যতা কমে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অংশীদার এবং গণ-অভ্যুত্থানের নায়কদেরও গ্রহণযোগ্যতাও কমেছে।
গণ-অভ্যুত্থানের অংশীদারদের অনৈক্যের পেছনে সুনির্দিষ্টভাবে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর বিভেদের কারণেই ফ্যাসিবাদ বারবার সুযোগ নিচ্ছে।
সংস্কার ও সঠিক সময়ে নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে সংশয়ের বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছেন বলে জানান মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘তাঁকে (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছি, আপনি যদি প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে না পারেন, আবার ভালো নির্বাচনও নিশ্চিত করা সম্ভব না মনে করেন, তাহলে পদত্যাগ করে চলে আসুন। সংস্কার ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আগ্রহী সব পক্ষ মিলে আপনার নেতৃত্বে আমরা একটা নির্বাচনী অ্যালায়েন্স করি।’
সরকার এনসিপির প্রতি ‘পক্ষপাতদুষ্ট’এ সময় মঙ্গলবার রাতে আলাদাভাবে চারটি দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক নিয়ে নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বলে জানান গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেন, চারটি দলকে কোন প্রক্রিয়ায় বড় বা প্রধান দল হিসেবে নির্বাচন করা হলো? এর মধ্যে একটি দল সদ্য গঠিত, যাদের নিবন্ধন নেই।
নুরুল হক বলেন, সরকারের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে, তারা এনসিপির প্রতি ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ ভূমিকা পালন করছে। সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনসমর্থন হারাবে। ফলে আগামী দিনে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে। আমি মনে করি—জুলাই সনদ দেশের জনগণের প্রয়োজন নেই। কিছু ব্যক্তি যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, যারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বসবাস করতে গেলে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়বেন; তাদের জন্য হয়তো প্রয়োজন আছে।’’
শনিবার (১ নভেম্বর) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে তিনি এই কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মামুন, সম্পাদক রিটন
একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াত নিষিদ্ধ চান আলাল
হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘এই ধরনের সনদের আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রয়োজন–একটা পার্লামেন্ট। যেখানে আগামী দিনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। যেই পার্লামেন্ট এই সনদকে বাস্তবায়িত করবে এবং আগামী গণতন্ত্রকে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করতে সক্ষম হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে প্রয়োজন একটি নির্বাচন। যেখানে জনগণ প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করতে পারবে। আমরা আশা করব, আগামীতে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হবে। এই নির্বাচনে যারা বিজয়ী হবেন, জনগণের প্রতিনিধি হবেন; তারাই জুলাই সনদকে সমর্থন করবেন।’’
‘‘আমার দল বিএনপি জুলাই সনদকে সমর্থন করে, আমরাও এটি সমর্থন করতে বাধ্য। কিন্তু, এটার মধ্যে এমন জিনিস ঢোকাবেন না, যেটি নিয়ে আগে ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়ে আলোচনা হয়নি।’’- যোগ করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘পিআর নিয়ে কথা হচ্ছে। দেশের জনগণকে জিজ্ঞেস করেন, কেউ পিআর চিনেও না। পিআর কেউ চায়ও না। আমরা শত বছর ধরে একজন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করে আসছি। তারা (পিআর দাবি করা দলগুলো) ব্যক্তির কাছ থেকে, ভোটারের কাছ থেকে ক্ষমতা তুলে নিয়ে একটা রাজনৈতিক দলের কাছে সমর্পণ করতে চায়। আমরা চাই, বর্তমান যে ব্যবস্থায় নির্বাচন হচ্ছে, সেই ব্যবস্থার মাধ্যমে যাতে নির্বাচন হয়।’’
হাফিজ উদ্দিন আরো বলেন, ‘‘আমাদের একটা প্রতিবেশী রাষ্ট্র আছে, যারা চায় না বাংলাদেশ স্বনির্ভর হোক। নিজের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অক্ষত থাকুক, এটা তারা চায় না। তারা আশ্রয় দিয়েছে মাফিয়া শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনা সেখানে বসে কীভাবে বাংলাদেশে নাশকতা করা যায়, সে বিষয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। কলকাতায় তারা অফিস খুলেছেন। আমি তাদেরকে একটা পরামর্শ দেব। শুধু কলকাতা নয়, ভারতের প্রত্যেকটা প্রদেশে আপনারা একটা করে অফিস খুলেন। ভারতের কাছ থেকে সনদ নেন। তারপরে ভারতের রাজনীতিতে আপনারা মিশে যান। বাংলাদেশে আপনাদের কোনো প্রয়োজন নেই।’’
ঢাকা/রায়হান/রাজীব