তিনি স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন
Published: 25th, July 2025 GMT
শারমিন আহমদ: এই যে জানতে চাননি, এটা খুব আশ্চর্যের ব্যাপার না! কুষ্টিয়ার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে প্রথম বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হলো। প্রশ্ন উঠেছিল এটা ভারতের মাটিতে হবে, না বাংলাদেশের মাটিতে হবে। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং জায়গাটার নাম তিনি করলেন মুজিবনগর। কারণ, এটা অনস্বীকার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তো মুক্তিযুদ্ধের সিম্বল ছিলেন। সব মিলিয়ে এমনই ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। তিনি নাম কখনোই চাননি। দেশ এখন মুক্তির পথে চলে গেছে, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা করছে, সেটাতে কোনোমতে যেন ভাঙন না ধরে। ওই সিম্বলটা তিনি সব সময় ধারণ করেছেন। তিনি নিজের প্রচার চাননি, একটা জাতির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন। সেই জায়গাটায় মুজিব কাকু কখনোই যাননি। জানতেও চাননি।
একদিন আব্বু বললেন, ‘লিলি, আজকে বলতেই হবে মুজিব ভাইকে এসব কথা।’ তিনি যাওয়ার পর যখন মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা আরম্ভ করেছেন, মুজিব কাকু নাকি হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়েছেন। চুরুটটা নিয়ে একদম চোখ বন্ধ। আম্মা ভেবেছিলেন, ওই ঘটনা বলতে আব্বুর অনেক সময় লেগে যাবে। চার-পাঁচ ঘণ্টা। আব্বু যখন দ্রুত চলে আসেন, তখন আম্মুকে বললেন, ‘যে জেগে ঘুমায়, তাকে তো আমি জাগাতে পারব না। তিনি তো জানতেই চাচ্ছেন না ঘটনা।’ তাহলে কি বোঝা যায় যে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে (যেটা অনেকেই বলছেন) তাঁর কোনো ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্স এসেছিল যে ‘আমার অবর্তমানেই দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে।’ এটা কিন্তু আমি ভারতীয় খুব উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে কথা শুনেছি। বাংলাদেশেও যাঁরা তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন, তাঁদের কাছেও শুনেছি।
■ বাহাত্তরের পর আওয়ামী লীগের পারিবারিকীকরণটা শুরু হয়ে যায়। যখনই দলটা পরিবারের হয়ে যায় অথবা দলীয় স্বার্থটা দেশের স্বার্থের ঊর্ধ্বে প্রাধান্য পায়, তখন কিন্তু গণতন্ত্র মৃত্যুর দিকে চলে যায়। ■ ভারতীয় ইন্টেলিজেন্সের সাহায্য নিয়ে যারা মুজিব বাহিনী করেছিল, তারা কীভাবে দেশ স্বাধীনের পর সবচেয়ে বড় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে যায়? এটা কিন্তু খুব সাংঘর্ষিক ব্যাপার। মতিউর রহমান:স্বাধীনতার পর ঢাকায় কর্মরত ভারতীয় কূটনীতিক জে এন দীক্ষিত কিন্তু এ কথাটা তাঁর বইতে লিখেছেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) যে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি, থাকতে পারেননি—এটার মধ্য দিয়ে তাঁর মধ্যে একটা দুর্বলতা কাজ করত মানসিকভাবে। তাই তিনি কখনো এ বিষয়টা জানতে চাননি, এ বিষয়গুলোকে তিনি সামনে নিয়ে আসেননি।
শারমিন আহমদ: যার ফলে দেখেন, এক লাখ এক হাজার মুক্তিযোদ্ধা। আপনারা যদি তাজউদ্দীন আহমদের বাহাত্তরের স্পিচটা দেখেন, পড়েন, সেখানে কিন্তু দেখবেন যে আরম্ভ হয়ে গেল মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা নিয়ে ‘ফ্রডুলেন্ট অ্যাকটিভিটি’। এক লাখ এক হাজার মুক্তিযোদ্ধা—এই দামাল ছেলেগুলো, যাদের মধ্যে বিপ্লবের চেতনা প্রবহমান, তাদের দেশের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। তারপর দেখেন, তিন লাখের মতো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট তখন চলে গেল। চলে গেল কাদের হাতে, দেখেন। যারা মুক্তিযুদ্ধের সরকারের বিরুদ্ধে, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, সেই যুবলীগ শেখ মনি, মুজিব বাহিনীর হাতে।
আমার প্রশ্ন হলো, এটা কিন্তু একটু ভেবে দেখার বিষয়, তাঁরা বারবার দাবি করছেন, সরকার গঠন শেখ সাহেবের প্ল্যানমতেই হয়েছে। তা-ই যদি হবে, তার মানে মুক্তিযুদ্ধের সরকার হয়েছে। তো যুদ্ধের প্রতিমুহূর্তের পরিস্থিতিতে কী হবে, কেউ তো বলতে পারে না। তারা ওগুলোরও ক্রেডিট নিয়েছে। তা-ই যদি হবে, তাহলে এটা প্রশ্ন আসে, মোশতাক চক্র, যারা সিআইয়ের সঙ্গে যোগসাজশ করছে, ষড়যন্ত্র করছিল, যাকে তাজউদ্দীন আহমদ সরিয়ে দিলেন তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে, ভারতীয় ইন্টেলিজেন্সের সাহায্য নিয়ে যারা মুজিব বাহিনী করেছিল, তারা কীভাবে দেশ স্বাধীনের পর সবচেয়ে বড় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে যায়? এটা কিন্তু খুব সাংঘর্ষিক ব্যাপার। তিনি যদি সব বলেই যাবেন, তার মানে তাজউদ্দীন আহমদরা তো বঙ্গবন্ধুর কথা অনুসারেই দেশ স্বাধীন করেছেন।
মতিউর রহমান:এটা নিয়ে তো অনেক আলোচনা আপনারাও লিখেছেন, আরও অনেক গবেষক লিখছেন, লিখতে হবে। হবে আলোচনা। এখানে একটা-দুইটা কথা বলে আমরা শেষ করি। তাজউদ্দীন আহমদ কিন্তু শুরুতেই বলেছিলেন যে এই মুক্তিযুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে না। অথচ এই নিয়ে কিন্তু বহু আলোচনা, বহু চিন্তা। কেউ এতটা ভাবেনি যে ৯ মাসের মধ্যেই এটা শেষ হয়ে যাবে। তার যে এ রকম একটা ভবিষ্যদ্বাণী, যেটা সত্যি সত্যি প্রমাণিত হলো। আরেকটা কথা, ১০ এপ্রিলের বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, এই যুদ্ধ বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের যুদ্ধ। এই যুদ্ধ ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, সাধারণ মানুষের মুক্তিযুদ্ধ। আমি তো দেখি, এই যে চিন্তাচেতনার ভাবনাটা—দ্রুত যুদ্ধ শেষ হবে এবং এই যুদ্ধটা বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের যুদ্ধ।
শারমিন আহমদ: এটা অসাধারণ। বিশেষত তাঁর ১০ এপ্রিল ও ১৭ এপ্রিলের এই দুটি বক্তৃতা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া এবং এটা নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার।
মতিউর রহমান:আমরা শেষ করি একটা কথা দিয়ে, অন্য রকমভাবে, ১৯৫৯ সালের এপ্রিল মাসে তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে বেগম জোহরার বিয়ে হয়েছিল। বিয়েতে তাজউদ্দীন সাহেব বেলি ফুলের সব রকমের গয়না নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই ১৯৫৯ সালে তাজউদ্দীন আহমদের মতো একজন সম্ভ্রান্ত পরিবারের, মোটামুটি বিত্তশালী পরিবারের শিক্ষিত সন্তান, তখন তিনি আওয়ামী লীগের একজন প্রধান নেতা, তাঁর বিয়েতে বেলি ফুল দিয়ে বিয়ে করার বিষয়টাতে আমি খুব চমৎকৃত হয়েছি।
শারমিন আহমদ: আসলে আম্মাকে যখন আব্বু জিজ্ঞেস করেছিলেন যে বিয়ের সময় কী দরকার, কী ধরনের গয়নাগাটি লাগবে, তখন আম্মা বলেছিলেন, ‘আমি সোনার গয়না পছন্দ করি না, আমার জন্য বেলি ফুলের গয়না আনবেন।’ আম্মার বাবা তখন ঢাকা কলেজের আরবির অধ্যাপক। মানে আম্মারা খুব প্রগ্রেসিভ সম্ভ্রান্ত পরিবারের। মজার ব্যাপার, আব্বু নিয়ে এলেন একরাশ বেলি ফুলের গয়না।
আম্মার সঙ্গে আব্বুর বিয়ে হয় ’৫৯ সালে। তারপর আমার জন্ম হলো ১৯৬০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি। আম্মা বলেছিলেন, ‘তোমার আব্বু নিজে গিয়ে তোমার জন্য একটা সাদা বেতের দোলনা নিয়ে এসেছিলেন, তিনি নিজে মিষ্টি বিতরণ করলেন।’ আমার তৃতীয় বোন হলো, তখন সবাই বলছিল যে এবার ছেলে হবে। আমাদের তো সবারই ঘরে জন্ম। যখন আমার ছোট বোন মিমি হলো, তখন যে দাই ছিল, একটু মুখ ঝামটা দিয়ে বলছে যে এবারও তো মেয়ে হলো!
মিমি হওয়ার পর আব্বু অনেক মিষ্টি নিয়ে এসেছিলেন। মেয়ে-ছেলের তিনি পার্থক্য দেখতেন না। তারপর যখন সোহেল হলো, তখন সবাই বলল, এই তিন মেয়ের পরে এখন ছেলে হয়েছে। এবার তো আমাদের মিষ্টি খাওয়াতে হবে। তখন আব্বু বললেন, ‘কেন? তিন মেয়ের সময় তো আমি মিষ্টি খাওয়ালাম। আপনারা যখন আমার চেয়েও বেশি খুশি, আপনারা আনেন।’ মনে আছে, সোহেল হলে মুজিব কাকু আওয়ামী লীগ অফিসে সবাইকে মিষ্টি খাওয়ালেন।
এই বেলি ফুলের প্রসঙ্গ দিয়ে আমি একটা কথা যোগ করব, যাঁরা প্রকৃতি, ফুল সত্যিকারের ভালোবাসেন এবং তাঁদের জীবনের একটা বড় অংশ এগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত, মৃত্যুভয়টাও তাঁরা কিন্তু অতিক্রম করে ফেলেন। আব্বুকে যখন মারা হবে, ওই ১ নভেম্বরে আম্মাকে বললেন, ‘লিলি, আজকে আমার ডায়েরির শেষ পাতা, আমি শেষ পাতাটা আজকে লিখে শেষ করব। আর হ্যাঁ, আমাদের বাঁচিয়ে রাখা হবে না। কারণ, দুই দিন আগে দেখেছি, মিলিটারির লোকজন সব জায়গা দেখে গেছে।’
তিনি তখন এটাও বলছিলেন যে জেলখানাটাকে রেডক্রসের অধীনে আনলে ভালো হয়। এরপর ২ থেকে ৩ তারিখ দিবাগত রাতে তাঁদের হত্যা করা হয়। আব্বু শতাধিক ফুলের গাছ লাগিয়েছিলেন—গোবর–মাটি আনিয়েছিলেন বাইরে থেকে এবং মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও তিনি প্রকৃতির কাছে চলে গিয়েছিলেন। জবা ফুলেরও গাছ লাগিয়েছিলেন। জেলখানায় যাঁরা পাঁচ-ছয় বছর ছিলেন আমার বাবার সঙ্গে রাজবন্দী, তাঁরা বললেন, ‘তাজউদ্দীন ভাই ছিল না। রক্তজবা গাছগুলো ছিল।’ ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, টু প্লান্ট আ গার্ডেন টু বিলিভ ইন টুমরো। যে বাগান লাগায়, সে বিশ্বাস করে যে একটা ভালো ভবিষ্যৎ আসবে। তিনি আশার আলোটা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, প্রতিটা বীজ প্রতিটা চারাগাছের সঙ্গে।
তাজউদ্দীন নামে একজন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন: মহিউদ্দিন আহমদ। প্রথমা প্রকাশন থেকে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত জউদ দ ন আহমদ স ব ধ নত র পর ব র র বল ছ ল ন র রহম ন কর ছ ন আপন র বলল ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে: সালাহউদ্দিন
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে কিছু সময়ের জন্য ওয়াকআউট করার পর আবারও আলোচনায় যোগ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।
আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার ২০তম দিনে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে যেন আর কখনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ জন্ম নিতে না পারে, সে লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগে বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকেই প্রস্তাব ছিল, কেউ যেন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে না পারেন, সেটি গৃহীত হয়েছে। আমরা আরও প্রস্তাব দিয়েছি, নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি স্বাধীন সার্চ কমিটি গঠন করা হোক, যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি থাকবে, সেটিও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরাই প্রস্তাব করেছি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে পরবর্তী সময়ে সংসদ কোনো সংশোধনী আনলে, তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আগে গণভোটে যেতে হবে। এটি গৃহীত হওয়া মানে, দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।’
তবে এসব অগ্রগতির মধ্যেও নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি যেমন সংসদের কাছে, তেমনি জনগণের কাছেও রয়েছে। কিন্তু যদি কর্তৃত্ব না থাকে, কেবল দায়িত্ব আর জবাবদিহি থাকে, তাহলে তা কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়।’
সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগে নির্বাহী বিভাগের হাত–পা বাঁধা হলে তা ভবিষ্যতের জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাহী বিভাগকে শক্তিশালী হতে হবে, দুর্বল নয়।’
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা গঠনমূলক লক্ষ্য নিয়ে সংলাপে অংশ নিচ্ছে। তবে যেখানে মৌলিক দ্বিমত রয়েছে, সেখানে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা বা মতপার্থক্য প্রকাশ করাও গণতন্ত্রের ভাষা।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, এমন দাবি কেউ করেননি। দ্বিমত থাকবে, ভিন্নমত থাকবে, আর সেগুলোর মধ্য দিয়েই তো গণতন্ত্রের সংগ্রাম এগিয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি না যে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কাউকে ঐকমত্যে বাধ্য করা উচিত। ঐকমত্যের অর্থই হচ্ছে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথচলা। বিএনপি অংশ না নিলে কীভাবে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সেটি নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।’
বক্তব্য শেষে সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, সংলাপের পরবর্তী পর্যায়ে বিএনপি অংশ নেবে এবং ইতিবাচক আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
আরও পড়ুনঐকমত্য কমিশনের বৈঠক: ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠায় হুড়োহুড়ি করে বের হলেন সবাই৫৪ মিনিট আগেবিএনপির ওয়াকআউটকমিশনের প্রস্তাবিত সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান আলোচনায় অংশ নেয়নি বিএনপি। বেলা সাড়ে ১১টার পর বিষয়টি আলোচনার জন্য উপস্থাপন করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, তাঁরা আলোচনায় অংশ নেবেন না।
পরে আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির পক্ষে বলা হয়েছে, তারা আলোচনায় থাকবে না। একটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ না নিলে আলোচনা করা যাবে না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারি না।
আজ আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।
আরও পড়ুনজাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বিএনপির ওয়াক আউট, পরে যোগদান২ ঘণ্টা আগে