জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড় মানিক এলাকায় ছোট যমুনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ এখনো শেষ হয়নি। গত ৮ জুলাই এ সেতুর নির্মাণকাজের নির্ধারিত মেয়াদ (দেড় বছর) শেষ হয়েছে। যথাসময়ে সেতু নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় চলাচলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা। 

নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বিকল্প দুই লেনের কাঠের সেতু নিয়েও দুশ্চিন্তা বাড়ছে। বর্ষায় নদীতে পানির চাপ বেড়ে গেলে নড়বড়ে কাঠের সেতু ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে উপজেলা প্রকৌশলী সেতুর মাঝখানের পিলারে গার্ডার নির্মাণ আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছেন। এ কারণে ধীর গতিতে নির্মাণকাজ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক।  

বড় মানিক এলাকার অটোরিকশাচালক আব্দুল কুদ্দুস বলেছেন, যতদিন আগে কাজ শুরু হয়েছে, এত দিনে এরকম তিনটা ব্রিজ বানানো যেত। বিকল্প সেতুর কাঠ-বাঁশ পানিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে। যদি নদীতে পানির চাপ আসে তাহলে কাঁঠের সেতু থাকবে না। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পাঁচবিবি কার্যালয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেজ প্রকল্পের আওতায় পাঁচবিবি উপজেলার বড় মানিক এলাকায় ছোট যমুনা নদীর ওপর ৯০ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ গার্ডার সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী, নির্মাণকাজের মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের ৮ জুলাই। এ কাজের চুক্তিমূল্য ৮ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৭৭২ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড ও এমডি সোহেল জেভি। তবে, সেতুর নির্মাণকাজ করছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা প্রভাষক মাসুদ রেজা। ৫ আগস্টের পর প্রভাষক মাসুদ রেজা আসছেন না। তার লোকজন সেতুর নির্মাণকাজ দেখভাল করছেন।  

নির্মাণাধীন বড় মানিক সেতুতে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর পশ্চিম দিকে পিলারের ওপর চারটি গার্ডার নির্মাণ করা হয়েছে। পূর্ব দিকের পিলারে গার্ডার নির্মাণ করা হয়নি। বিকল্প দুই লেনের কাঠের সেতুর অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। ছোট ছোট যানবাহনগুলো কাঠের সেতুর উভয় দিকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে খালি পারাপার করা হচ্ছিল। যাত্রীরা পায়ে হেঁটে সড়কে গিয়ে উঠছেন। এতে শিশু ও বয়স্ক লোকদের কষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সুমেলা পাহান বলেন, “এত দিনেও বিরিজটা হওচে না। এটি অ্যাসে হাঁটে কাঠের বিরিজ পার হওয়া লাগোচে। এত দিনে আরো দুটা বিরিজ করা হলো হিনি।”

শহিদুল ইসলাম বলেন, “এই সেতুর ঠিকাদার জয়পুরহাটের প্রভাষক মাসুদ রানা। তিনি জয়পুরহাটের আওয়ামী লীগ নেতা। শুরুতে কয়েক মাস এখানে মাসুদ রানা নিজে এসে নির্মাণকাজের তদারকি করেছিলেন। ৫ আগস্টের পর মাসুদ রানাকে আর এখানে দেখিনি। এখন কাজের গতিও কম।”

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক সুমন খাঁন বলেছেন, সেতুর কাজ চলছে। বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ে নির্মাণকাজ শেষ করা যায়নি। মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানো হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী মাঝখানের গার্ডার নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন। নির্ধারিত সময়ে সেতুর ৬০ ভাগ কাজ হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যেই সেতুর কাজ শেষ হবে।

পাঁচবিবি উপজেলা প্রকৌশলী মোবারক হোসেন বলেছেন, ছোট যমুনা নদীর ওপর বড় মানিক সেতুর ১২টি গার্ডারের মধ্যে চারটি গার্ডার হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে নদীর মাঝখানের চারটা গার্ডার আপাত না করতে বলা হয়েছে। কাজের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পের মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।

ঢাকা/বাকী/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বড় ম ন ক বল ছ ন র ওপর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরো শক্তিশালী করে পুনর্নির্মাণ করবে

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, তেহরান তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে ‘আরো শক্তিশালী করে’ পুনর্নির্মাণ করবে। রবিবার সরকারি সংবাদমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তার দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের সন্ধান করছে না।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, জুন মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে স্থাপনাগুলোতে বোমা হামলা চালিয়েছিল সেগুলো পুনরায় চালু করার চেষ্টা করলে তেহরান ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে নতুন করে হামলার নির্দেশ দেবেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “ভবন ও কারখানা ধ্বংস আমাদের জন্য কোনো সমস্যা তৈরি করবে না, আমরা আরো শক্তির সাথে পুনর্নির্মাণ করব।”

জুনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছিল। ওই সময় ওয়াশিংটন বলেছিল, স্থাপনাগুলো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির লক্ষ্যেএকটি কর্মসূচির অংশ ছিল। তবে তেহরান জানিয়েছিল, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে বেসামরিক উদ্দেশ্যে।

ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমের প্রসঙ্গে পেজেশকিয়ান বলেছেন, “এগুলো জনগণের সমস্যা সমাধানের জন্য, রোগের জন্য, জনগণের স্বাস্থ্যের জন্য।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ