নোয়াখালীতে এখনো পানিবন্দী দুই লাখ মানুষ
Published: 12th, July 2025 GMT
বৃষ্টি না থাকায় নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো অনেক সড়ক ও বাসাবাড়ি পানিতে ডুবে আছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এখনো জেলা সদর, সুবর্ণচর, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, হাতিয়া, সেনবাগসহ নোয়াখালীর প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী।
আজ শনিবার সকালে সরেজমিনে জেলা শহর মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুর, কলেজপাড়া, পূর্ব মাইজদী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা জজ আদালত সড়ক, সেন্ট্রাল রোড, দরগাবাড়ি ও মাইজদী পৌর বাজার এলাকা ঘুরে দেখা হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, এসব এলাকায় সড়কে পানি জমে আছে। তবে পানি কিছুটা কমেছে।
পূর্ব মাইজদী জমাদারবাড়ির বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বাড়ির ভেতরে কিছু ঘরেও পানি ঢুকে পড়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি না হওয়ায় পানি অনেকটা কমেছে। তবে এখনো প্রায় এক ফুট পানি বাড়ির উঠানে ও চলাচলের পথে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই তাঁদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে জানান রফিকুল।
মাইজদীর হাকিম কোয়ার্টার সড়ক দিয়ে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন অটোরিকশাচালক (মিশুক) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ইজদ
এছাড়াও পড়ুন:
খানাখন্দে ভরা সড়কে মৃত্যুঝুঁকি
সড়কে খানাখন্দ। কোথাও পিচঢালাই আছে, কোথাও নেই। বৃষ্টিতে পানি-কাদায় একাকার। দিন দিন এসব খানাখন্দ বড় আকার ধারণ করছে। তাতে প্রতিদিন উল্টে পড়ছে যানবাহন। আহত হচ্ছেন যাত্রীরা। কাদাপানি ছিটকে কাপড়চোপড় নষ্ট হচ্ছে। এমন দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে মানুষ।
এ চিত্র ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার অংশের। স্থানীয় ব্যক্তিরা সড়কটি সংস্কারে বারবার দাবি জানালেও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কয়েকদিনের টানা বর্ষণে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে সড়কটি।
সরেজমিন দেখা যায়, ফরিদপুর সদরের বাখুন্ডা, নগরকান্দা উপজেলার মহিলা রোড, তালমা ও পুখুরিয়া এলাকার সড়কের বেশি নাজুক অবস্থা। গাড়ি চালানোর কোনো উপায় নেই। রাস্তা গর্তে ভরা। গর্তে চাকা পড়ে প্রায়ই বিকল হয় যানবাহন। এর পরও বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে বাস, ট্রাক, লরি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত যানবাহনসহ থ্রি-হুইলার।
শনিবার ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে ফরিদপুরে এসেছিলেন অ্যাম্বুলেন্স চালক কাশেম বেপারী। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর আসতে দেড় ঘণ্টা সময় লেগে গেছে। রাস্তা এমনই বেহাল যে, ঝাঁকুনিতে রোগী আরও অসুস্থ পড়ে। বড় বড় গর্ত বৃষ্টির কারণে চোখে পড়ে না। রাতের বেলা গাড়ি চালাতে ভয় লাগে।
একই দিন নগরকান্দার মহিলা রোড এলাকায় দেখা যায় মালবাহী একটি লরি বিকল হয়ে পড়ে আছে। লরিটির সামনের দুটি চাকা পুরোপুরি নষ্ট। গাড়িটি বগুড়া থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল।
চালক আকবর হোসনে বলেন, রাস্তার জঘন্য অবস্থা। গাড়ি চালানোর কোনো কায়দা নেই। গর্তে পড়ে ঝাঁকুনি খেয়ে গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। মিস্ত্রি আসবে, তারপর গাড়ি ঠিক করা হবে। এতে ৩০ হাজার টাকা লেগে যাবে। দুপুরে আরও একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উল্টে কয়েকজন যাত্রী আহত হন।
স্থানীয় বাসিন্দা ফয়েজুল বারী জানান, এই এলাকায় প্রতিদিন অটোরিকশা উল্টে যাচ্ছে। তিনি দ্রুত রাস্তা সংস্কারসহ চার লেনের দাবি জানান।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়কটির সংস্কারের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি টাকা। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সংস্কারকাজ শুরু করা হয়নি। বাখুন্ডা এলাকায় ইট-বালু দিয়ে গর্ত ভরাট করতে দেখা যায় সড়ক বিভাগকে।
সড়কটি সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুত চার লেনে করার দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে জেলার সর্বস্তরের মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সপক্ষে প্রচারণা। ‘ফরিদপুর-ভাঙ্গা মহাসড়ক চার লেন দ্রুত বাস্তবায়ন’ নামে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির পক্ষ থেকে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ১৩ জুলাই রোববার বেলা ১১টায় ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার বলেন, দুটি প্যাকেজের আওতায় সড়ক মেরামতের জন্য ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে জরুরি ভিত্তিতে সড়কের খানাখন্দ ভরাটের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ৩২ কিলোমিটারের এই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।