রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় গোলাম আকবর পক্ষের মামলা, আসামি ১২৯
Published: 9th, August 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী (পদ স্থগিত) ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক (কমিটি বিলুপ্ত) গোলাম আকবর পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে রাউজান থানায় গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী সাবেক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাছিম উদ্দিন নামের একজন বাদী হয়ে ১২৯ জনকে আসামি করে এই মামলা করেন।
মামলার আসামিরা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতা-কর্মী বলে জানিয়েছে পুলিশ। যাঁদের মধ্যে আছেন জেলা যুবদলের সহসভাপতি সাবের সুলতান, রেওয়াজ উদ্দিন, মুহাম্মদ সোহেল।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার রাউজান পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে সর্তারঘাট এলাকায় গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ও গোলাম আকবর খন্দকার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে গোলাম আকবর খোন্দকারসহ দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।
এ সংঘর্ষের জেরে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ও গিয়াস কাদের চৌধুরী পদ স্থগিত করে নোটিশ জারি করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। পাশাপাশি এ ঘটনায় সাত দিনের মধ্যে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজীজুল বারীকে লিখিত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন তিনি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার, তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের আজীজুল বারী রাউজান এসে তদন্ত করেন। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন উভয় দলের নেতা এবং সাধারণ মানুষ।
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘যেহেতু কেন্দ্র তদন্ত করছে, আমরা তাই মামলা করিনি। অথচ গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী যে মামলা দিয়েছেন, সেখানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এটা সত্যিই দুঃখজনক। আমাদের অনেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছিলেন। আমরা তদন্তের সম্মানে মামলা করছি না। দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা আমাদের করণীয় নির্ধারণ করব।’
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীরা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে হামলা করে আমাদের বিরুদ্ধে এখন মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের শাসন আমলেও দীর্ঘ ১৭ বছর হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। এখন আবার কথিত বিএনপি নেতার অনুসারীর মামলার শিকার হচ্ছি।’
এ বিষয়ে গোলাম আকবর খন্দকার আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ওপর হামলা হয়েছে, তাই মামলা হয়েছে। নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে থাকায় মামলা করতে দেরি হয়েছে। আমার অনেক কর্মী এবং আমি নিজে সেদিন মার খেয়েছি। আমরা এর ন্যায় এবং সুষ্ঠু বিচার চাই।’
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বিকেলে নাছিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি মামলা করেন। বাদী বিএনপি নেতা। মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন জেলা যুবদলের সহসভাপতি সাবের সুলতান, রেওয়াজ উদ্দিন, মুহাম্মদ সোহেলসহ ১২৯ জন।
এদিকে রাউজানে গত বছরের ৫ আগস্টের পর মোট ১৫টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ১০টি। এ সময় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয় অন্তত শতাধিকবার। তিন শতাধিক মানুষ এসব ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন। মামলা হয় ৩৫ থেকে ৪০টি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ র ঘটন গ ল ম আকবর খ র র অন স র ব এনপ র আম দ র ঘটন য় তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
নেত্রকোনায় সাংবাদিক লুৎফুজ্জামান আলিফের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় জেলা প্রেসক্লাবের সামনে নেত্রকোনা সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
জেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি জাহিদ হাসানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, জেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক নাজমুস শাহাদৎ, জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের জেলা কমিটির সভাপতি পারভেজ, হামলার শিকার লুৎফুজ্জামান আলিফ প্রমুখ।
লুৎফুজ্জামান আলিফ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল রূপসী বাংলার নেত্রকোনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ নভেম্বর দুপুরে লুৎফুজ্জামান আলিফ ও তাঁর সহকর্মী শাহজাহান শেখ জেলার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদী পার হয়ে একটি ভাড়া মোটরসাইকেলে নদীর তেরিবাজার ঘাটে নামেন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন ব্যক্তি সেখানে যান। তাঁদের মধ্যে দুজন চাপাতি হাতে লুৎফুজ্জামানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। সঙ্গে থাকা শাহজাহান শেখ বাধা দিতে গেলে তাঁকেও কোপানোর চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন লুৎফুজ্জামানকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি পরে ঢাকায় চিকিৎসা শেষে গতকাল বাড়ি ফেরেন।
এ ঘটনায় লুৎফুজ্জামান বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় মামলা করেছেন। এতে দুর্গাপুর পৌরশহরের পশ্চিম মোক্তারপাড়া এলাকার ইমরান ইসলাম ওরফে ইমন (২৩) ও পুলিশ মোড় এলাকার মো. সৌরভের (২৩) নামোল্লেখ করে এবং আরও চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।