সিলেট বিভাগের ১৭ আসনে প্রার্থীদের নাম জানাল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম
Published: 10th, August 2025 GMT
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সিলেট বিভাগের চার জেলায় ১৯টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৭টিতে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।
গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রার্থীদের নামের তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। তালিকা ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। এ সময় দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুর রব ইউসুফী, সহসভাপতি জুনায়েদ আল হাবিব, নাজমুল হাসান কাসেমী, বদরুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দলটির সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের ৬টি আসনের মধ্যে সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসন ছাড়া বাকি ৫টিতে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনে হোসাইন আহমদ, সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ) আসনে নজরুল ইসলাম, সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর) আসনে মুহাম্মদ আলী, সিলেট-৫ (কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ) আসনে উবায়দুল্লাহ ফারুক এবং সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ) আসনে ফখরুল ইসলাম। সিলেট-৫ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত উবায়দুল্লাহ ফারুক দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি।
সুনামগঞ্জ জেলার পাঁচটি আসনেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ ও মধ্যনগর) আসনে তাফাজ্জুল হক আজিজ, সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই ও শাল্লা) আসনে শোয়াইব আহমদ, সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ) আসনে হাম্মাদ গাজীনগরী, সুনামগঞ্জ-৪ (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে মুখলিসুর রহমান চৌধুরী এবং সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক ও দোয়ারাবাজার) আসনে নুরুল হক।
মৌলভীবাজার জেলার ৪টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। এ জেলায় মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। অন্য তিন আসনের প্রার্থীরা হলেন মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনে বদরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার-৩ (সদর ও রাজনগর) আসনে জামিল আহমদ আনসারী এবং মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ) আসনে শেখ নূরে আলম হামিদী।
হবিগঞ্জ জেলার চারটি আসনে প্রার্থী হলেন হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ ও বাহুবল) আসনে সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী, হবিগঞ্জ-২ (আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং) আসনে এখলাছুর রহমান, হবিগঞ্জ-৩ (সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ) আসনে মাহবুবুর রহমান চৌধুরী এবং হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট ও মাধবপুর) আসনে নুরুজ্জামান আসাদী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ল ইসল ম স ন মগঞ জ র রহম ন আসন র
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াত নতুন নতুন মত নিয়ে হাজির হয়: মেজর (অব.) হাফিজ
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী জামায়াতে ইসলামী নতুন নতুন মত নিয়ে হাজির হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন হাফিজ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘এই যে দল জামায়াতে ইসলামী, তারা সেদিন বলেছে যে জাতীয় ঘোষণাপত্রে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাকে অত্যন্ত গৌরবের সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়নি। তারা ভেবেছে যে বাংলাদেশের মানুষের স্মরণশক্তি খুবই দুর্বল। তারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। এখন তারা নতুন নতুন মত নিয়ে হাজির হয়।’
জুলাই ২৪ গণ–অভ্যুত্থানের ‘বর্ষপূর্তিতে দ্রুত বিচার সম্পন্ন, মৌলিক সংস্কার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে অগ্নিসেনা সোশাল ফাউন্ডেশন ও আমাদের নতুন বাংলাদেশ।
নির্বাচন বিলম্বিত হয় কিংবা নির্বাচন যাতে না হয়, এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা কাম্য নয় উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তবে বিচারের ভার জনগণের কাছে। গণতন্ত্রে প্রত্যেকে নিজেদের বক্তব্য দেওয়ার অধিকার আছে।’
আগামী সংসদ নির্বাচনে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাই সংস্কার নিয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন হাফিজ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এত দিন ভোট দিতে পারেনি। কিন্তু কিছু দল ধরে নিয়েছে, নির্বাচন হলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে, তারা নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে পিআর সিস্টেমের কথা বলে। আমি মনে করি, আগামী নির্বাচন বিদ্যমান পদ্ধতিতে আয়োজন করা উচিত, যাতে মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে।’
ইভিএম প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, দেশের মানুষ এখনো ইভিএমের সঙ্গেও পরিচিত নয়। জনগণ এখনো সচেতন হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোও এখনো এতটা পরিপক্বতার পরিচয় দিতে পরেনি যে একটি প্রতীকে ভোট দিলে তাদের অবস্থার পরিবর্তন হবে। বরং মানুষ এখনো স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে সব সুখ–দুঃখ নিয়ে হাজির হন।
বর্তমান সরকারের কাছে পুলিশ বাহিনীর সংস্কার অন্যতম আকাঙ্ক্ষা ছিল উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, বিগত সময়ে দেশে পুলিশ বাহিনী একটি পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশ একটি পুলিশ স্টেটে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু একটি বছর পার হলেও পুলিশ বাহিনীর কোনো সংস্কার করা হয়নি। এই বাহিনী সঠিকভাবে একটি নির্বাচন করতে পারবে কি না, তা নিয়ে জনগণের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, র্যাবকে নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে না, তাহলে এই বাহিনীকে রাখা হলো কেন?
সভায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান ব্যবস্থা নিজেই একটি স্বৈরাচারী ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার মধ্যে যে–ই ক্ষমতায় যায়, তাকেই স্বৈরাচারী বানিয়ে দেয়।
চব্বিশের অভ্যুত্থান বড় ঘটনা উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী বাংলাদেশে যারা নিজেদের বদলাতে পারবে না, আগামী দিনে তারা আর প্রাসঙ্গিক থাকবে না। নতুন ব্যবস্থার জন্ম এখন একটা অনিবার্য ঘটনা। এটা ঘটতেই হবে। কাজেই নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে যারা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারবে, তারাই আগামী দিনে প্রাসঙ্গিক থাকবে।
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়েও এই পুলিশ ও প্রশাসনের তেমন পরিবর্তন হয়নি। বরং বিভিন্ন দলকে ব্যবহার করে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রশাসনে পুনর্বাসিত হচ্ছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারকাজ শেষ হতে সর্বোচ্চ ছয় মাস সময় লাগার কথা। কিন্তু আমরা দেখেছি, বিভিন্ন ধরনের ইস্যু সামনে টেনে নিয়ে আসা হলো। সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে নাকি জাতীয় নির্বাচন আগে। বিচার আগে নাকি নির্বাচন আগে। পর্যায়ক্রমে একেক সময় একেক ইস্যু সামনে আনছে।’
অগ্নিসেনা সোশাল ফাউন্ডেশনের সভাপতি জহিরুল হক সভায় সভাপতিত্ব করেন। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহসভাপতি গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক ফোরামে চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ প্রমুখ।