ভোট দিতে সিদ্ধান্তহীনদের সংখ্যা বেড়ে ৪৮.৫০ শতাংশ
Published: 11th, August 2025 GMT
আগামী জাতীয় নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, এই প্রশ্নে সিদ্ধান্তহীন মানুষের হার আরও বেড়েছে। গত বছরের অক্টোবরে ৩৮ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন তাঁরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। আট মাস পরে এখন ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ মানুষ বলছেন, কাকে ভোট দেবেন সে বিষয়ে তাঁরা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।
কাকে ভোট দেবেন, তা বলতে চান না ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ মানুষ। আর ভোট দেবেন না বলেছেন ১ দশমিক ৭০ শতাংশ।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) ‘পালস সার্ভে ৩’-এর ফলাফলে এমন চিত্র উঠে এসেছে। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়ন, সংস্কার, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা নিয়ে’ জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। বিআইজিডি ও সংস্কারবিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ভয়েস ফর রিফর্ম যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, এই প্রশ্নে ১২ শতাংশ বিএনপি, ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ জামায়াতে ইসলামী ও ২ দশমিক ৮০ শতাংশ মানুষ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কথা বলেছেন। আট মাস আগে গত অক্টোবর মাসে একই প্রশ্ন করা হলে ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ মানুষ বিএনপি, ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ জামায়াত ও ২ শতাংশ মানুষ এনসিপিকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। অর্থাৎ আট মাস পরে বিএনপি ও জামায়াতের ভোট কিছুটা কমেছে আর এনসিপির ভোট সামান্য বেড়েছে।
জরিপে গত অক্টোবরে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগকে (এখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ভোট দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেটি এখন কমে হয়েছে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর বাইরে জাতীয় পার্টির ভোট শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ, অন্যান্য ইসলামি দলের ভোট ২ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে নেমেছে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ।
অবশ্য আপনার নির্বাচনী এলাকায় কোন দলের প্রার্থী জিতবে বলে মনে হয়—এমন প্রশ্নে ৩৮ শতাংশ মানুষ বিএনপির কথা বলেছেন। এই প্রশ্নের উত্তরে ১৩ শতাংশ মানুষ জামায়াত ও ১ শতাংশ এনসিপির কথা বলেছেন। আর আওয়ামী লীগের কথা বলেছেন ৭ শতাংশ মানুষ।
অনুষ্ঠানে জরিপের ফল তুলে ধরেন বিআইজিডির ফেলো অব প্র্যাকটিস সৈয়দা সেলিনা আজিজ। তিনি জানান, জরিপের জন্য গ্রাম ও শহরের নানা শ্রেণি-পেশার ৫ হাজার ৪৮৯ জন মানুষের মতামত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের ৫৩ শতাংশ পুরুষ, ৪৭ শতাংশ নারী; ৭৩ শতাংশ গ্রামের ও ২৭ শতাংশ শহুরে। জরিপে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, চলমান সমস্যা, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে টেলিফোনে প্রশ্ন করে মতামত জানতে চাওয়া হয়। গত ১ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত সময়ে এই জরিপ চালানো হয়। এর আগে গত অক্টোবরের তথ্যের ভিত্তিতে ডিসেম্বরে বিআইজিডির দ্বিতীয় পালস সার্ভের ফল প্রকাশ করা হয়েছিল।
রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ কমেছে
বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আপনি কি মনে করেন বাংলাদেশ সঠিক পথে এগোচ্ছে, এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল বিআইজিডির জরিপে। এর উত্তরে ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন দেশ রাজনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে আর ৪৫ শতাংশ মানুষের মত হলো দেশ অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে। গত বছরের অক্টোবরে ৫৬ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন দেশ রাজনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে আর ৪৩ শতাংশ বলেছিলেন অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে। অর্থাৎ দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের মধ্যে আশাবাদ সামান্য বেড়েছে, কিন্তু রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তা কমেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এ পর্যন্ত যেসব প্রচেষ্টা, সেগুলোকে আপনি ১০০-তে কত নম্বর দেবেন—এই প্রশ্নে সরকারকে ৬৩ শতাংশ নম্বর দিয়েছেন উত্তরদাতারা। গত অক্টোবরে এটি ছিল ৬৮ শতাংশ।
ভালোভাবে সংস্কার করে তারপর নির্বাচন চান ৫১ শতাংশ মানুষ। কিছু জরুরি সংস্কার করে নির্বাচন চান ১৭ শতাংশ। সংস্কার বাদ দিয়ে নির্বাচন দেওয়া ভালো বলে মনে করেন ১৪ শতাংশ মানুষ। আর সংস্কার সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই বলেছেন ১৩ শতাংশ মানুষ।
কোন সংস্কারগুলো প্রয়োজন বলে মনে করেন—এই প্রশ্নে একাধিক উত্তর দেওয়ার সুযোগ ছিল। এর উত্তরে ৩০ শতাংশ মানুষ আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নের কথা বলেছেন। আইন ও বিচারব্যবস্থার উন্নতির কথা বলেছেন ১৬ শতাংশ। এ ছাড়া ১১ শতাংশ মানুষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ১৬ শতাংশ অর্থনীতি বা ব্যবসা চাঙা করা, ১৩ শতাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো, ১০ শতাংশ বেকারত্ব কমানো, ১৭ শতাংশ দুর্নীতি দমনের কথা বলেছেন। এর বাইরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অসহনশীলতা কমানো এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের কথা বলেছেন ১৯ শতাংশ করে মানুষ।
জাতীয় নির্বাচন কখন চান, এমন একটি প্রশ্নও করা হয়েছিল জরিপে। এর জবাবে ৩২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তাঁরা আগামী ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চান। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন চান ১২ শতাংশ, জুনের মধ্যে ১১ শতাংশ আর ডিসেম্বর (২০২৬) অথবা পরে নির্বাচনের কথা বলেছেন ২৫ শতাংশ মানুষ।
জরিপে ৭০ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তাঁরা মনে করেন আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। সুষ্ঠু হবে না মনে করেন ১৫ শতাংশ আর এ বিষয়ে জানেন না বলেছেন ১৪ শতাংশ মানুষ।
জরিপের ফল প্রকাশের পর অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিআইজিডির জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো মির্জা এম হাসান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন বয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহ্বায়ক এ কে এম ফাহিম মাশরুর। আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আলোচকেরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ম ন ষ বল ছ ব আইজ ড র অন ষ ঠ ন বল ছ ল ন র জন ত ক বল ছ ন এনস প ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
মামলা পরিচালনায় সম্পৃক্তদের হুমকি দিয়েছেন শেখ হাসিনা
মামলা পরিচালনায় সম্পৃক্ত প্রসিকিউটর, তদন্ত কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও আদালতের কর্মচারীদের ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে করা মামলায় পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ বিষয়টি এসেছে। এ মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গত ২ জুলাই এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি গতকাল রোববার ট্রাইব্যুনালে কর্মরত সাংবাদিকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এ মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকেও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা ও বুলবুলের কথোপকথন একটি অডিও গত বছরের অক্টোবরে ভার্চ্যুয়াল জগতে ছড়িয়ে পড়ে। এই অডিও সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায় দুজনের কথোপকথন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি নয়।
গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান। এ মামলার আরেক আসামি বুলবুলও পলাতক।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে শেখ হাসিনা ও বুলবুলের কথোপকথন (ফাঁস হওয়া অডিও) তুলে ধরা হয়েছে। এর এক জায়গায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই সব তালিকা করো আর অফিসারদের বলো আমরা তালিকা পাঠাচ্ছি নেত্রীর কাছে। উনি চাইছেন, ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।’ শেখ হাসিনার এই কথার পর বুলবুল বলেন, ‘জি নেত্রী, জি আসসালামু আলাইকুম।’ এরপর শেখ হাসিনা বলেন, ‘চাকরি সামনেও করতে হবে, এটা ভুলে যায় না যেন। এক মাঘে শীত যায় না।’
এই অংশ (কথোপকথন) সম্পর্কে রায়ে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে কারও নাম উল্লেখ না করে কর্মকর্তাদের হুমকি দিয়েছেন হাসিনা। তবে ধারণা করা যায়, শেখ হাসিনা মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের (প্রসিকিউটর, তদন্ত কর্মকর্তা, ট্রাইব্যুনালের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য) ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দিয়েছেন।
বুলবুলের সঙ্গে কথোপকথনের মাঝামাঝি সময়ে শেখ হাসিনা কী বলেছেন, সেটিও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আমার তো সারা বাংলাদেশে ২২৭টি মার্ডার কেস। তোমরা তালিকা করো। ধরো অন্তত ২২৭ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি। আর এক মামলার যে শাস্তি আর সোয়া ২০০ মামলায় সেই শাস্তি, তাই না? তো ঠিক আছে, সেই শাস্তি নেব কিন্তু তার আগে সোয়া ২০০ হিসাব করে নেব। এটা যেন মাথায় থাকে।’
রায়ে বলা হয়েছে, বুলবুলের কাছে শেখ হাসিনা ২২৭ জনকে হত্যার দৃঢ়সংকল্প প্রকাশ করেছেন। সে জন্য বুলবুলকে তিনি ২২৭ জনের একটি তালিকা তৈরি করতে বলেছেন।
‘সবকিছু কি প্রকাশ্যে করতে হয়’
অডিওতে শেখ হাসিনাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘একটা কথা আমি বলি, তোমাদের কার বাড়ি পোড়াইছে কে?’ তখন বুলবুল বলেন, ‘ওই ওরাই নেত্রী, সবাই, জামাত-বিএনপি সকলেই।’ এরপর শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের বাড়িঘর নাই?’ বুলবুল বলেন, ‘আছে নেত্রী।’ হাসিনা বলেন, ‘তাদের ঘরবাড়ি নাই।’ বুলবুল বলেন, ‘জি, আছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাহলে, সবকিছু কি প্রকাশ্যে করতে হয়?’ বুলবুল বলেন, ‘জি না, না নেত্রী, জি।’ এরপর শেখ হাসিনা, ‘আমাদের ঘরবাড়ি নাই, তাদেরও ঘরবাড়ি থাকবে না।’
কথোপকথনের এই বিষয়টি তুলে ধরে রায়ে বলা হয়েছে, এসব বলে প্রতিদ্বন্দ্বী নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে বুলবুলকে উসকে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা ও বুলবুলের কথোপকথনের ওই অডিওর ফরেনসিক পরীক্ষার বাইরেও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা বিষয়টির তদন্ত করেন বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই তদন্ত সম্পর্কে রায়ে বলা হয়েছে, গাইবান্ধার সাংবাদিক সুমন মিয়া ফাঁস হওয়া ওই অডিও প্রথমে পান। অডিওর কথোপকথনটি স্থানীয় সাংবাদিক ও দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বুলবুল। তদন্তে আরও উঠে আসে, ‘এ টিম’ নামের একটি গ্রুপের (অনলাইনভিত্তিক) মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপে ও জুমে আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) গোপন সভা হতো। গত বছরের ২৫ অক্টোবর সে রকম একটি সভায় শেখ হাসিনা উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।
ট্রাইব্যুনালে তিন মামলা বিচারাধীন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা একটি মামলার এখন সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর একটিতে আওয়ামী লীগের গত দেড় দশকের শাসনামলে গুম–খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায়ও শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে।