মৌসুমের শেষে বাজারে আসে রুমা অধিকারীর বাগানের ভিন্ন জাতের আম, লাভও বেশি
Published: 14th, August 2025 GMT
এক একর জমির ওপর করা আমবাগানে গাছ আছে ৩০০টি। তবে কোনোটিই প্রচলিত জাতের নয়। বেশির ভাগ ভিনদেশি। কিং অব চাকাপাত, চ্যাংমাই, ডকমাই, কাটিমন, ব্যানানা, রেড পালমার, শ্রাবণী, হানি ডিউ, ফোর কেজি—এমন বাহারি নামের আম ঝুলছে বাগানের গাছে গাছে।
নীলফামারী জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের উত্তর বালাপাড়া গ্রামে এই বাগান গড়ে তুলেছেন রুমা অধিকারী নামের এক নারী। ইউটিউব দেখে এসব উন্নত জাত সম্পর্কে ধারণা নিয়ে চারা সংগ্রহের মাধ্যমে বাগানটি করেছেন তিনি। আমের পাশাপাশি মাল্টা, ড্রাগন, জাম্বুরা, কমলা ও সুপারির গাছও রয়েছে বাগানে।
এসব জাতের আমগাছে মার্চ মাসে মুকুল আসতে শুরু করে। আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পরিপক্ব হয়। দেশি আমের মৌসুমের শেষে এসব আম বাজারজাত হয়। এ কারণে বাজার দরও ভালো পাওয়া যায়। ফলে লাভের অঙ্কটাও একটু বেশি।
গত রোববার বাগান ঘুরে দেখার সময় নিজের গল্প জানালেন রুমা অধিকারী। তিনি ২০০৪ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এর পর থেকে তিনি কৃষিতে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। প্রায় ২০ বছর পর এসে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন তিনি।
২০০৪ সালে নীলফামারী সদর উপজেলার উত্তর বালাপাড়া গ্রামের দুলাল অধিকারীর সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। স্বামী পুলিশের উপপরিদর্শক। রুমার বাবা রমনী মোহন রায়ও ছিলেন পুলিশে। বিয়ের পর স্বামীর চাকরির সুবাদে দীর্ঘ সময় কেটেছে রংপুরে।
এরপর ২০২৩ সালে একাই (রুমা) গ্রামের বাড়িতে ফিরে স্বামীর পৈতৃক এক একর জমিতে রোপণ করেন বিভিন্ন প্রজাতির ৩০০টি আমের চারা। একই জমিতে আমের সঙ্গে রোপণ করেছেন বিখ্যাত দার্জিলিং কমলার চারা। বাগানের চারদিক ঘিরে রয়েছে ড্রাগন, জাম্বুরা, মাল্টা ও সুপারির গাছ। এতে তাঁর খরচ হয়েছে তিন লক্ষাধিক টাকা।
রুমা অধিকারী জানান, ২০২৪ সালে প্রথম আমের ফলন আসে। তাতে আয় হয় দেড় লক্ষাধিক টাকা। এবার ৩০০ গাছে আমের ফলন পেয়েছেন। বাগানে পরিপক্ব আম জাত ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে। তাতে পাঁচ লাখ টাকার ওপরে আয়ের আশা করছেন তিনি। ইতিমধ্যে দুই লক্ষাধিক টাকার আম বিক্রি করেছেন। বাগানটির নাম দিয়েছেন ‘বৃন্দাবন অর্গানিক অ্যাগ্রো ফার্ম’। বাগানে আমের সঙ্গে কমলা, ড্রাগন, মাল্টা ও সুপারির ফল নামলে প্রতিবছর ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন তিনি।
পরিবেশবান্ধব কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন থেকে ভিন্ন জাতের আমের বাগান গড়ে তুলেছেন রুমা অধিকারী। গত রোববার নীলফামারী সদর উপজেলার উত্তর বালাপাড়া গ্রামে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরার বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্পদের হিসাব না দেওয়ায় আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান মিয়া ওরফে গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরা মিয়ার বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান।
আরো পড়ুন:
মাদারীপুরে কবরস্থানে বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের অভিযান
পলাতক থাকলেও বিদেশে টাকা পাচার অব্যাহত জাবেদের: দুদক
তিনি বলেন, “গুলশান আরা মিয়ার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে নির্ধারিত সময়ে সম্পদের হিসাব দিতে বলা হলেও তিনি জমা দেননি। ফলে, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় (১) একটি মামলা রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”
দুদক জানায়, আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান মিয়া ওরফে গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরা মিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে। অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে কমিশন। এক পরিচালক এর সমন্বয়ে দুই সদস্য বিশিষ্ট টিমও গঠন করা হয়। অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে গোলাপের স্ত্রীর অর্জিত সম্পদের পরিমাণ, সম্পদ অর্জনের উৎস ও উৎসসমূহের সঠিকতা বা যথার্থতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিরুপণে কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(১) ধারা অনুযায়ী গত ১৫ এপ্রিল তাকে সম্পদের হিসাব দাখিলের নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশ পেয়ে তিনি সম্পদ বিবরণীর দাখিলের সময় বৃদ্ধির জন্য গত ২৩ জুলাই আবেদন করেন।
আবেদনের প্রেক্ষিতে পূর্বোক্ত সময়সীমার ধারাবাহিকতায় আরো ১৫ কার্যদিবস সময় বর্ধিত করা হয়। বর্ধিত ২১ আগস্টের মধ্যে তার সম্পদ বিবরাণী দাখিলের সময় শেষ হয়ে গেলেও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুলশান আরা মিয়া সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি। কিন্তু তিনি নির্ধারিত ও বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ প্রাপ্তির পর তদনুযায়ী লিখিত বিবৃতি বা তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় (০১) একটি মামলার অনুমোদন দেয় দুদক।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি