সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ৪২ ধরনের আয় করমুক্ত, সেগুলো কী
Published: 14th, August 2025 GMT
সরকারি কর্মকর্তাদের আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। তাঁদের অনেক আয়ের ওপর কর দিতে হয়, আবার কিছু আয়ের ক্ষেত্রে কর দিতে হয় না।
বর্তমানে দেশে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তাঁদের একটি অংশ এখনো করজালের বাইরে থাকলেও আয়কর আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট আয়ের ওপর কর দেওয়া আইনিভাবে বাধ্যতামূলক।
করযোগ্য আয়সরকারি বেতন আদেশভুক্ত একজন কর্মচারীর মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস করযোগ্য আয় হিসেবে ধরা হবে। এসব আয়ের ওপর নির্ধারিত হারে আয়কর দিতে হবে।
করমুক্ত আয়জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের আয়কর নির্দেশিকায় ৪২ ধরনের ভাতা ও সুবিধাকে করমুক্ত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা ভাতা, নববর্ষ ভাতা, বাড়িভাড়া ভাতা, শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা, শিক্ষাসহায়ক ভাতা, কার্যভার ভাতা, পাহাড়ি ভাতা, ভ্রমণ ভাতা, যাতায়াত ভাতা, টিফিন ভাতা, পোশাক ভাতা, আপ্যায়ন ভাতা, ধোলাই ভাতা, বিশেষ ভাতা, প্রেষণ ভাতা, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে প্রেষণ ভাতা, জুডিশিয়াল ভাতা, চৌকি ভাতা, ডোমেস্টিক এইড অ্যালাউয়েন্স, ঝুঁকি ভাতা, অ্যাকটিং অ্যালাউয়েন্স, মোটরসাইকেল ভাতা, আর্মরার অ্যালাউয়েন্স, নিঃশর্ত যাতায়াত ভাতা, টেলিকম অ্যালাউয়েন্স, ক্লিনার অ্যালাউয়েন্স, ড্রাইভার অ্যালাউয়েন্স, মাউন্টেড পুলিশ অ্যালাউয়েন্স, পিবিএক্স অ্যালাউয়েন্স, সশস্ত্র শাখা ভাতা, বিউগলার অ্যালাউয়েন্স, নার্সিং অ্যালাউয়েন্স, দৈনিক বা খোরাকি ভাতা, ট্রাফিক অ্যালাউয়েন্স, রেশন মানি, সীমান্ত ভাতা, ব্যাটম্যান ভাতা, ইন্সট্রাকশনাল অ্যালাউয়েন্স, নিযুক্তি ভাতা, আউটফিট ভাতা ও গার্ড পুলিশ ভাতা। এ ছাড়া অবসরকালে প্রদত্ত লাম্প গ্রান্টও করমুক্ত থাকবে।
রিটার্ন দেওয়ার প্রস্তুতির ছয় পরামর্শরিটার্ন জমা দেওয়ার আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কিছু প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি—
১.
নথি আগে জোগাড় করুন
জাতীয় পরিচয়পত্র, চাকরির আইডি, গত বছরের রিটার্ন, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, বিনিয়োগ ও সঞ্চয়ের নথি গুছিয়ে রাখুন।
২. আয়ের উৎস স্পষ্ট করুন
মূল বেতন ছাড়াও ভাতা, চিকিৎসা খরচ, বাসাভাড়া, ভ্রমণ ভাতা ও অতিরিক্ত আয়ের তথ্য লিখুন।
৩. করমুক্ত ও করযোগ্য অংশ আলাদা করুন
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী করমুক্ত ও করযোগ্য আয়ের হিসাব মিলিয়ে নিন।
৪. করছাড়ের সুযোগ নিন
জীবনবিমা, সঞ্চয়পত্র, শেয়ারবাজার বিনিয়োগ, শিক্ষা ব্যয় ইত্যাদির করছাড় গ্রহণ করুন।
৫. ভুল এড়িয়ে চলুন
বানান, অ্যাকাউন্ট নম্বর বা স্লিপ নম্বরের ভুল এড়ান। সব কাগজের কপি সংরক্ষণ করুন।
৬. সময়ের আগে জমা দিন
শেষ মুহূর্তের ঝামেলা এড়াতে সময়সীমার অন্তত ১০-১৫ দিন আগে রিটার্ন জমা দিন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত করম ক ত করয গ য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শেয়ারবাজারে বিও হিসাব খুলবেন কীভাবে, কী কী লাগে
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা করতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে একটি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স বা বিও হিসাব খুলতে হবে। এই হিসাব খুলতে হবে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউসে। ব্যাংকে টাকা জমা বা ঋণ নিতে যেমন ব্যাংক হিসাব থাকা বাধ্যতামূলক, তেমনি শেয়ারবাজারে শেয়ার কেনাবেচায়ও বিও হিসাব থাকা বাধ্যতামূলক।
কোনো কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর শেয়ার হোক বা সেকেন্ডারি বাজারে লেনদেন, উভয় ক্ষেত্রেই বিও হিসাব ছাড়া শেয়ার কেনাবেচা কোনোটাই করা যাবে না।
সাধারণত ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে বিও হিসাব খুলতে হলেও মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমেও বিও হিসাব খোলা যায়। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের সঙ্গে সমন্বয় করে এই বিও হিসাব খুলে থাকে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বড় বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি বড় জেলা শহরেও ব্রোকারেজ হাউসের শাখা রয়েছে। এ ছাড়া অনলাইনেও বিও হিসাব খোলার ব্যবস্থা রয়েছে শেয়ারবাজারে।
কী কী লাগবেব্যাংক হিসাবের মতো বিও হিসাব খোলার ক্ষেত্রেও কিছু কাগজপত্র লাগে। এসব কাগজপত্র ছাড়া বিও হিসাব খোলা যায় না। এবার দেখা যাক, কী কী কাগজপত্র ও তথ্য লাগে।
১. জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
২. মুঠোফোন নম্বর ও ই–মেইল
৩. পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি
৪. কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) সনদের কপি
৫. ব্যাংক হিসাবের সাধারণ তথ্য
৬. পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রীর নাম ও প্রয়োজনীয় তথ্য
৭. নমিনির তথ্য, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও ছবি
খরচ কতবিও হিসাব খুলতে সার্ভিস চার্জ হিসেবে কিছু টাকা খরচ হয়। ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংকভেদে এর পরিমাণ কিছু কমবেশি হয়। তবে মোটাদাগে বিও হিসাব খোলার খরচ এক হাজার টাকার মধ্যে থাকে।
বিও হিসাব কেন লাগেবেশ কয়েকটি কারণে শেয়ারবাজারে লেনদেনে বিও হিসাব থাকা বাধ্যতামূলক। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে—
১. শেয়ার কেনাবেচার রেকর্ড রাখার জন্য বিও হিসাব লাগে। আগে কাগুজে শেয়ার ছিল। এখন প্রায় সব শেয়ার অনলাইনে ডিম্যাট ফর্মে থাকে। বিও অ্যাকাউন্ট ছাড়া আপনার শেয়ার আপনার হিসাবভুক্ত হবে না।
২. ডিভিডেন্ড ও বোনাস শেয়ার পেতে সুবিধা হয়। কোম্পানির লভ্যাংশ, বিশেষ করে বোনাস লভ্যাংশ জমা হয় সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীর বিও হিসাবে। আর নগদ লভ্যাংশ জমা হয় বিও হিসাবের সঙ্গে দেওয়া ব্যাংক হিসাবে।
৩. শেয়ার কেনাবেচা সহজ হয়। আপনি ব্রোকার বা অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে শেয়ার কিনলে সেই শেয়ার জমা হবে বিও হিসাবে আর বিক্রি করলে বিও হিসাব থেকে ওই শেয়ার বাদ যাবে।
মুঠোফোন ও ই-মেইল কেন জরুরিবিও হিসাব খোলার ক্ষেত্রে আপনার মুঠোফোন ও ই-মেইল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আপনার বিও হিসাবে কোনো শেয়ার কেনাবেচা হলে তাৎক্ষণিকভাবে আপনার মুঠোফোনে বার্তা যাবে। আবার আপনার বিও হিসাবে শেয়ার লেনদেনের হালনাগাদ চিত্র নিয়মিত আপনার ই-মেইল ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয় ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক। এতে আপনি নিজের বিনিয়োগ সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য জানাতে পারবেন।