গাজীপুরে ট্রেন আটকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 14th, August 2025 GMT
বিভিন্ন দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) এলাকায় রেললাইন অবরোধ করেন। তাঁরা রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বনলতা ট্রেন আটকে বিক্ষোভ করেন। এ সময় প্রায় ৪০ মিনিট উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।
আজ সকাল ১০টার দিকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীরা জয়দেবপুর শিমুলতলী এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা পাশেই রেললাইন অবরোধ করেন। বেলা ১১টার দিকে তাঁরা রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে দেন। পরে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে শহরের শিববাড়ী মোড়ের দিকে রওনা দেন।
জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার আবুল হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে একপর্যায়ে বনলতা ট্রেন আটকে দেন। ৪০ মিনিট পর তাঁরা ট্রেনটি ছেড়ে দেন। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত বুধবার ও আগামীকাল শুক্রবার ঢাকা মেট্রোরেলের সেকশন ইঞ্জিনিয়ার পদের পরীক্ষায় বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীরা রিট করায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন।
তাঁদের দাবি অবিলম্বে স্থগিত হওয়া সেকশন ইঞ্জিনিয়ার পদের নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণ করতে হবে। উপসহকারী প্রকৌশলী পদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী ও এর ইন্ধনদাতাদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উপসহকারী প্রকৌশলী (দশম গ্রেড) পদে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থী ব্যতীত কাউকে আবেদন করতে দেওয়া যাবে না। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের নামে যাঁরা অসৌজন্যমূলক পোস্ট করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট র ন আটক
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৮ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই এসআই ও ছয় কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রংপুর পুলিশ সুপারের নির্দেশে বুধবার (১৩ আগস্ট) তাদের বরখাস্ত করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
পাশাপাশি ওই হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু জোবায়েরকে তদন্ত কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে তারাগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলামকে।
তারাগঞ্জ থানার ওসি এমএ ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
মাগুরায় টাকা চুরির অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৩
রংপুরে গণপিটুনিতে ২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা
সাময়িক বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন- তারাগঞ্জ থানার এসআই আবু জোবায়ের, এসআই সফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল ফারিকুদ আখতার জামান, ধিরাজ কুমার রায়, হাসান আলী, ফিরোজ কবির, মোক্তার হোসেন ও বাবুল চন্দ্র রায়।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আট পুলিশ সদস্যকে বুধবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই দিন ঘটনার সময় তারাগঞ্জ থানায় মোবাইল টিমের দায়িত্বে ছিলেন তারা।
শনিবার (৯ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় চোর সন্দেহে রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাস নামে দুইজনকে আটক করে পিটিয়ে হত্যা করেন এলাকাবাসী। নিহতরা সম্পর্কে আত্মীয়।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, রুপলাল দাসের মেয়ে নুপুর দাসের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুর এলাকার লাল চাঁদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। রবিবার (১০ আগস্ট) বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করার কথা ছিল। শনিবার (১১ আগস্ট) বিকেলে মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে প্রদীপ দাস তারাগঞ্জের রুপলাল দাসের বাড়ির দিকে রওনা হন। গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় গিয়ে রুপলালকে ফোন করেন।
রুপলাল গেলে দুইজনে ভ্যানে চড়ে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হন। রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যানচোর সন্দেহে তাদের থামান স্থানীয় কয়েকজন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে প্রদীপ দাসের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট বোতল বের করে লোকজন। এর একটি বোতল খুললে ভেতরে থাকা তরলের ঘ্রাণে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুইজন। ফলে লোকজনের সন্দেহ আরো বৃদ্ধি পায়। এরপর রুপলাল ও প্রদীপকে মারধর করতে শুরু করেন এলাকাবাসী।
মারধরের একপর্যায়ে অচেতন হলে তাদের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফেলে রাখা হয়। রাত ১১টার দিকে আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক রুপলাল দাসকে (৪০) মৃত ঘোষণা করেন। প্রদীপ দাসকে (৩৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার ভোরে তিনিও মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত রূপলাল দাসের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ