ভাঙ্গায় সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে তৃতীয় দিনের মতো মানববন্ধন
Published: 24th, September 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদসহ পাঁচ দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার কে এম কলেজের সামনে অখণ্ড ভাঙ্গা উপজেলা রক্ষা কমিটির উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর আগে একই দাবিতে গত সোমবার ও গতকাল মঙ্গলবার মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তাঁরা প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে আবার ফরিদপুর-৪ আসনে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ইতিবাচক আশ্বাস দেওয়া হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিপূর্ণভাবে তাঁরা তাঁদের দাবির সমর্থনে আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন স্থানীয় আবুল হোসেন, এনামুল কাজী, মাসুদ মুন্সি, ইমরান হোসেন প্রমুখ।
ফরিদপুরের-৪ আসনের অধীন ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করে ৪ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর প্রতিবাদে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে আন্দোলন করে আসছেন স্থানীয় লোকজন। এর মধ্যে আন্দোলনে সহিংসতার জেরে আলগী ইউপি চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক মিঞাসহ কয়েকজন গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে হাইকোর্টে এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর রুল জারি করেন আদালত। ১০ দিনের মধ্যে সেই রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এলাকাবাসীর পাঁচ দফা দাবির মধ্যে আছে—ভাঙ্গাকে অখণ্ড রাখতে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে কেটে নেওয়ার আদেশ বাতিল করে ফরিদপুর-৪ আসনে ফিরিয়ে দেওয়া; আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী আলগী ইউপির চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক মিঞা ও আলগী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো.
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আবদুল জলিল বলেন, হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। এ অবস্থায় আন্দোলনকারীদের আন্দোলন প্রত্যাহার করতে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করলেও কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে নতুন করে ইস্যু তৈরি হতে পারে। এ জন্য সবার ধৈর্য ধরা জরুরি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মানববন্ধন
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নবাসী। আজ সোমবার বেলা ১টা থেকে ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ভাঙ্গার সুয়াদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ফরিদপুর-৪ আসন থেকে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন বাদ দিয়ে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন এলাকাবাসী। এতে দুই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষসহ ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন। কর্মসূচিটি আয়োজন করে ‘অখণ্ড ভাঙ্গা রক্ষা কমিটি’।
মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন আলগী ইউনিয়নের সুয়াদী এলাকার বাসিন্দা ইমরান হোসেন ও হান্নান মাতুব্বর। তাঁরা বলেন, প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল রোববার প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে ওই দুই ইউনিয়নকে পুনরায় ফরিদপুর-৪ আসনে রাখার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ ঘোষণার প্রতি আস্থা রেখে আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে অব্যাহত থাকবে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের অভিযোগ, খেটে খাওয়া মানুষের নামে হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া হচ্ছে, যা অমানবিক। তাঁরা গ্রেপ্তার হওয়া আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক ও অন্যদের মুক্তির দাবি জানান।
হামিরদী ইউনিয়নের মাঝিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। প্রশাসন আমাদের কথা শুনেছে, তাই আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছি। থানায় হামলার পর এলাকায় ভয়ে কেউ ঘুমাতে পারেনি। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয়েছে, নির্দোষ কাউকে হয়রানি করা হবে না। আমরা সে ঘোষণার প্রতি আস্থা রাখতে চাই।’
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রোকিবুজ্জামান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে আমাদের কোনো বাধা নেই। তাঁরা যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করেন, কাউকে বিরক্ত না করে কর্মসূচি পালন করেন, তাহলে বাধা দেওয়া হবে না।’ তিনি জানান, এ বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, তাই আন্দোলনকারীরা রায় হওয়ার আগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, এমন কোনো কর্মসূচিতে যাবেন না বলে পুলিশ প্রশাসনকে কথা দিয়েছেন।
গতকাল রোববার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলনকারীরা হাইকোর্টের রায় না হওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিবালয় গেজেটে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন বাদ দিয়ে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করার আদেশ দেয়। এ বিষয়ে কেন আদেশটি অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। যার জবাব দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট ১০ দিন সময় বেঁধে দেন।
আগামী সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহবুবুর রহমানসহ পাঁচজন হাইকোর্টে আবেদন করেন। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।