আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে তৃতীয়বারের মতো বাবা হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন ফায়ার সার্ভিস কর্মী নুরুল হুদা। কিন্তু সন্তান জন্মের আগেই চলে যেতে হলো তাঁকে।

গাজীপুরের টঙ্গীতে রাসায়নিক গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে গত সোমবার দগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। আজ বুধবার বেলা ২টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরুল হুদা মারা যান।

নুরুল হুদার মৃত্যুর খবরে তাঁর গ্রামের বাড়ি গফরগাঁও উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের ধামাইল গ্রামে পরিবারের সদস্য এবং এলাকাবাসী মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নুরুলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আসমা খাতুন। আগামী ৫ অক্টোবর তৃতীয় সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা রয়েছে আসমার।

স্বামীর মৃত্যুর খবরে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন অন্তঃসত্ত্বা আসমা খাতুন। স্কুলপড়ুয়া দুই সন্তানকে আঁকড়ে চলছে থেমে থেমে আহাজারি। আসমা খাতুন বলেন, ‘আমার দুই সন্তান এতিম হলো। আরেক সন্তানের মুখই দেখতে পারল না আমার স্বামী। আল্লাহ কেন আমার জীবন এমন করে দিল?’

নুরুল হুদা টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসে ফায়ার ফাইটার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি চাকরিতে যোগ দেন ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ। তিনি মা, বাবা, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীসহ এক মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। নুরুল হুদার বাবার নাম আবুল মুনসুর। তিনি পেশায় একজন চামড়া ব্যবসায়ী।

আরও পড়ুনটঙ্গীতে রাসায়নিক গুদামে আগুনে দগ্ধ ফায়ার সার্ভিসের আরেক সদস্যের মৃত্যু১৮ ঘণ্টা আগে

গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে টঙ্গীর সাহারা সুপার মার্কেটসংলগ্ন একটি গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে তা বিভিন্ন স্থাপনায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ও জয়দেবপুরের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে রাসায়নিকের ড্রাম বিস্ফোরিত হয়ে ফায়ার সার্ভিসের চার কর্মী ও এক কর্মকর্তা দগ্ধ হন। এ ঘটনায় এর আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামিম আহম্মেদ (৪২) নামে ফায়ার সার্ভিসের আরেক কর্মী মারা যান।

নুরুল হুদার মামা গফরগাঁও মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক সাব্বির কামাল বলেন, ‘আমার ভাগনে অন্যের জানমাল রক্ষা করতে গিয়ে জীবনটাই বিলিয়ে দিল। মৃত্যুর আগে দুই হাত উঁচু করে ভাগনে বলেছিল, মামা ফি-আমানিল্লাহ। আমার জন্য দোয়া করো। আমার মা, বাবা ও স্ত্রী–সন্তানদের দেখে রেখো।’

আরও পড়ুনমায়ের সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি যেতে চেয়েছিলেন ফায়ার ফাইটার শামীম২০ ঘণ্টা আগেস্বামীর মৃত্যুর খবরে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন আসমা খাতুন। গতকাল বুধবার বিকেলে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সন ত ন

এছাড়াও পড়ুন:

রায় ঘোষণার পর জুলাই যোদ্ধাদের উচ্ছ্বাস

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সেই সঙ্গে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

রায় ঘোষণার পরপরই হাইকোর্টের সামনে অপেক্ষারত জুলাই যোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বিভিন্ন স্লোগানে তারা রায়কে স্বাগত জানান।

এদিকে, রায় ঘোষণার পরে উল্লাস প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা মিষ্টি বিতরণ করেন।

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ