হয়ে গেল ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ জাতীয় পর্ব
Published: 25th, September 2025 GMT
রাজধানীর ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে আজ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী আয়োজনের মাধ্যমে সম্পন্ন হলো বিশ্ব রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ (ডব্লিওআরওবিডি) ২০২৫-এর জাতীয় পর্ব। এ আয়োজনে তিনটি আঞ্চলিক পর্বের মাধ্যমে বাছাই করা প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। জাতীয় পর্বে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাই চলতি বছরের নভেম্বরে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠেয় ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডের আন্তর্জাতিক আসরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফিউচার ইনোভেটরস সিনিয়র শ্রেণিতে স্বর্ণপদক পেয়েছে তিন সদস্যের টিম ইনক্রেভো, ফিউচার ইনোভেটরস জুনিয়র শ্রেণিতে স্বর্ণপদক অর্জন করেছে। দুই সদস্যের টিম সাইবার স্কোয়াড এবং ফিউচার ইঞ্জিনিয়ার্স শ্রেণিতে স্বর্ণপদক পেয়েছে ৩ সদস্যের টিম লেজি গো। এ ছাড়া প্রতি শ্রেণিতেই রৌপ্যপদক, ব্রোঞ্জপদকসহ মোট ১৪টি দলকে পদক দেওয়া হয় এবং ৫টি দলকে সম্মানজনক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত টিম সাইবার স্কোয়াড দলের আফিয়া হুমাইরা বলেন, ‘এই স্বর্ণপদক আমাদের জন্য অত্যন্ত অনুপ্রেরণার। আমরা রোবোটিকসে আরও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চাই এবং দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্য অর্জন করতে চাই।’
এবারই প্রথমবারের মতো প্রতিযোগিতাটি আঞ্চলিক পর্যায়ে আয়োজন করা হয়েছে, যার ফলে দেশের বিভিন্ন শহরের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ অঞ্চলে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন এবং সেখান থেকে জাতীয় পর্বের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও রংপুরে। আঞ্চলিক পর্বে বাছাই করা ৭০টি দল জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করেছে।
রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ জাতীয় পর্বে কয়েকজন প্রতিযোগী.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ত য় পর ব গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
ওপেন ওয়ার্ল্ডে পদক জয়ের অভিজ্ঞতার কথা জানাল বাংলাদেশের পদকজয়ীরা
রাশিয়ার সোচি শহরে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড। এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ৬ প্রতিযোগী অর্জন করেছে একটি স্বর্ণপদক, দুটি রৌপ্যপদক, একটি ব্রোঞ্জ ও সম্মানসূচক স্বীকৃতি।
চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডে বিশ্বের ২০টি দেশের ৯০ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে পদকজয়ীরা তাঁদের অনুভূতির কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এই সংগঠনের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
বাংলাদেশ দলের হয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করেন যশোরের পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মখদুম আমিন ফাহিম। অনুভূতি প্রকাশ করে এই শিক্ষার্থী বলেছে, ‘এমন কিছু যেটা কখনো কেউ অর্জন করতে পারেনি। দেশের জন্য সেটা বয়ে নিয়ে আসা সত্যিই অসাধারণ অনুভূতির।’ এই অর্জনের কৃতিত্ব ফাহিম নিজের বিদ্যালয়, পরিবার এবং বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনকে দিয়েছে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নতুনদের উদ্বুদ্ধ করে মখদুম আমিন ফাহিম বলে, অ্যাস্ট্রোনমিতে ভালো করতে গেলে পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতে ভালো জ্ঞান থাকা বাধ্যতামূলক। থাকতে হবে লেগে থাকার মানসিকতা।
রৌপ্যপদক জেতা ঢাকার হিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এ লেভেল শিক্ষার্থী সপ্তর্ষি রহমান ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রাদিত রাইয়ানের কণ্ঠেও ছিল আনন্দের সুর।
এর আগে অনেক পুরস্কার পেলেও এবারের রৌপ্যপদক অর্জনকে বিশেষ বলে মন্তব্য করেছে সপ্তর্ষি রহমান। সে জানিয়েছে, ‘ওপেন ওয়ার্ল্ডের পুরস্কারটা একটু স্পেশাল। কারণ এই অর্জন শুধুই নিজের নয়, বরং এতে নিজ দেশকেও তুলে ধরা হয়েছে।’ এই অর্জন পুরো বাংলাদেশের বলে মনে করে সপ্তর্ষি।
মো. রাদিত রাইয়ান বলেছে, ‘প্রতিটি পরীক্ষার আগে এই অনুভূতি ছিল, দেশের জন্য কিছু করতে হবে। এমন একটা স্থানে নিজ দেশকে উপস্থাপন করতে পারাটা আনন্দদায়ক।’ অন্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে নিজ দেশের সংস্কৃতি বিনিময় করার অভিজ্ঞাতাও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেছে এই শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. জুবায়ের হোসেন জিসান এবং সম্মানসূচক স্বীকৃতি পাওয়া খুলনার সাউথ হেরাল্ড ইংলিশ স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়ন্তন রায়।
চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের বাছাইপ্রক্রিয়া
রাশিয়ায় অংশগ্রহণের আগে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডের ২০তম আসর আয়োজন করে। প্রাথমিকভাবে দেশের জেলা ও বিভাগীয় স্তরে দিনব্যাপী প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই রাউন্ড থেকে বাছাইকৃত ৩০০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের আয়োজন করে। সর্বশেষ পর্যায়ে ৩০ জনকে নিয়ে ক্লোজড ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। ক্লোজড ক্যাম্প শেষে চূড়ান্ত পরীক্ষায় ৬ জনকে রাশিয়ার প্রতিযোগিতার জন্য বাছাই করা হয়।
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন বলেন, এবারের প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করানোটা কঠিন ছিল। তবে শিক্ষার্থীদের সাফল্যে তাঁরা নতুন করে কাজের উদ্যম খুঁজে পেয়েছেন।
চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড ২০২৫–এ অংশ নেওয়া ছয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে দলনেতা বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন (মাঝে)