গায়ক আসিফও দাঁড়াচ্ছেন বিসিবির নির্বাচনে
Published: 27th, September 2025 GMT
কণ্ঠশিল্পী হিসেবেই তাঁর জনপ্রিয়তা। কুমিল্লার মানুষের মুখে পরিচয় ‘গায়ক আসিফ’ নামে। হ্যাঁ, সংগীতশিল্পী আসিফ আকবরের কথাই বলা হচ্ছে, বিসিবির নির্বাচনে যিনি এবার কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর। নির্বাচন করবেন বিসিবির পরিচালক পদের জন্যও।
গানের জগতে ক্যারিয়ার গড়লেও আসিফ আকবর একসময় ছিলেন পুরোদস্তুর ক্রিকেটার। নব্বই দশকের শুরুর দিকে ঢাকা প্রথম বিভাগ লিগে খেলেছেন ইয়ং পেগাসাসের হয়ে। আর কুমিল্লা লিগে তো খেলেছেন স্কুলজীবন থেকেই। নির্মাণ স্কুল ক্রিকেটে কুমিল্লা জিলা স্কুল ও আন্তকলেজ ক্রিকেটে ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধিনায়ক। একটা সময় খেলা ছেড়ে গানে মন দিলেও মাঠের সঙ্গে যোগাযোগটা হারিয়ে যেতে দেননি আসিফ।
গানের শো করতে আসিফ আকবর বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। নিউইয়র্ক থেকে গতকাল রাতে প্রথম আলোকে মুঠোফোনে তিনি জানিয়েছেন তাঁর বিসিবির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহের কারণ, ‘কুমিল্লার খেলাধুলার দারুণ ঐতিহ্য ছিল একসময়। ফুটবল, ক্রিকেট, হকি—সব খেলায় আমাদের দাপট ছিল। অথচ ঢাকার এত কাছের জেলা হয়েও আমরা সব হারিয়েছি। কুমিল্লায় ৬ বছর ধরে ক্রিকেট লিগ হয় না, এটা ভাবা যায়! বিসিবিতে যদি আসতে পারি, সবার আগে আমার লক্ষ্য থাকবে কুমিল্লার ক্রিকেটকে আগের জায়গায় নিয়ে যাওয়া, যেন জাতীয় পর্যায়ে আমাদের প্রতিনিধিত্ব থাকে।’
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় জেলা ও বিভাগ থেকে আসা বিসিবির পরিচালকেরা নিজ এলাকার ক্রিকেটের উন্নয়নেই কোনো ভূমিকা রাখেন না। এদিক দিয়ে ব্যতিক্রম হতে চান আসিফ এবং সেটার আরও কারণও আছে। আসিফই বলেছেন, ‘কুমিল্লার ছেলেমেয়েরা এখন আর মাঠমুখী নয়। মাদক একটা ভয়ংকর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হয়েছে। এসব হয়েছে শুধু বাচ্চাদের মাঠমুখী করা যায়নি বলে। আমাদের সন্তানেরা খেলার জায়গা পায় না, অথচ আমরা স্টেডিয়াম ভাড়া দিই ঢাকার ফুটবল ক্লাবকে! কেন? আমি চেষ্টা করব মাঠে খেলা ফিরিয়ে কুমিল্লার ক্রিকেট এবং তরুণসমাজের জন্য কিছু করতে।’
আরও পড়ুনবিসিবির খসড়া ভোটার তালিকায় কারা আছেন, কারা নেই২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫শুধু কুমিল্লা নয়, বিসিবির পরিচালক হওয়ার সুযোগ পেলে চট্টগ্রাম বিভাগের সব জেলার ক্রিকেটেই অবদান রাখতে চান আসিফ, ‘কুমিল্লার পাশাপাশি নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদুপর, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ পুরো চট্টগ্রাম বিভাগেই ক্রিকেট প্রতিভার অভাব নেই। আমি মনে করি প্রতিটি জেলার ক্রিকেট নিয়েই ভিন্ন কিছু করার সুযোগ আছে।’
আসিফ জানিয়েছেন, বিসিবির কাউন্সিলর হওয়ার আগ্রহ তাঁর নিজের তেমন ছিল না। কুমিল্লার সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটার ও সংগঠকদের অনুরোধেই শেষ পর্যন্ত কাউন্সিলর হতে সম্মত হয়েছেন তিনি, ‘ক্রিকেট আর ক্রিকেটারদের প্রতি সব সময়ই একটা আবেগ কাজ করে আমার। নিজে খেলেছি, খেলাটাকে ভালোবাসি.
৬ অক্টোবর বিসিবির নির্বাচন। তবে আসিফ আকবর জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন যুক্তরাষ্ট্রে বসেই, ‘এখানে আমার টানা ১৪টি শো আছে। দুটি হয়েছে, আরও ১২টি আছে। গান আমার পেশা, এটা তো ছাড়া যাবে না! এখান থেকেই আমি ই–ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেব। কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছি। তাঁরাও আমাকে আশ্বস্ত করছেন।’
বিসিবির নির্বাচনে আজ পরিচালক পদের মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। জমা দিতে হবে আগামীকাল।
আরও পড়ুনআমিনুল-তামিম, নাকি সরকার-বিএনপি লড়াই২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হোয়াটসঅ্যাপ আসার আগে মায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য অ্যাপ বানিয়েছিলাম
তখন হোয়াটসঅ্যাপ ছিল না। বাইরে থেকে বাংলাদেশে টেলিফোন করাটা ছিল এক বিরাট ঝক্কি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায়ই সময়ে অসময়ে আমাকে বাংলাদেশে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে হতো। টেলিফোন করার দু-একটা অ্যাপ আমার আইফোনে ছিল, কিন্তু সেগুলো ছিল খুব বাজে।
হঠাৎ লাইন কেটে যেত, ক্রেডিট কার্ড থেকে বেশি পয়সা কেটে নিতো। একসময় মনে হলো নিজেই একটা টেলিফোন অ্যাপ বানাই না কেন। যেহেতু আইফোন ব্যবহার করি, তাই নিয়েই শুরু করলাম।
কিছুদিন পড়াশোনা করে বুঝলাম, কাজটা সহজ নয়। আর বেশ সময়সাপেক্ষ। ভয়েসওভার টেলিফোন (ভিওআইপি) অ্যাপ্লিকেশন এমনিতেই বেশ জটিল ধরনের অ্যাপ। আর আমরা যেসব প্ল্যাটফর্মে কাজ করি, সেগুলো কতগুলো নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড ও প্রচলিত প্রটোকল মেনে চলে।
কিন্তু স্টিভ জব আপেলের জন্য সবকিছু নিজস্ব ধারায় করে গেছেন। আপেল তাদের প্ল্যাটফর্মে সব কিছুতে এখনো নিজেদের তৈরি কাস্টম মেনে চলে। তবু কাজ শুরু করলাম, দেখা যাক কতটুকু যাওয়া যায়!
অ্যাপের নাম দিলাম ‘কলকরো’প্রথমে স্ক্রিনের কাজ, যেমন ডায়াল প্যাড ও বিভিন্ন আইকন। যুক্তরাষ্ট্রে এসব গ্রাফিকসের কাজ খুব ব্যয়বহুল। ঠিক করলাম, বাইরের ফ্রিলান্সার দিয়ে করাব। ইন্টারনেটে ফ্রিলান্সারদের ভালো কিছু প্ল্যাটফর্ম আছে। আমার পছন্দ ‘আপওয়ার্ক’। কী কী লাগবে তার বিবরণ দিয়ে একটা ‘প্রয়োজন’ পোস্ট করলাম।
দুই দিনের মধ্যেই সারা দুনিয়ার গ্রাফিকস ডিজাইনার হাজির! দুজনকে বাছাই করে কয়েক দিন ধরে তাঁদের সঙ্গে আমার প্রয়োজন ও অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে কথা বললাম। দুজনের মধ্যে ইউক্রেনের ডিজাইনার ছিলেন ব্যয়বহুল।
তাঁকে বাদ দিয়ে ভারতীয় একজন ডিজাইনারকে নিয়োগ দিলাম। এখানে বলে রাখি, ফ্রিলান্সারের পারিশ্রমিক ও টাকাকড়ির লেনদেন সব আপওয়ার্ক ব্যবহার করে করা হয় এবং একটা অংশ তারা কমিশন হিসেবে কেটে নেয়।
গ্রাফিকস ডিজাইন এমন কাজ যে একবারে তৃপ্ত হওয়া যায় না, বারবার আরও ভালো করার চেষ্টা চলতে থাকে। একসময় ডিজাইন শেষ হলো। স্ক্রিন লে–আউট ডিজাইনও বেশ কষ্টসাধ্য। পরের ধাপগুলো ছিল রুটিন—আপেল এপিআই ব্যবহার করে ব্যাকগ্রাউন্ড সার্ভিসগুলো তৈরি করে ব্যবহারকারী ও ব্যাকগ্রাউন্ড সার্ভিসের মধ্যে সংযোগ সৃষ্টি।
অ্যাপস্টোরে ‘কলকরো’ অ্যাপ