দুর্গাপূজা বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও মিলনমেলার প্রতীক: বিজিবির মহাপরিচালক
Published: 30th, September 2025 GMT
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, “বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে বাঙালির প্রতিটি উৎসব সবাই মিলে আনন্দ ভাগাভাগি করে পালন করে। দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, বরং এটি বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও মিলনমেলার প্রতীক। আমরা চাই, এ আনন্দ উৎসবের অংশীদার হোক সবার জীবন।”
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিনি সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী ভোমরা স্থলবন্দরে দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি পূজামণ্ডপে উপস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়, মন্দিরের সার্বিক নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ এবং পূণ্যার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের নিশ্চয়তা দেন।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তরণে কাজ করছে বিজিবি
যশোরে মদ-ফেনসিডিলসহ আটক ২
তিনি বলেন, “আমাদের দায়িত্ব শুধু সীমান্ত পাহারা দেওয়া নয়, বরং মানুষের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনায় সীমান্তবর্তী এলাকায় পূজার সময় যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, যেকোনো প্রকার চোরাচালান বা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি প্রস্তুত। পূণ্যার্থীরা নির্ভয়ে, আনন্দমুখর পরিবেশে পূজার সব আচার-অনুষ্ঠান পালন করবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
তিনি আরো বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এই চেতনায় আমরা সবাই মিলেমিশে শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। বিজিবি সবসময় জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে। দেশের প্রতিটি ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব সফল ও শান্তিপূর্ণ করতে আমরা সর্বদা বদ্ধপরিকর।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়ন পরিচালক লে.
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব
অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব হলো রাজধানীতে। নাচ, গান, আবৃত্তি, আলোচনায় রোববার ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে উদ্যাপন করা হলো ঋতুভিত্তিক এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব।
হেমন্তের বেলা শেষে ষড়ঋতু উদ্যাপন জাতীয় পর্ষদ আয়োজিত নবান্ন উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর ছিল ফারহানা করিমের নেতৃত্বে সমবেত নৃত্য।
নবান্নকথনে অংশ নেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এহসান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে অগ্রহায়ণে কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠে। নতুন ধান তাঁদের জীবনে নিয়ে আসে সচ্ছলতা। নিয়ে আসে আনন্দ। তবে নবান্ন কেবল ফসলের আনন্দই নয়, আমাদের লোকসংস্কৃতির একটি শক্তিশালী উপাদান। নাগরিক পরিবেশে ঋতুভিত্তিক এই উৎসবকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বসন্ত, বর্ষা, শরৎসহ ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো আয়োজন করা হবে।’
নবান্ন উৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চ ও মঞ্চের চারপাশের স্থান বর্ণাঢ্যভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। এর সঙ্গে ছিল ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির স্টল।
আলোচনার পরে শুরু হয় গানের পালা। সাগর বাউল শুরু করেছিলেন ভবা পাগলার গান ‘বারে বারে আসা হবে না’ গেয়ে। এরপর তিনি পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘লোকে বলে লালন ফকির কোন জাতের ছেলে’ এবং রাধারমণ দত্তের গান ‘অবলারে কান্দাইয়া’। ঢোল, একতারার বাজনা, বাঁশির সুর আর লোকসাধকদের এসব মরমি গানে গানে সাগর বাউল শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন।
অনুষ্ঠানে নজরুলসংগীত পরিবেশনের কথা ছিল শিল্পী ফেরদৌস আরার। তবে তিনি অসুস্থতার জন্য সংগীত পরিবেশন করতে পারেননি। এই চমৎকার অনুষ্ঠানের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ ও শ্রোতাদের শুভেচ্ছা জানান।
লোকশিল্পী আলেয়া বেগম পরিবেশন করেন ‘মালা কার লাগিয়া গাঁথি’সহ বেশ কয়েকটি গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আবৃত্তি ও কবিদের কবিতা পাঠ। এই পর্বে অংশ নেন কবি রাসেল রায়হান, রিক্তা রিনি, সানাউল্লাহ সাগর, জব্বার আল নাইম, ইসমত শিল্পীসহ অনেকে।
সংগীতশিল্পীদের মধ্যে কোহিনূর আক্তার পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘তিন পাগলের হইল মেলা’। ডলি মণ্ডল পরিবেশন করেন ‘সব লোক কয় লালন কী জাত সংসারে’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ষড়ঋতু উদ্যাপন জাতীয় পর্ষদের সদস্যসচিব দীপান্ত রায়হান।
শীতের মৃদু পরশ লেগেছে রাজধানীর হাওয়ায়। হালকা কুয়াশাও জমছে আকাশে। নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশে সুরে-ছন্দে বেশ খানিকটা রাত অবধি জমজমাট হয়ে উঠেছিল এই নাগরিক নবান্ন উৎসব।