ভারতে আরও কম দামে পাওয়া যাবে সুইস চকলেট
Published: 1st, October 2025 GMT
মান ও দামে সুইস চকলেটের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। তবে এখন ভারতে আগের চেয়ে কম দামে সুইস চকলেট ও ওয়াইন কেনা যাবে। এর কারণ ইউরোপের চারটি দেশের সঙ্গে ভারত একটি বাণিজ্য চুক্তি করেছে; এর মধ্যে সুইজারল্যান্ডও রয়েছে। অন্য তিন দেশ হচ্ছে নরওয়ে, আইসল্যান্ড ও লিচেনস্টাইন। খবর বিবিসির
ভারত ২০২৪ সালের মার্চে ইউরোপিয়ান ফ্রি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের (ইএফটিএ) সঙ্গে ‘ট্রেড অ্যান্ড ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট’ স্বাক্ষর করে। নতুন এই বাণিজ্য চুক্তি গত বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ভারত এই চারটি দেশ থেকে আসা ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়ে শূন্যে নামিয়ে আনবে। অন্যদিকে ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা এসব দেশের বাজারে ৯৯ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্তভাবে পাঠাতে পারবেন।
বিবিসি জানিয়েছে, এই চুক্তিটি ভারতের জন্য বিশেষ। কারণ, এর আগে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে করা চুক্তির মূল বিষয় ছিল শুধু শুল্ক কমানো। তবে এবার চুক্তিতে শুল্ক কমানোর পাশাপাশি বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। যেমন চুক্তির অংশ হিসেবে দুই পক্ষ আগামী ১৫ বছরে পরস্পরের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। পাশাপাশি কর্মসংস্থান হবে ১০ লাখ লোকের।
দিল্লিভিত্তিক চিন্তক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের কর্মকর্তা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, এই চুক্তি থেকে যদি কোনো সুবিধা হয়, সেটি শুল্ক কমানোর কারণে হবে না। কারণ, চুক্তিতে থাকা অনেক পণ্যই আগে থেকেই শুল্কমুক্ত। বরং চুক্তিতে বিনিয়োগের বিষয়টি থাকায় ভারতের ভাবমূর্তি বাড়বে। অর্থাৎ বিশ্ব বুঝবে যে ভারত ব্যবসার ক্ষেত্রে আরও উন্মুক্ত ও মুক্তবাজার নীতি গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
অন্যদিকে এমন এক সময় চুক্তিটি কার্যকর হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের বিকল্প বাজার খুঁজে বের করা জরুরি। ফলে ইউরোপের চার দেশের সঙ্গে ভারতের চুক্তিটি বেশ গুরুত্ব বহন করছে।
ভারতের সবচেয়ে বড় পণ্য বাণিজ্য অংশীদার হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো। ইইউর প্রায় ৬ হাজার কোম্পানি ভারতে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। গত জুলাই মাসে ভারত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি এফটিএ স্বাক্ষর করেছে; যা ২০২৬ সালে কার্যকর হওয়ার কথা। এ ছাড়া ভারত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও এফটিএ নিয়ে আলোচনা করছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে হঠাৎ কেন অবস্থান নিলেন ট্রাম্প
যৌন নিপীড়ন ও নারী পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত কুখ্যাত জেফরি এপস্টেইনের নথিগুলো প্রকাশের পক্ষে ভোট দিতে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে আগের অবস্থান থেকে সরে এসে সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
গতকাল রোববার রাতে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে ভোট দেওয়া উচিত। কারণ, আমাদের লুকানোর কিছু নেই।’
কয়েক দিন ধরে ট্রাম্প প্রয়াত এপস্টেইনের নথি প্রকাশ–সংক্রান্ত প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান জানিয়ে আসছিলেন। এখন সেখান থেকে তিনি সরে এসেছেন।
ট্রাম্প এমন সময়ে তাঁর অবস্থান বদল করলেন, যখন কিনা প্রতিনিধি পরিষদে এপস্টেইনের নথি প্রকাশ–সংক্রান্ত একটি আইন প্রণয়নের ওপর ভোটাভুটির প্রস্তুতি চলছে। ওই আইনের আওতায় মার্কিন বিচার বিভাগ নথিগুলো জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করতে বাধ্য হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে প্রস্তাবটির পক্ষে যথেষ্ট সমর্থন পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে উচ্চকক্ষ সিনেটে এটি পাস হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে প্রস্তাবটির পক্ষে যথেষ্ট সমর্থন পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে উচ্চকক্ষ সিনেটে এটি পাস হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।
ডেমোক্র্যাট ও কিছু রিপাবলিকান সদস্য এমন একটি পদক্ষেপের জন্য চাপ দিচ্ছেন, যা জেফরি এপস্টেইনের মামলা–সংক্রান্ত আরও নথি প্রকাশ করতে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগকে বাধ্য করবে।
এপস্টেইন ফাইল ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট নামের এই বিলের উদ্দেশ্য হলো, জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত সব অগোপনীয় নথি, রেকর্ড, চিঠিপত্র এবং তদন্তের তথ্য প্রকাশ করতে বিচার বিভাগকে বাধ্য করা।শোনা যাচ্ছিল, বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য দলের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেবেন। আর এর মধ্যেই নিজের অবস্থান বদল করে রিপাবলিকান সদস্যদের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানালেন ট্রাম্প।
রিপাবলিকান প্রতিনিধি টমাস ম্যাসি গতকাল এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রায় ১০০ জন রিপাবলিকান প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিতে পারেন। ম্যাসি এ প্রস্তাবের উদ্য্যোক্তাদের একজন।
আরও পড়ুনজেফরি এপস্টেইনের ব্যক্তিগত ইমেইলে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম১২ নভেম্বর ২০২৫এপস্টেইন ফাইল ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট নামের এই বিলের উদ্দেশ্য হলো, জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত সব নথি, রেকর্ড, চিঠিপত্র ও তদন্তের তথ্য প্রকাশ করতে বিচার বিভাগকে বাধ্য করা।
ট্রাম্প ফ্লোরিডা থেকে ম্যারিল্যান্ডের জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ বিমানঘাঁটিতে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরে ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট দেন।
ট্রাম্প লিখেছেন, ‘বিচার বিভাগ এরই মধ্যে এপস্টেইন–সংক্রান্ত হাজার হাজার পৃষ্ঠাভর্তি তথ্য জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করেছে। তারা বিভিন্ন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতার (যেমন বিল ক্লিনটন, রিড হফম্যান, ল্যারি সামার্স) সঙ্গে এপস্টেইনের সম্পর্ক খতিয়ে দেখছে। হাউস ওভারসাইট কমিটি আইনগতভাবে যে তথ্য চাইবে, তাই পেতে পারবে—আমার কোনো আপত্তি নেই!’
এপস্টেইনকে ২০০৮ সালে ফ্লোরিডায় ১৮ বছরের কম বয়সী একজন মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। যৌনবিষয়ক পণ্য পাচারের অন্য এক মামলায় বিচারের অপেক্ষায় থাকাকালে ২০১৯ সালে কারাগারে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনএপস্টেইন–কাণ্ডে নিজেকে বাঁচাতেই কি বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করলেন ট্রাম্প১৫ নভেম্বর ২০২৫