আট দফার বাস্তবায়ন চায় জুম্ম ছাত্র-জনতা
Published: 4th, October 2025 GMT
খাগড়াছড়িতে ডাকা অবরোধ কর্মসূচি স্থগিতের পর এবার প্রত্যাহার ঘোষণা করেছে জুম্ম ছাত্র-জনতা। আজ শনিবার সকালে সংগঠনটির ফেসবুক পেজ থেকে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আট দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
জুম্ম ছাত্র-জনতা জানায়, খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সংঘটিত ঘটনায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে জুম্ম ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিদের দ্বিতীয় দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় জুম্ম ছাত্র-জনতার আট দফা মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। এই আশ্বাস বিবেচনায় ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত রাখা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে অবরোধ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জুম্ম ছাত্র জনতার সদস্য কৃপায়ন ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ‘দ্রুত ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জুম্ম ছাত্র-জনতা আরও কঠোর ও অনির্দিষ্টকালের কর্মসূচি ঘোষণা করতে দ্বিধা করবে না।’
জুম্ম ছাত্র-জনতার ৮ দফার মধ্যে রয়েছে যেকোনো ধরনের হামলা-গ্রেপ্তার বন্ধ রাখা, ধর্ষণ মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা ও গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামির বিচার নিশ্চিত করা, ভুক্তভোগীকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন করা, ২৭ ও ২৮ অক্টোবর খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সংঘটিত ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার পর দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা, সহিংসতায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা এবং আটক ব্যক্তিদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। রাতেই তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যায়। এ ঘটনার পর শয়ন শীল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে অবরোধ ডাকা হয়। পরদিন থেকে তিন পার্বত্য জেলায় অবরোধের ডাক দেয় সংগঠনটি। অবরোধের মধ্যেই ২৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে স্থানীয় একটি পক্ষও সংঘর্ষে যোগ দেয়। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। তাঁরা তিনজনই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। সেনাবাহিনীর মেজরসহ আহত হন অন্তত ২০ জন। রামেসু বাজার এলাকায় আগুন দেওয়া হয় প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি ও ৪০টির মতো দোকানে। এ ঘটনার চার দিন পর গত বুধবার রাতে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনায় তিনটি মামলা করে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১ হাজার ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে গত মঙ্গলবার খাগড়াছড়ির ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দেয় মেডিকেল বোর্ড।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ম ম ছ ত র জনত র অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
এক্সপ্রেসওয়ে ও পদ্মা সেতুতে নিরাপত্তা জোরদার, যানবাহনের সংখ্যা কম
মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে পদ্মা সেতু ও ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে । এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল করলেও তার সংখ্যা কম।
শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, অনলাইনে ঘোষিত কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচির কারণে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার আশপাশে ও ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল থেকে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা টোল প্লাজার আশপাশের সড়ক ও এক্সপ্রেসওয়েতে টহল দেওয়া শুরু করেছেন। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীবাহী পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল করছে।
গতকাল রোববার রাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি শরীয়তপুরের পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এদিকে আজ সকাল থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিয়েছেন ছাত্রশিবির ও বিএনপির নেতা–কর্মীরা।
আজ সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার সামনে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, যানবাহন চলাচল করছে। ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলমুখী এবং দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকামুখী যানবাহন পদ্মা সেতু পারাপার হচ্ছে। তবে যাত্রীবাহী, পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা কম।
আরও পড়ুনপদ্মা সেতুর সামনে এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ, ট্রাকে আগুন, যানবাহন চলাচল বন্ধ১৩ নভেম্বর ২০২৫শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকে ঢাকার সঙ্গে শরীয়তপুরের যানবাহন চলাচল করছে। পথে কোথাও যানবাহন বাধার মুখে পড়েনি। তবে যাত্রীর উপস্থিতি কম। যানবাহনও কম চলাচল করছে।
জানতে চাইলে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করছে পদ্মা সেতু দিয়ে। যেহেতু একটি সংগঠনের ঘোষিত কর্মসূচি রয়েছে, তাই পদ্মা সেতু এর আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নিরাপত্তার জন্য টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আরও পড়ুনজুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায় আজ৫৭ মিনিট আগেপুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘গতকাল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ঢাকা যাওয়ার পথে যাত্রাবিরতি করেছিলেন। তখন আমাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। আজ সকাল পর্যন্ত শরীয়তপুরে পদ্মা সেতুর আশপাশে ও এক্সপ্রেসওয়েতে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। আমরা চেষ্টা করছি জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার।’