ক্লাব ক্যাটেগরি থেকে মনোনয়ন তুলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন তামিম। কাউন্সিলর হয়েছিলেন ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাব থেকে। কিন্তু নির্বাচনে নোংরামি হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে তামিম মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। সেদিনই বিকেলে দুবাই চলে যান তামিম। এরপর নির্বাচনের খুব একটা খোঁজ খবর রাখেননি।
তবে আজকের নির্বাচনে অংশ হতে ই-ব্যালটে ভোট দেয়ার আবেদন করেছিলেন। তার আবেদনও গ্রহণ করেছিল কমিশন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকেন তামিম। বেশ কিছু জায়গায় কথা ছড়িয়েছিল তামিম ভোট দিয়েছেন ই-ব্যালটে। কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি। ফেসবুকে এক পোস্টে তামিম লিখেছেন, ‘‘অনেক মিডিয়ায় ও নানা মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি যে, বলা হচ্ছে বিসিবি নির্বাচনে আমি ভোট দিয়েছি। তা মোটেও সত্যি নয়।’’
আরো পড়ুন:
বিসিবি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ
আ.
‘‘আমি ই-ভোট দেওয়ার আবেদন করেছিলাম আগে। কারণ, দেশের বাইরে ছিলাম। কিন্তু ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের কাউন্সিলর হিসেবে আমি নির্বাচনে অংশ নেইনি বা ভোট দেইনি।’’
দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড়, ধনী ক্রীড়া সংস্থার পরবর্তী চার বছরের নীতিনির্ধারক নির্বাচন হলো আজ। কিন্তু নাটকীয়তা ও বিতর্কের যেন শেষ নেই। অনিয়ম, অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি, রাতের আধারে ভোটসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
এইসব কারণ দেখিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে তামিমসহ ১৬ জন ও পরে নির্বাচনের আগের দুই দিনে আরও ৪ জন নির্বাচন বয়কট করেন। গতকাল দিবাগত রাতেও একজন পরিচালকপ্রার্থী সরে যান।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর তামিম বলেছেন, ‘‘আমিসহ প্রায় ১৪ থেকে ১৫ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। প্রত্যাহারের কারণটা খুবই স্পষ্ট। আমার কাছে মনে হয় না বিস্তারিতভাবে আপনাদের কিছু বলার দরকার আছে। নির্বাচন কোন দিকে যাচ্ছে, এই জিনিসটা এখন পরিষ্কার। যখন যেমন মনে হচ্ছে, যখন যা মনে হচ্ছে, তখন তা করা হচ্ছে। এটা আসলেই নির্বাচন নয়, ক্রিকেটের সঙ্গে এই জিনিসটা কোনো দিক থেকেই মানায় না।’’
‘‘যারা নাম প্রত্যাহার করেছেন, তারা সবাই হেভিওয়েট, তাদের ভোটব্যাংকও শক্তিশালী। এটা একটা প্রতিবাদ। দিন শেষে এই নোংরামির অংশ হয়ে আমরা থাকতে পারব না। বাংলাদেশ ক্রিকেট এটা ডিজার্ভ করে না। যারা এভাবে নির্বাচন করতে চান, তারা করতে পারেন। তবে আজ ক্রিকেট শতভাগ হেরে গেছে। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আপনারা বড় গলায় বলেন বাংলাদেশের ফিক্সিং বন্ধ করা লাগবে, আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করার চিন্তা করেন। এই নির্বাচন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটা কালো দাগ হয়ে থাকল।’’ - যোগ করেন তিনি।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘সমালোচনা মাথায়’ নিয়েই বিসিবি নির্বাচন আজ
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন আজ। দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড়, ধনী ক্রীড়া সংস্থার পরবর্তী চার বছরের নীতিনির্ধারক নির্বাচন হবে আজ। কিন্তু নাটকীয়তা ও বিতর্কের যেন শেষ নেই। অনিয়ম, অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি, রাতের আধারে ভোটসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
এইসব কারণ দেখিয়ে এরই মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে ১৬ জন ও পরে নির্বাচনের আগের দুই দিনে আরও ৪ জন নির্বাচন বয়কট করেছেন। গতকাল দিবাগত রাতেও একজন পরিচালকপ্রার্থী সরে গেছেন। যদিও প্রত্যাহারের শেষ দিনের পর যারা নির্বাচন বয়কট করেছেন সবার নাম থাকবে ব্যালটবক্সে।
তবুও ‘সমালোচনা মাথায়’ নিয়েই হবে নির্বাচন। বিসিবিতে এরই মধ্যে প্রার্থীরা নিজেদের ব্যানার, ফেস্টুন লাগিয়েছেন। নির্বাচনের ভাব জমে উঠেছে। নির্বাচনে মোট ভোটার ১৫৬ জন। সরাসরি ভোট দেবেন ৯৮ জন । ই-ব্যালটে ৫৮ জন।
তিনটি ক্যাটাগরিতে হবে নির্বাচন। ক্যাটাগরি-১ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার। যেখানে মোট ভোট ৩৫টি। ই-ব্যালট আছে ১৯ টি।
সাতটি বিভাগীয় ক্রিকেট সংস্থা থেকে ১০ জন পরিচালক নির্বাচিত হন। এই ক্যাটাগরিতে মোট ভোটার ৭১ জন। ক্যাটাগরি-১–এ ভোট হবে শুধু ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আহসান ইকবাল চৌধুরী ও আসিফ আকবর, খুলনা থেকে আবদুর রাজ্জাক ও জুলফিকার আলী খান, সিলেট থেকে রাহাত সামস্ ও বরিশাল থেকে শাখাওয়াত হোসেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন।
ঢাকা বিভাগে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীনের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা ছিল বিসিবির সাবেক পরিচালক এসএম আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ানের।কিন্তু রবিবার, নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন রেদোয়ান। ফলে ঢাকা বিভাগ থেকে আমিনুল ও ফাহিম নির্বাচন করে জিতে যাচ্ছেন খুব সহজে।
রাজশাহী বিভাগের একটি পরিচালক পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন তিনজন—হাসিবুল আলম, মুখলেসুর রহমান ও এস এম শামস মতিন। তাদের মধ্যে হাসিবুল আলম কাল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। রংপুর বিভাগ থেকেও তিনজন একটি পরিচালক পদের জন্য নির্বাচন করছেন—হাসানুজ্জামান, রেহাতুল ইসলাম, নূর এ শাহাদাৎ স্বপন।
ক্লাব ক্যাটাগরিতে মোট ভোট ৭৬টি। ই-ব্যালট ৩৪টি। ক্যাটাগরি-২–এ প্রার্থী ছিলেন ৩২ জন। এখন পরিচালক প্রার্থী আছেন মোট ১৭ জন। যদিও তিনজন সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এই ক্যাটাগরি থেকে পরিচালক হবেন ১২ জন।
প্রার্থীরা হলেন, মোহাম্মদ লুতফর রহমান (লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জ), ইসতিয়াক সাদেক (ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব), আদনান রহমান (দীপন) (রুপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব), ফায়াজুর রহমান (উত্তরা ক্রিকেট ক্লাব), আবুল বাশার (প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব), আমজাদ হোসেন (ঢাকা স্পারটান্স ক্রিকেট ক্লাব), শানিয়ান তানিম নাভিন (ঢাকা মেরিনার ইয়াংস ক্লাব), একেএম আহসানুর রহমান মল্লিক রনি (ইয়াং পেগাসাস ক্লাব), মোখলেছুর রহমান ভুঞা (ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব), এম নাজমুল ইসলাম ফারুক আহমেদ (ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেট একাডেমি), মেজর (অব:) ইমরোজ আহমেদ (কাঠালবাগান গ্রীণ ক্রিসেন্ট ক্লাব), রাকীব উদ্দিন (এইস ওয়ারিয়র্স), মনজুর আলম (রেগুলার স্পোর্টিং ক্লাব), মেহরাব চৌধুরী (যাত্রাবাড়ি ক্রীড়া চক্র) ও মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান ভুঞা (ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব)। গতকাল প্রার্থীতা ফেরত পাওয়ায় পরিচালক পদপ্রার্থী পরিচালক ইফতেখার আহমেদ মিঠু।
এই ১৭ জনের মধ্যে লুতফুর রহমান, মেজর ইমরোজ, ফয়জুর রহমান ভুঞা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তাদের নামও ব্যালটে থাকবে।
ক্যাটাগরি-৩ এ আছেন বিশেষ সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাবোর্ড, সার্ভিসেস দল। এখনে মোট ভোট ৪৫টি। ই-ব্যালট ৫টি। এই ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হন ১ জন পরিচালক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজউদ্দিন মো. আলমগীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় এই ক্যাটাগরিতে প্রার্থী আছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলর দেবব্রত পাল ও সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ।
বিসিবির পরিচালক হবেন মোট ২৫ জন। ২ জন সরাসরি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনিত হবেন। বাকি ২৩ জন পরিচালককে নির্বাচিত করবেন কাউন্সিলররা। পরিচালক নির্বাচনের পর পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হবে বিসিবি সভাপতি।
ঢাকা/ইয়াসিন