নিলামে ১০৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
Published: 6th, October 2025 GMT
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৮টি ব্যাংক থেকে আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) নিলামের মাধ্যমে ১০৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনায় বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (৬ অক্টোম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
পাচারের অর্থ উদ্ধারে ব্যাংকগুলোকে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির নির্দেশ
বিদেশে ৩ হাজার ডলার পাঠাতে পারবেন এসএমই উদ্যোক্তারা
তিনি জানান, বাজারে বর্তমানে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণেই রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে বাজার থেকেই ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে ১০৪ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। নিলামে ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত। এই দামেই ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রিজার্ভে যোগ হচ্ছে নিলামে কেনা ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে মোট ১ হাজার ৯৮১ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। এসব ডলার দেশের ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৮ দফায় ডলার কিনেছিল। এর মধ্যে গত ১৫ অক্টোবর ২৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। ২ সেপ্টেম্বর একই দরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ ব্যাংক থেকে ৪৭.
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, চাহিদা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমে গেছে। ডলারের দাম আরো কমে গেলে রপ্তানিকারকরা একদিকে সমস্যায় পড়বেন, অপরদিকে রেমিট্যান্স বৈধ পথে আসা কমে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়, যা খুবই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তাতে চাহিদা-যোগানের ভারসাম্য রক্ষা হবে এবং ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকবে।
গত ১৫ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহক নিজেরাই ডলারের দর নির্ধারণ করছে।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ জ্বালানি সরবরাহ
আগামী নির্বাচিত সরকারের সামনে জ্বালানি সরবরাহ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তাই এখন থেকেই এ খাতের নতুন বিনিয়োগ করা না হলে ২০৩১ সালে সরবরাহ সংকট দেখা দেবে। তাই এ খাতের ধারাবাহিক নীতি কাঠামোর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
আজ বুধবার গুলশানের একটি হোটেলে বিদ্যুৎ খাতের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে এক সেমিনারে এ কথাগুলো বলেন বক্তারা। ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ এই সেমিনারের আয়োজন করে। এতে এ খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্য দেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ইএমএ পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক আবু চৌধুরী। তিনি বলেন, ২০২৯ সালে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ৩৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে। তাই এখন থেকে নতুন বিনিয়োগ না করলে ২০৩১ সালে বিদ্যুৎ–সংকট দেখা দিতে পারে। বর্তমানে দেশের বিদ্যমান উৎপাদন সক্ষমতার ৪৮ শতাংশ আছে বেসরকারি খাতের হাতে। তাই নতুন নীতি তৈরিতে বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে হবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, আগামী সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে জ্বালানি সরবরাহ। শুধু সরকারি সংস্থা বাপেক্সের ওপর নির্ভরতায় গত ২০ বছরে সাফল্য আসেনি। তাই গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের আনা দরকার। এ নিয়ে এখন সিদ্ধান্ত না নিলে ২০৩১ সালে জ্বালানি সংকট তৈরি হবে।
চা–বাগানের ভূমি ব্যবহারের নীতি পরিবর্তন করা গেলে বাগান থেকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বলে মনে করছেন এমসিসিআইয়ের সভাপতি কামরান টি রহমান। তিনি বলেন, ১০ থেকে ১৫ বছরে রাস্তায় আমরা অনেক বৈদ্যুতিক গাড়ি দেখতে পাব। তখন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। তাই এ খাতে নীতি কাঠামো প্রয়োজন। বেসরকারি খাত বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বিনিয়োগের জন্য সামাজিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এটা সব দলের দায়িত্ব। নতুন বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান হবে না। এতে প্রতিবছর কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হওয়া ২৫ লাখ তরুণ কাজ পাবে না। ফলে কাজ না পেয়ে সমাজে অস্থিরতা তৈরি হবে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শুরা কাউন্সিলের সদস্য মোবারক হোসেনসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।