খুচরা বাজারে এক কেজি মসুর ডালের দাম এখন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। এই দাম ছোট দানার; অর্থাৎ সরু মসুর ডালের। গত দেড় মাস আগে বাজার থেকে এই ডাল কেনা যেত ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়; অর্থাৎ দেড় মাসের ব্যবধানে ছোট দানার মসুর ডালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। মসুর ডালের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে খুচরা বাজারে ছোলা ও অ্যাংকর ডালের দামও কিছুটা বেড়ে গেছে।

রাজধানীর একাধিক খুচরা বাজারের বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে সরু মসুর ডালের সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। মসুর ডালের বড় অংশই আমদানি করা হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মসুর ডালের আমদানি আগের তুলনায় কিছুটা কমে গেছে। অন্যদিকে বাজারে সবজি ও মাছ–মাংসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ডালের চাহিদাও বেড়েছে। এসব কারণে দামও বাড়তি।

বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০–১৯০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০–৩২০ টাকা ও এক ডজন ডিম ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ সবজির কেজি ৮০ টাকার আশপাশে। মাছের দামও আগের তুলনায় চড়া। এ কারণে সীমিত ও নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ ডাল খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়েছেন।

গতকাল সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার, কাঁঠালবাগান বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখেন প্রথম আলোর এই প্রতিবেদক। বাজার ঘুরে দেখা যায়, চারটি বাজারেই সরু দানার মসুর ডাল দেড় মাস আগের তুলনায় কেজিতে ২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর অন্যান্য ডালের দামেও কিছুটা তারতম্য রয়েছে।

অবশ্য মোটা দানার মসুর ডালের দাম বাড়েনি। বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। কিছু কিছু দোকানে অবশ্য ১০৫ টাকাতেও তা বিক্রি হতে দেখা গেছে। অন্যান্য ডালের মধ্যে খুচরা পর্যায়ে ছোলা ও অ্যাংকর ডালের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ছোলা ১১০ টাকা, ছোলার ডাল ১২০–১২৫ টাকা ও অ্যাংকর ডাল ৭০–৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি দোকান একতা জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা মো.

জুয়েল বলেন, পাইকারিতে শুধু মসুর ডালের দাম বেড়েছে। গত দেড় মাসে অন্যান্য ডালের দাম সামান্য ওঠানামা করলেও বর্তমানে তা আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মুদিদোকানের একজন বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাইকারিতে ছোলা ও অ্যাংকর ডালের দাম বাড়েনি। তবে মসুর ডালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে খুচরা বিক্রেতারা এসব ডালের দাম কিছুটা বাড়িয়ে বিক্রি করছেন।

বাজারে দাম কমেছে মুগ ডালের। দেড় মাস আগে ভালো মানের এক কেজি মুগ ডাল বিক্রি হয়েছে ১৭০–১৭৫ টাকায়। বর্তমানে তা ১৬০–১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; অর্থাৎ কেজিতে প্রায় ১০ টাকা দাম কমেছে। আর আমদানি করা সাধারণ মানের মুগ ডালের দাম আরও কিছুটা কম, কেজি ১২০ টাকা।

অবশ্য সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবে, গত এক মাসে সরু মসুর ও ছোলার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। অন্যান্য ডালের দাম অপরিবর্তিত আছে। তবে গত বছরের তুলনায় বর্তমানে সরু মসুর ডালের দাম ১৭ শতাংশ বেশি বলে উল্লেখ আছে টিসিবির তালিকায়। এক বছর আগে সরু মসুর ডালের কেজি ছিল ১৩০–১৩৫ টাকা।

বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও ডাল আমদানিকারক নেসার উদ্দিন খান বলেন, গত দুই মাসে ডাল আমদানির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে সবজির দাম বেশি থাকার কারণে মসুর ডালের চাহিদা বেড়েছে। ফলে সরবরাহের একটা ঘাটতি আছে বাজারে। এই ঘাটতির জায়গা থেকে দামটা বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে দাম আবার কমে আসতে পারে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন য ন য ড ল র কর ড ল আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

আগামী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ জ্বালানি সরবরাহ

আগামী নির্বাচিত সরকারের সামনে জ্বালানি সরবরাহ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তাই এখন থেকেই এ খাতের নতুন বিনিয়োগ করা না হলে ২০৩১ সালে সরবরাহ সংকট দেখা দেবে। তাই এ খাতের ধারাবাহিক নীতি কাঠামোর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

আজ বুধবার গুলশানের একটি হোটেলে বিদ্যুৎ খাতের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে এক সেমিনারে এ কথাগুলো বলেন বক্তারা। ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ এই সেমিনারের আয়োজন করে। এতে এ খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্য দেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ইএমএ পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক আবু চৌধুরী। তিনি বলেন, ২০২৯ সালে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ৩৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে। তাই এখন থেকে নতুন বিনিয়োগ না করলে ২০৩১ সালে বিদ্যুৎ–সংকট দেখা দিতে পারে। বর্তমানে দেশের বিদ্যমান উৎপাদন সক্ষমতার ৪৮ শতাংশ আছে বেসরকারি খাতের হাতে। তাই নতুন নীতি তৈরিতে বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে হবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, আগামী সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে জ্বালানি সরবরাহ। শুধু সরকারি সংস্থা বাপেক্সের ওপর নির্ভরতায় গত ২০ বছরে সাফল্য আসেনি। তাই গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের আনা দরকার। এ নিয়ে এখন সিদ্ধান্ত না নিলে ২০৩১ সালে জ্বালানি সংকট তৈরি হবে।

চা–বাগানের ভূমি ব্যবহারের নীতি পরিবর্তন করা গেলে বাগান থেকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বলে মনে করছেন এমসিসিআইয়ের সভাপতি কামরান টি রহমান। তিনি বলেন, ১০ থেকে ১৫ বছরে রাস্তায় আমরা অনেক বৈদ্যুতিক গাড়ি দেখতে পাব। তখন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। তাই এ খাতে নীতি কাঠামো প্রয়োজন। বেসরকারি খাত বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বিনিয়োগের জন্য সামাজিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এটা সব দলের দায়িত্ব। নতুন বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান হবে না। এতে প্রতিবছর কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হওয়া ২৫ লাখ তরুণ কাজ পাবে না। ফলে কাজ না পেয়ে সমাজে অস্থিরতা তৈরি হবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শুরা কাউন্সিলের সদস্য মোবারক হোসেনসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরে চাহিদার ৭৫ শতাংশের কম সার সরবরাহ, দুশ্চিন্তায় চাষিরা
  • ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
  • গ্রী গ্লোবাল বাংলাদেশের পার্টনারস মিট: কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে দিকনির্দেশনা
  • ঢাকার কম্পিউটার বাজারে প্রসেসর সরবরাহে ঘাটতি
  • আগামী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ জ্বালানি সরবরাহ