ঠাকুরগাঁওয়ে পাইকারি বাজারে গত কয়েকদিনের তুলনায় সবজির কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। তবে, কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে কাঁচা মরিচের দামে। গত তিন-চার দিনের ব্যবধানে মরিচের দাম কেজিতে কমেছে প্রায় ১২০ টাকা পর্যন্ত।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের কাঁচামালের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার গোবিন্দনগর আরত ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

আরো পড়ুন:

আল-মদিনা ফার্মার ১৩ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা

‘আর্থিক জালিয়াতি প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন’

সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, পাইকারি দরে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি প্রতি ৮০ টাকা দরে, তিনদিন আগে এই সবজির দাম ছিল ৫০ টাকা। বেগুনের দাম হয়েছে ৭০টাকা, যা আগে কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল ৫০ টাকা দরে। এছাড়া, ১৫ টাকা দাম বেড়ে টমেটো ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

কেজিতে ১৮ টাকা বেড়ে গাজর ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।  ২৮ টাকা কেজি দরের মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে। বিভিন্ন ধরনের শাকের আঁটি ২ থেকে ৩ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

স্বস্তির খবর এসেছে মরিচের বাজারে। কয়েকদিন আগেও যে কাঁচা মরিচ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল তা দাম কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে।

ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং সরবরাহ বাড়লে শিগগিরই সবজির দাম কমতে পারে বলে তারা আশাবাদী।

সোহেল রানা নামে এক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, “কয়েকদিনের বৃষ্টি ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে কৃষকেরা ঠিকভাবে সবজি তুলতে পারেননি। এ কারণেই বাজারে দাম বেড়েছে।”

 

রকি নামে অপর সবজি ব্যবসায়ী বলেন, “শীতের সবজি এখনো পুরোপুরি ওঠেনি। সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছে।”

নূর ইসলাম নামে সবজি বিক্রিতা বলেন, “কয়েকদিন আগেও ফুলকপি ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা। এখন সবজির দাম একটু বেশি, আগামী ৭-৮ দিনের মধ্যে দাম কমে আসবে বলে আশা করছি।”

চন্দন নামে খুচরা সবজি বিক্রিতা জানান, “নতুন মৌসুমের সবজি বাজারে আসছে ধীরে ধীরে। সরবরাহ বাড়লে দামও স্বাভাবিক হবে।”

আসাদুল ইসলাম বলেন, “এখনো চাহিদা বেশি, কিন্তু পণ্য কম। এই কারণে দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে।”

আরতদার সমিতির সভাপতি মো.

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “পূজার পর থেকেই কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এখন মরিচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি। সরবরাহ আরো বাড়লে দাম কমবে বলে আমরা আশা করছি।”

ঢাকা/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল সবজ র দ ম ১২০ ট ক সরবর হ দ ম কম ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

জন্মনিয়ন্ত্রণের সুখী বড়ির ফয়েল পেপার বেশি দামে কিনল এসেনসিয়াল

খুচরা বাজারে ভালো মানের এক পিস ফয়েল পেপার বিক্রি হয় ৯০ পয়সায়। কিন্তু এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) প্রতি পিস ফয়েল পেপার ২ টাকা ৫৭ পয়সায় কিনেছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জন্মনিয়ন্ত্রণের সুখী বড়ির প্যাকেট বানাতে মাত্রাতিরিক্ত দামে এই ফয়েল পেপার কিনেছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।

ইডিসিএল একটি শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। ইডিসিএলের মূল উদ্দেশ্য সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন ওষুধ তৈরি করা। সরকারি হাসপাতালসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে তা সরবরাহ করা।

আরও পড়ুন৪৭৭ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা দুদককে অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের১২ মার্চ ২০২৩

সুখী বড়ির প্যাকেট বানাতে ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপার ব্যবহার করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইডিসিএল দীর্ঘদিন ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপার কিনে এসেছে কেজি হিসেবে। কিন্তু ইডিসিএলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আ. সামাদ মৃধা দায়িত্বে আসার পর থেকে কেজির পরিবর্তে পিস হিসেবে তা কেনা হচ্ছে।

সুখী বড়ির প্যাকেট বানাতে ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপার ব্যবহার করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইডিসিএল দীর্ঘদিন ফয়েল পেপার ও শ্রিঙ্ক পেপার কিনে এসেছে কেজি হিসেবে। কিন্তু ইডিসিএলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আ. সামাদ মৃধা দায়িত্বে আসার পর থেকে কেজির পরিবর্তে পিস হিসেবে তা কেনা হচ্ছে।

নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে গত বছরের ২ অক্টোবর ইডিসিএলের এমডির পদ থেকে ইস্তফা দেন এহসানুল কবির। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সামাদ মৃধাকে ইডিসিএলের নতুন এমডি হিসেবে নিয়োগ দেয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সুখী বড়ির প্যাকেট তৈরির জন্য ১ কোটি ৭৮ লাখ পিস ফয়েল পেপার এবং ১৮ লাখ পিস শ্রিঙ্ক পেপার কিনতে গত জুলাইয়ে দরপত্রের বিজ্ঞাপন দেয় ইডিসিএল। ফয়েল পেপার সরবরাহের কাজ পায় এস এস ফ্লেক্সিপ্যাক লিমিটেড। আর শ্রিঙ্ক পেপার সরবরাহের কাজ পায় সুরাইয়া প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠান দুটির মালিক মোস্তাফিজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সুকানা কামাল। অভিযোগ আছে, তাঁদের প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ব্যবসার সুযোগ দিতে কেজির পরিবর্তে এসব পণ্য পিস হিসেবে কেনা হয়েছে। এমডি হিসেবে সামাদ মৃধার যোগদানের পর এ দুই প্রতিষ্ঠান ইডিসিএলের অধিকাংশ কেনাকাটার কাজ পাচ্ছে।

নথি অনুযায়ী, প্রতি পিস ফয়েল পেপার ২ টাকা ৫৭ পয়সায় কিনেছে ইডিসিএল। আর প্রতি পিস শ্রিঙ্ক পেপার কিনেছে ৪ টাকা ৪৫ পয়সায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আগে এক কেজি ফয়েল পেপার কেনা হতো ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে। আর এখন তা পিস হিসেবে কেনা হচ্ছে। পিস থেকে কেজিতে রূপান্তর করলে প্রতি কেজি ফয়েল পেপারের দাম পড়ছে প্রায় দুই হাজার টাকা।

অন্যান্য কোম্পানির থেকে তাঁদের কেনা ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপার উন্নত মানের। তাই বাজারের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে এগুলো কেনা হয়েছে। এতে পিস অথবা কেজি মুখ্য বিষয় নয়।মো. আ. সামাদ মৃধা, ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)

বেশি দামে কেনাকাটার বিষয়ে জানতে চাইলে ইডিসিএলের এমডি সামাদ মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, অন্যান্য কোম্পানির থেকে তাঁদের কেনা ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপার উন্নত মানের। তাই বাজারের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে এগুলো কেনা হয়েছে। এতে পিস অথবা কেজি মুখ্য বিষয় নয়। কেজিতে হিসাব করলে তাঁদের কেনা ফয়েল পেপারের দাম ১ হাজার ৫০০ টাকার বেশি হবে। আর প্যাকেটের ওজন বেশি হওয়ায় প্রতি কেজিতে ৬০০ পিসের মতো হবে।

আরও পড়ুনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এসেনসিয়াল ড্রাগসে ৩ হাজারের বেশি বাড়তি লোক ০৫ অক্টোবর ২০২৪নথি অনুযায়ী, প্রতি পিস ফয়েল পেপার ২ টাকা ৫৭ পয়সায় কিনেছে ইডিসিএল। আর প্রতি পিস শ্রিঙ্ক পেপার কিনেছে ৪ টাকা ৪৫ পয়সায়।

পুরান ঢাকার ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপারের একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁদের একজন মো. ফারুক হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিন স্তরের ভালো মানের এক পিস ফয়েল পেপারের মূল্য সর্বোচ্চ ৯০ পয়সা। আর এক পিস শ্রিঙ্ক পেপার বিক্রি হয় ১ টাকা ২০ পয়সায়। বেশি পরিমাণ কিনলে দাম আরও কম হয়।

আরও পড়ুনসরানো হচ্ছে এসেনসিয়াল ড্রাগসের তেজগাঁও কারখানা২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১আরও পড়ুনযাঁরা অনিয়ম ধরবেন, তাঁদের স্বজনেরাই পান চাকরি০৮ জুন ২০২১আরও পড়ুনকোম্পানি কি এমপি ইলেকশন করবে যে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে?০২ আগস্ট ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মসুর ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা
  • নিলামে ১০৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
  • ডেঙ্গু প্রতিরোধে ফগার মেশিন সরবরাহ, প্রশংসায় ভাসছেন শিল্পপতি বাবুল
  • সার কারখানার জন্য গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব
  • জন্মনিয়ন্ত্রণের সুখী বড়ির ফয়েল পেপার বেশি দামে কিনল এসেনসিয়াল