সুন্দরবনের নদীতে মাছের আশায় বড়শি ফেলেন অনেকে
Published: 30th, October 2025 GMT
খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সুন্দরবনঘেঁষা কয়রা নদীর তীরে তখন সুন্দর সকাল। নদীর ওপারে ঘন সবুজে মোড়া বন, এই পারে শান্ত এক গ্রাম। নরম রোদে নদীর কলকল স্রোত যেন মিলেমিশে গেছে পাখির কূজন আর বাতাসের মৃদু ছোঁয়ায়। তীরের ধারে গামছা পেতে বসে আছেন কয়রার বগা গ্রামের মনজিত মণ্ডল। হাতে ছিপ, তাতে চিংড়ি গেঁথে নদীর বুকে ছুড়ে দিলেন বড়শি।
গত মঙ্গলবার সকালে মনজিত হেসে বললেন, ‘এই তো একটু আগে এলাম, এখনো কিছু পাইনি।’ জানালেন, আগের দিন বেশ ভালোই পেয়েছিলেন—কইফুল, কাইন, দাতিনা ও গাগড়া ট্যাংরা। সেই আনন্দে আবার চার কিলোমিটার দূর থেকে চলে এসেছেন।
৬২ বছরের মনজিত মণ্ডল হাতে থাকা বড়শির সুতো দেখিয়ে বললেন, এটাকে বলে প্যারাসুট সুতো। এত মজবুত যে চাইলে একটা মহিষও বাঁধা যাবে। এক কয়েল সুতোর দাম ৪০০ টাকা। ছিপের দাম ১৫০০ আর হুইল মেশিন ১২০০ টাকা। এখন ডিজিটাল যুগ, দামি ছিপ ছাড়া মাছ পড়তে চায় না।
সুন্দরবনের নদীতে আগের চেয়ে মাছ কমে গেছে—কথাটা বলতে গিয়ে মনজিত মণ্ডলের কণ্ঠে ভেসে উঠল আক্ষেপ। বললেন, আগে নদীতে অনেক মাছ পড়ত। এখন ঘন ফাঁসের জাল আর বিষের কারণে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে।
মনজিত মণ্ডলের সঙ্গে গল্প শেষে যাওয়া হলো সুন্দরবনের শাকবাড়িয়া নদী তীরবর্তী হরিহরপুর গ্রামে। সেখানেও দেখা মিলল কয়েকজন ছিপ হাতে বসে আছেন মাছের অপেক্ষায়। বামিয়া গ্রাম থেকে আসা আবদুস সাত্তার সানা বললেন, ‘সকাল থেইকে বড়শিতে দুইটা মাছ ধরার পর আবার ছাড়িয়ে গেছে। কি করব গরিব মানুষ, আমার কাছে তো দামি ছিপ নেই, তাই মাছ তুলতিও কষ্ট হয়। মেশিন লাগানো ছিপি মাছ ধরা সহজ।’
পাশেই গাছের আড়ালে বসেছিলেন একই গ্রামের সুকুমার বিশ্বাস। ভোরে দুজনে একসঙ্গে এসেছেন। বললেন, ‘আজ মাছের ভাবসাব ভালো না। দুইটা দাতিনা আর চারটা পান পাতা মাছ পেয়েছি।’
শাকবাড়িয়া নদীর তীরে দাঁড়িয়ে হরিহরপুর গ্রামের তৃপ্তিরানী স্মৃতিচারণা করে বললেন, ছেলেবেলায় স্কুল ফাঁকি দিয়ে বড়শি নিয়ে মাছ ধরতে যেতেন। তারপর সেই মাছে বনভোজন হতো।
কৃষক মনজিত মণ্ডল, দিনমজুর সাত্তার সানা কিংবা গৃহিণী তৃপ্তিরানী—সবার কথায় এক সুর। বড়শি দিয়ে মাছ ধরা একধরনের নেশা, আনন্দ। সুন্দরবনের নদ–নদীতে মাছ কমে গেছে, নদীতে চলছে বিষ আর ঘন জালের দাপট। তবু সুন্দরবনের পাশের নদীগুলোতে মানুষ ছিপ হাতে মাছের আশায় বসে থাকেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দরবন র বলল ন
এছাড়াও পড়ুন:
অনুচ্ছেদে বিরামচিহ্ন বসাও
বাংলা: অনুচ্ছেদে বিরামচিহ্ন প্রয়োগ
বাংলা বিষয়ের ১১ নম্বর প্রশ্নটি থাকবে ‘বিরামচিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি পুনরায় লেখো’। পাঠ্যবইয়ের নির্বাচিত বিরামচিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি লেখে দেওয়া হলো।
১.
প্রশ্ন: বাংলাদেশের প্রকৃতি জনজীবন তাই ভারি বৈচিত্র্যময় এই দেশকে তাই ঘুরে ঘুরে দেখা দরকার কোথায় পাহাড় কোথায় নদী কোথায় বা এর সমুদ্রের বেলাভূমি
উত্তর: বাংলাদেশের প্রকৃতি ও জনজীবন তাই ভারি বৈচিত্র্যময়। এই দেশকে তাই ঘুরে ঘুরে দেখা দরকার। কোথায় পাহাড়, কোথায় নদী, কোথায়–বা এর সমুদ্রের বেলাভূমি।
২.
প্রশ্ন: ভাবো তো কৃষকের কথা তারা কাজ না করলে আমাদের খাদ্য জোগাত কে সবাইকে তাই আমাদের শ্রদ্ধা করতে হবে ভালোবাসতে হবে সবাই আমাদের আপনজন
উত্তর: ভাবো তো কৃষকের কথা। তারা কাজ না করলে আমাদের খাদ্য জোগাত কে? সবাইকে তাই আমাদের শ্রদ্ধা করতে হবে, ভালোবাসতে হবে। সবাই আমাদের আপনজন।
৩.
প্রশ্ন: একই দেশ অথচ কত বৈচিত্র্য এটাই বাংলাদেশের গৌরব সবাই সবার বন্ধু আপনজন এ দেশে রয়েছে নানা ধর্মের লোক
উত্তর: একই দেশ, অথচ কত বৈচিত্র্য। এটাই বাংলাদেশের গৌরব। সবাই সবার বন্ধু, আপনজন। এ দেশে রয়েছে নানা ধর্মের লোক।
৪.
প্রশ্ন: বাংলাদেশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা রাজকীয় বাঘের নাম এই বাঘ থাকে সুন্দরবনে এ বাঘ দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি আবার ভয়ংকর এর চালচলনও রাজার মতো
উত্তর: বাংলাদেশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা রাজকীয় বাঘের নাম। এই বাঘ থাকে সুন্দরবনে। এ বাঘ দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি আবার ভয়ংকর। এর চালচলনও রাজার মতো।
৫.
প্রশ্ন: একসময় সুন্দরবনে ছিল চিতা বাঘ ও ওল বাঘ কিন্তু এখন আর এসব বাঘ দেখা যায় না সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ এ বাঘকে বিলুপ্তির হাত থেকে আমাদের বাঁচাতে হবে সুন্দরবনে বাঘ ছাড়াও আছে নানা রকমের হরিণ
উত্তর: একসময় সুন্দরবনে ছিল চিতা বাঘ ও ওল বাঘ। কিন্তু এখন আর এসব বাঘ দেখা যায় না। সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ। এ বাঘকে বিলুপ্তির হাত থেকে আমাদের বাঁচাতে হবে।
বৃক্ষলতা সবকিছুই প্রকৃতির দান। তাকে ধ্বংস করতে নেই। ধ্বংস করলে নেমে আসে নানা বিপর্যয়—বন্যা, খরা, ঝড় ইত্যাদি।
৬.
প্রশ্ন: হাতি ভাবল পুঁচকে শিয়াল যদি নদী পার হতে পারে আমি পারব না কেন সেও নদীতে নেমে পড়ল কিন্তু মস্ত বড় তার শরীর আর কী ভারী
উত্তর: হাতি ভাবল, পুঁচকে শিয়াল যদি নদী পার হতে পারে, আমি পারব না কেন? সে–ও নদীতে নেমে পড়ল। কিন্তু মস্ত বড় তার শরীর আর কী ভারী!
৭.
প্রশ্ন: হাতিটি নদীর পানিতে পা দিল অমনি তার ভারী শরীর একটু একটু করে তলিয়ে যেতে থাকল তলিয়ে যেতে যেতে হাতি বলল শিয়াল ভায়া আমাকে বাঁচাও
উত্তর: হাতিটি নদীর পানিতে পা দিল। অমনি তার ভারী শরীর একটু একটু করে তলিয়ে যেতে থাকল। তলিয়ে যেতে যেতে হাতি বলল, শিয়াল ভায়া, আমাকে বাঁচাও।
৮.
প্রশ্ন: মামা বললেন এটা শখের হাঁড়ি শখ করে পছন্দের জিনিস এই সুন্দর হাঁড়িতে রাখা হয় তাই এর নাম শখের হাঁড়ি তা ছাড়া শখের যেকোনো জিনিসই তো সুন্দর
উত্তর: মামা বললেন, এটা শখের হাঁড়ি। শখ করে পছন্দের জিনিস এই সুন্দর হাঁড়িতে রাখা হয়। তাই এর নাম শখের হাঁড়ি। তা ছাড়া শখের যেকোনো জিনিসই তো সুন্দর।
৯.
প্রশ্ন: মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে আমরা বলি মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প এ শিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি তবে সব মাটি দিয়ে এ কাজ হয় না দরকার পরিষ্কার এঁটেল মাটি এ ধরনের মাটি বেশ আঠালো
উত্তর: মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে আমরা বলি মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প। এ শিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি। তবে সব মাটি দিয়ে এ কাজ হয় না। দরকার পরিষ্কার এঁটেল মাটি। এ ধরনের মাটি বেশ আঠালো।
১০.
প্রশ্ন: মামা বললেন হাঁড়ি কলসি ছাড়াও আমাদের দেশে একসময় সুন্দর পোড়ামাটির ফলকের কাজ হতো এর অন্য নাম
টেরাকোটা বাংলার অনেক পুরোনো শিল্প এই টেরাকোটা নকশা করা মাটির ফলক ইটের মতো পুড়িয়ে তৈরি করা হতো এই টেরাকোটা
উত্তর: মামা বললেন, হাঁড়ি–কলসি ছাড়াও আমাদের দেশে একসময় সুন্দর পোড়ামাটির ফলকের কাজ হতো। এর অন্য নাম টেরাকোটা। বাংলার অনেক পুরোনো শিল্প এই টেরাকোটা। নকশা করা মাটির ফলক ইটের মতো পুড়িয়ে তৈরি করা হতো এই টেরাকোটা।
১১.
প্রশ্ন: আমরা দুটি শখের হাঁড়ি কিনলাম অবাক হলাম পুতুলের পাশেই ঘোলা চোখে চেয়ে আছে এক চকচকে রুপালি ইলিশ পদ্মার তাজা ইলিশের মতোই তেমনি সাদা আঁশ লাল ঠোঁট
উত্তর: আমরা দুটি শখের হাঁড়ি কিনলাম। অবাক হলাম, পুতুলের পাশেই ঘোলা চোখে চেয়ে আছে এক চকচকে রুপালি ইলিশ। পদ্মার তাজা ইলিশের মতোই। তেমনি সাদা আঁশ, লাল ঠোঁট।
১২.
প্রশ্ন: আজকাল কি পোড়ামাটির এই শিল্পচর্চা হয় না মামার কাছে জানতে চাইলাম আমরা মামা বললেন আজকাল ও রকম টেরাকোটা হচ্ছে না বটে তবে পোড়ামাটির নকশার কদর বেড়েছে
উত্তর: আজকাল কি পোড়ামাটির এই শিল্পচর্চা হয় না? মামার কাছে জানতে চাইলাম আমরা। মামা বললেন, আজকাল ও রকম টেরাকোটা হচ্ছে না বটে, তবে পোড়ামাটির নকশার কদর বেড়েছে।
১৩.
প্রশ্ন: উয়ারী বটেশ্বর পাশাপাশি দুটি গ্রাম এই দুই গ্রামে প্রায়ই বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান পাওয়া যেত ১৯৩৩ সালে উয়ারী গ্রামে শ্রমিকেরা মাটি খনন করার সময় একটা পাত্রে জমানো কিছু মুদ্রা পান স্থানীয় স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ হানিফ পাঠান সেখান থেকে ২০-৩০টি মুদ্রা সংগ্রহ করেন এগুলো ছিল বঙ্গদেশের এবং ভারতের প্রাচীনতম রৌপ্যমুদ্রা
উত্তর: উয়ারী ও বটেশ্বর পাশাপাশি দুটি গ্রাম। এই দুই গ্রামে প্রায়ই বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান পাওয়া যেত। ১৯৩৩ সালে উয়ারী গ্রামে শ্রমিকেরা মাটি খনন করার সময় একটা পাত্রে জমানো কিছু মুদ্রা পান। স্থানীয় স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ হানিফ পাঠান সেখান থেকে ২০-৩০টি মুদ্রা সংগ্রহ করেন। এগুলো ছিল বঙ্গদেশের এবং ভারতের প্রাচীনতম রৌপ্যমুদ্রা।
১৪.
প্রশ্ন: বিশ্ব ভূমণ্ডল বড়ই বিচিত্র কত অসম্ভব ব্যাপারই যে ঘটে পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ জলপ্রপাত বলা হয় নায়াগ্রাকে এই জলপ্রপাত পাহাড় থেকে নামেনি সমতলের ওপর দিয়ে একটি খরস্রোতা নদী বইছে
উত্তর: বিশ্ব-ভূমণ্ডল বড়ই বিচিত্র! কত অসম্ভব ব্যাপারই যে ঘটে! পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ জলপ্রপাত বলা হয় নায়াগ্রাকে। এই জলপ্রপাত পাহাড় থেকে নামেনি। সমতলের ওপর দিয়ে একটি খরস্রোতা নদী বইছে।
১৫.
প্রশ্ন: নায়াগ্রা হলো জলপ্রপাত জলপ্রপাত তো কখনো দেখিনি শুধু জেনে এসেছি ঝরনার মতো পাহাড়ের ওপর থেকে পানি নিচে সমতল ভূমিতে গড়িয়ে পড়ে তবে আকারে অনেক বিশাল
উত্তর: নায়াগ্রা হলো জলপ্রপাত। জলপ্রপাত তো কখনো দেখিনি। শুধু জেনে এসেছি, ঝরনার মতো পাহাড়ের ওপর থেকে পানি নিচে সমতল ভূমিতে গড়িয়ে পড়ে, তবে আকারে অনেক বিশাল।
১৬.
প্রশ্ন: মা ওঠো শোনো কেউ এসেছে রাহেলা বানু দরজায় টুকটুক শব্দ শোনে দরজার কাছে গেলে আবার শুনতে পায় সে ডাক মা দরজা খোলো
উত্তর: মা ওঠো। শোনো, কেউ এসেছে। রাহেলা বানু দরজায় টুকটুক শব্দ শোনে। দরজার কাছে গেলে আবার শুনতে পায় সে ডাক, মা দরজা খোলো।
খন্দকার আতিক, িশক্ষক
উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা