নিহত কালামের ২ সন্তানের পড়ালেখার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিলেন বিএনপি নেতা
Published: 29th, October 2025 GMT
মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে মারা যাওয়া আবুল কালামের দুই শিশুসন্তানের পড়ালেখার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সফিকুর রহমান। আজ বুধবার বিকেলে জেলার নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামে আবুল কালামের স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি এ ঘোষণা দেন। পাশাপাশি আবুল কালামের স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
গত রোববার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে আবুল কালাম নিহত হন। তিনি নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামের প্রয়াত জলিল চোকদার ও হনুফা বেগম দম্পতির ছেলে। আবুল কালামের আবদুল্লাহ (৫) ও পারিসা (৩) নামের দুটি সন্তান আছে।
আজ বিকেলে ঈশ্বরকাঠি গ্রামে আবুল কালামের বাড়িতে যান জেলা বিএনপির সভাপতি সফিকুর রহমান। তিনি কালামের পরিবারের সদস্য, স্বজন ও গ্রামের মুরব্বিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। এ সময় নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদসহ স্থানীয় বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সফিকুর রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কালামের স্ত্রীকে চাকরি দেওয়া হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরিবারটির প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুননিহত কালামের দাফন, ‘দুই সন্তান নিয়ে কোথায় দাঁড়াব’—স্ত্রীর প্রশ্ন২৭ অক্টোবর ২০২৫ঈশ্বরকাটি গ্রামের বাসিন্দারা জানান, চার ভাই ও ছয় বোনের পরিবারে আবুল কালাম ভাইদের মধ্যে সবার ছোট। ২০ বছর আগে বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর বড় ভাই ও বোনদের সংসারে থাকতেন। সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে ২০১২ সালে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে ২০১৮ সালে পাশের গ্রামের আইরিন আক্তারকে বিয়ে করেন। স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় বসবাস করতেন। ঢাকার মতিঝিলের একটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কাজ করতেন।
আরও পড়ুনশৈশবে বাবা-মা হারানো আবুল কালামের এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না স্বজনেরা২৬ অক্টোবর ২০২৫আবুল কালামের ভাই খোকন চোকদার প্রথম আলোকে বলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি তাঁদের পড়ালেখার খরচ চালানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন।
আরও পড়ুনবিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে ফার্মগেটে একজন নিহত, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ২৬ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স পর ব র সন ত ন রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
বাবার কবরে শায়িত বিজ্ঞানী ও লেখক রেজাউর রহমান
বাবার কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ড. রেজাউর রহমান। গতকাল বুধবার তাঁকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদ কমপ্লেক্স কবরস্থানে বাবা ফজলুর রহমানের কবরে দাফন করা হয়। এর আগে বাদ আসর এই মসজিদে মরহুমের তৃতীয় জানাজা হয়।
ধানমন্ডির ১২/এ সড়কের তাকওয়া মসজিদে বাদ জোহর রেজাউর রহমানের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এখানে মসজিদের মুসল্লিরা ছাড়াও মরহুমের আত্মীয়, সুহৃদ, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ী, স্কুল–কলেজের সতীর্থদের অনেকে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ পরে দাফনেও অংশ নিয়েছেন। জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, শিল্পী রফিকুন নবী, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, শিল্পী আবুল বার্ক্ আলভী, মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক, প্রাণিবিজ্ঞানী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, এথিকস অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান, লেখক আনিসুল হকসহ কবি, শিল্পী, চিকিৎসকদের অনেকে।
প্রথম জানাজার পরে শেষবারের মতো রেজাউর রহমানের মরদেহ তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে আনা হয়। এখানে পরিবারের সদস্য, বিশেষত নারী আত্মীয়স্বজনসহ অনেকে শেষবারের মতো তাঁকে দেখতে আসেন। বাসভবন ছেড়ে যাওয়ার আগে এখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেশী ও স্বজনেরা জানাজায় অংশ নেন। এরপর দাফনের জন্য মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদে আনা হয়।
রেজাউর রহমান ৮১ বছর বয়সে ২৬ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
আরও পড়ুনরেজাউর রহমানের চলে যাওয়া শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়…২৭ অক্টোবর ২০২৫ব্যক্তিগত জীবনে বিনয়ী ও সদাচারী ছিলেন রেজাউর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৬৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। পরে ১৯৭৯ সালে চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস-প্রাগ থেকে কীটতত্ত্বে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর কাজ করেছেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে। পেশাগত জীবনে কীটপতঙ্গ নিয়ে দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন তিনি।
পেশাগতভাবে বিজ্ঞানী হলেও লেখক
হিসেবে রেজাউর রহমান বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দেশের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন বিশিষ্ট স্থানে। বিজ্ঞানে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সাহিত্যচর্চা ও বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি দেশের বিজ্ঞানচর্চার বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন রেজাউর রহমান।
আরও পড়ুনগ্রহান্তরে ভালো থাকবেন ড. রেজাউর রহমান২৮ অক্টোবর ২০২৫