নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) পরিচালিত ১ বছরে (নভেম্বর ২০২৩-অক্টোবর ২০২৪) মোট ১৩১টি প্রজাতির বন্যপ্রাণী শনাক্ত করেছে একদল গবেষক।

গবেষণাটি পরিচালনা করেন, নোবিপ্রবির ফুড টেকনোলজি ও নিউট্রিশন সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানভীর আকিক ইবনে আলম, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হুমায়রা মাহমুদ, প্রভাষক নাসরিন আক্তার বৃষ্টি, শিক্ষার্থী মায়মুনা সালসাবিল মিশমা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী গবেষণা ল্যাবের ড.

মো. ফজলে রব্বে।

আরো পড়ুন:

দেশে চিকেন এনিমিয়া ভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্ত

মরদেহ শনাক্ত হলেই দ্রুত পরিবারের কাছে হস্তান্তর: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি বাংলাদেশ জার্নাল অব জুওলজির ৫৩তম খণ্ডের প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসকে একটি গুরুত্বপূর্ণ জীববৈচিত্র্যের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

জীববৈচিত্র্য অনুসন্ধানে গবেষক দলটি সরাসরি লাইন ট্রানসেক্ট ও প্লট কাউন্টিং পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করেন। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমেও তথ্য সংগ্রহ করেন তারা।

গবেষণা অনুযায়ী, জরিপে গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শীত, তিন মৌসুমের বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। শনাক্ত হওয়া প্রজাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে পাঁচটি উভয়চর, ১৬টি সরীসৃপ, ৯৭টি পাখি এবং ১৩টি স্তন্যপায়ী প্রাণী। এর মধ্যে সর্বাধিক প্রজাতি পাওয়া গেছে পাখিদের মধ্যে। মৌসুম হিসেবে শীতকালে সর্বাধিক ১০২টি প্রজাতি রেকর্ড করা হয়।

গবেষণায় জানা গেছে, নোবিপ্রবিতে বেশকিছু তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায় বা দুর্লভ প্রজাতি পাওয়া গেছে, যা গবেষণাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- একচোখো গোখরা (মনোসেলেট কোবরা), দু’চোখো গোখরা (বিনোসেলেট কোবরা), চিতা চিত্রা কচ্ছপ (স্পটেড ফ্লাপশেল টারটেল), ছোট তুলা হাঁস (কটন পিগমি গোজ), ছোট বালুচর চ্যাংড়া (লেসার স্যান্ড প্লোভার), বন চ্যাংড়া (উড স্যান্ড পিপার), গালঠোঁট টার্ন (গাল-বিল্ড টার্ন), বেগুনি বক (পার্পল হেরন), মেছো বাঘ (ফিশিং ক্যাট), সোনালী শিয়াল (এশিয়াটিক জ্যাকল), রেশাস বানর (ইন্ডিয়ান রেশাস ম্যাকাকু), চূড়াধার সজারু (ইন্ডিয়ান ক্রেস্টেড পর্কুপিন)।

এই প্রজাতিগুলো সাধারণত বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে বিরল হলেও নোবিপ্রবিতে তাদের উপস্থিতি ক্যাম্পাসের অনন্য পরিবেশগত বৈচিত্র্যকে ইঙ্গিত করে।

গবেষণায় দেখা যায়, বিভিন্ন শ্রেণীর প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে এশিয়ান কমন টোড (উভচর), ওরিয়েন্টাল গার্ডেন লিজার্ড (সরীসৃপ), হাউজ স্পারো (পাখি) এবং গোল্ডেন জ্যাকল (স্তন্যপায়ী)।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থার (আইইউসিএন) ২০২১ সালের তালিকা অনুযায়ী বিপন্ন ও হুমকির মুখে থাকা তিনটি বন্যপ্রাণী প্রজাতিও শনাক্ত করেছেন গবেষকদল। প্রজাতিগুলো হলো- বিপন্নপ্রায় ইন্ডিয়ান আইড টারটল, ইন্ডিয়ান রুফড টারটল ও হুমকির মুখে থাকা গ্রে-হেডেড ফিশ ইগল।

বৈচিত্র্যের সূচক অনুসারে, পাখিদের শ্যানন-উইনার ইনডেক্স (এইচ=৩.৩৯) এবং সিম্পসন ইনডেক্স (ডিএস=০.৯৫) সর্বোচ্চ পাওয়া গেছে। উভচরদের মধ্যে সর্বাধিক ইভেননেস (ই=০.৬০) রেকর্ড করা হয়েছে। সূচকগুলো থেকে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে উচ্চ জীববৈচিত্র্য বিদ্যমান, তা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়।

ঋতুভিত্তিক প্রাচুর্যের ধরণে দেখা গেছে, সর্বাধিক প্রজাতি বৈচিত্র্য শীতকালে (১০২টি প্রজাতি) পাওয়া গেছে, এরপর গ্রীষ্মকালে (১০০টি) এবং বর্ষাকালে (৮২টি)। তিন ঋতুতেই ৬০টি প্রজাতি পাওয়া গেছে, যা নির্দেশ করে অনেক প্রজাতি মৌসুমি পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম।

গ্রীষ্মে (১৮টি) ও শীতে (১৭টি) অনন্য প্রজাতির সংখ্যা বেশি পাওয়া গেছে। উভচর প্রাণীর প্রজাতি বৈচিত্র্য বর্ষাকালে সর্বাধিক ছিল, যা তাদের প্রজনন মৌসুমের সঙ্গে সম্পর্কিত; সরীসৃপদের সক্রিয়তা গ্রীষ্মে বেশি এবং পরিযায়ী পাখির আগমনে শীতে প্রাণবৈচিত্র্য সর্বাধিক ছিল।

গবেষণাক মায়মুনা সালসাবিল মিশমা বলেন, “ছোটবেলা থেকেই প্রাণীপ্রেমী আমি। ভাবতাম, আমাদের ক্যাম্পাসেও যে সুন্দর জীববৈচিত্র্য আছে, সে গল্প সবার জানা উচিত। সেই ভাবনা থেকেই এই গবেষণা শুরু করি। ইচ্ছা ছিল, কেউ নোবিপ্রবির প্রাণবৈচিত্র্য সম্পর্কে জানতে চাইলে আমার কাজের মাধ্যমেই জানুক। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমার গবেষণার সুপারভাইজার নাসরিন আক্তার বৃষ্টি ম্যাম এই পুরো যাত্রায় ছিলেন পথপ্রদর্শক। হতাশার মুহূর্তে তিনি অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, গবেষণার প্রতিটি ধাপে সহায়তা করেছেন। ফিল্ডওয়ার্কে তানভীর আকিক স্যার ছিলেন বড় সহায়। ফুড টেকনোলজি বিভাগের হয়েও তার প্রকৃতি ও পাখির প্রতি ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে।”

তিনি আরো বলেন, “ক্যাম্পাসের প্রাণীদের টিকিয়ে রাখতে পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা জরুরি। আবাসস্থল ধ্বংস ও মানুষের সঙ্গে সংঘাত এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে পরিবেশ রক্ষায় প্রশংসনীয় কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এই গবেষণাটি ছিল প্রাথমিক ধাপ; ভবিষ্যতে আরো বিস্তৃত গবেষণা দরকার, যাতে প্রাণীগুলোর সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়।”

গবেষণার সুপারভাইজার নাসরিন আক্তার বৃষ্টি বলেন, “আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করি, তখন জীববৈচিত্র্য আরো বেশি ছিল। কিন্তু অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল নষ্ট হচ্ছে। আমাদের উন্নয়ন করতে হবে, কিন্তু জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও সচেষ্ট থাকতে হবে। মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সহাবস্থানের মাধ্যমেই আামাদের পরিবেশ সুন্দর থাকবে।”

গবেষণাটি নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসের মেরুদণ্ডী প্রাণীদের একটি প্রাথমিক ধারণা দিয়েছে, যা বিভিন্ন ধরনের আবাসস্থল প্রাণিবৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা তুলে ধরেছে। তবে উন্নয়নমূলক কাজ, আবাসস্থল ধ্বংস এবং মানুষের চাপ এখনো জীববৈচিত্র্যের জন্য বড় হুমকি। গবেষকদল মনে করেন, সচেতনতা ও পরিকল্পিত সংরক্ষণই পারে নোবিপ্রবির জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করতে।

ঢাকা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শন ক ত জ বব চ ত র য ইন ড য় ন ন ব প রব

এছাড়াও পড়ুন:

নোবিপ্রবিতে ১৩১ প্রজাতি বন্যপ্রাণী শনাক্ত

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) পরিচালিত ১ বছরে (নভেম্বর ২০২৩-অক্টোবর ২০২৪) মোট ১৩১টি প্রজাতির বন্যপ্রাণী শনাক্ত করেছে একদল গবেষক।

গবেষণাটি পরিচালনা করেন, নোবিপ্রবির ফুড টেকনোলজি ও নিউট্রিশন সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানভীর আকিক ইবনে আলম, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হুমায়রা মাহমুদ, প্রভাষক নাসরিন আক্তার বৃষ্টি, শিক্ষার্থী মায়মুনা সালসাবিল মিশমা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী গবেষণা ল্যাবের ড. মো. ফজলে রব্বে।

আরো পড়ুন:

দেশে চিকেন এনিমিয়া ভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্ত

মরদেহ শনাক্ত হলেই দ্রুত পরিবারের কাছে হস্তান্তর: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি বাংলাদেশ জার্নাল অব জুওলজির ৫৩তম খণ্ডের প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসকে একটি গুরুত্বপূর্ণ জীববৈচিত্র্যের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

জীববৈচিত্র্য অনুসন্ধানে গবেষক দলটি সরাসরি লাইন ট্রানসেক্ট ও প্লট কাউন্টিং পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করেন। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমেও তথ্য সংগ্রহ করেন তারা।

গবেষণা অনুযায়ী, জরিপে গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শীত, তিন মৌসুমের বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। শনাক্ত হওয়া প্রজাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে পাঁচটি উভয়চর, ১৬টি সরীসৃপ, ৯৭টি পাখি এবং ১৩টি স্তন্যপায়ী প্রাণী। এর মধ্যে সর্বাধিক প্রজাতি পাওয়া গেছে পাখিদের মধ্যে। মৌসুম হিসেবে শীতকালে সর্বাধিক ১০২টি প্রজাতি রেকর্ড করা হয়।

গবেষণায় জানা গেছে, নোবিপ্রবিতে বেশকিছু তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায় বা দুর্লভ প্রজাতি পাওয়া গেছে, যা গবেষণাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- একচোখো গোখরা (মনোসেলেট কোবরা), দু’চোখো গোখরা (বিনোসেলেট কোবরা), চিতা চিত্রা কচ্ছপ (স্পটেড ফ্লাপশেল টারটেল), ছোট তুলা হাঁস (কটন পিগমি গোজ), ছোট বালুচর চ্যাংড়া (লেসার স্যান্ড প্লোভার), বন চ্যাংড়া (উড স্যান্ড পিপার), গালঠোঁট টার্ন (গাল-বিল্ড টার্ন), বেগুনি বক (পার্পল হেরন), মেছো বাঘ (ফিশিং ক্যাট), সোনালী শিয়াল (এশিয়াটিক জ্যাকল), রেশাস বানর (ইন্ডিয়ান রেশাস ম্যাকাকু), চূড়াধার সজারু (ইন্ডিয়ান ক্রেস্টেড পর্কুপিন)।

এই প্রজাতিগুলো সাধারণত বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে বিরল হলেও নোবিপ্রবিতে তাদের উপস্থিতি ক্যাম্পাসের অনন্য পরিবেশগত বৈচিত্র্যকে ইঙ্গিত করে।

গবেষণায় দেখা যায়, বিভিন্ন শ্রেণীর প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে এশিয়ান কমন টোড (উভচর), ওরিয়েন্টাল গার্ডেন লিজার্ড (সরীসৃপ), হাউজ স্পারো (পাখি) এবং গোল্ডেন জ্যাকল (স্তন্যপায়ী)।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থার (আইইউসিএন) ২০২১ সালের তালিকা অনুযায়ী বিপন্ন ও হুমকির মুখে থাকা তিনটি বন্যপ্রাণী প্রজাতিও শনাক্ত করেছেন গবেষকদল। প্রজাতিগুলো হলো- বিপন্নপ্রায় ইন্ডিয়ান আইড টারটল, ইন্ডিয়ান রুফড টারটল ও হুমকির মুখে থাকা গ্রে-হেডেড ফিশ ইগল।

বৈচিত্র্যের সূচক অনুসারে, পাখিদের শ্যানন-উইনার ইনডেক্স (এইচ=৩.৩৯) এবং সিম্পসন ইনডেক্স (ডিএস=০.৯৫) সর্বোচ্চ পাওয়া গেছে। উভচরদের মধ্যে সর্বাধিক ইভেননেস (ই=০.৬০) রেকর্ড করা হয়েছে। সূচকগুলো থেকে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে উচ্চ জীববৈচিত্র্য বিদ্যমান, তা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়।

ঋতুভিত্তিক প্রাচুর্যের ধরণে দেখা গেছে, সর্বাধিক প্রজাতি বৈচিত্র্য শীতকালে (১০২টি প্রজাতি) পাওয়া গেছে, এরপর গ্রীষ্মকালে (১০০টি) এবং বর্ষাকালে (৮২টি)। তিন ঋতুতেই ৬০টি প্রজাতি পাওয়া গেছে, যা নির্দেশ করে অনেক প্রজাতি মৌসুমি পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম।

গ্রীষ্মে (১৮টি) ও শীতে (১৭টি) অনন্য প্রজাতির সংখ্যা বেশি পাওয়া গেছে। উভচর প্রাণীর প্রজাতি বৈচিত্র্য বর্ষাকালে সর্বাধিক ছিল, যা তাদের প্রজনন মৌসুমের সঙ্গে সম্পর্কিত; সরীসৃপদের সক্রিয়তা গ্রীষ্মে বেশি এবং পরিযায়ী পাখির আগমনে শীতে প্রাণবৈচিত্র্য সর্বাধিক ছিল।

গবেষণাক মায়মুনা সালসাবিল মিশমা বলেন, “ছোটবেলা থেকেই প্রাণীপ্রেমী আমি। ভাবতাম, আমাদের ক্যাম্পাসেও যে সুন্দর জীববৈচিত্র্য আছে, সে গল্প সবার জানা উচিত। সেই ভাবনা থেকেই এই গবেষণা শুরু করি। ইচ্ছা ছিল, কেউ নোবিপ্রবির প্রাণবৈচিত্র্য সম্পর্কে জানতে চাইলে আমার কাজের মাধ্যমেই জানুক। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমার গবেষণার সুপারভাইজার নাসরিন আক্তার বৃষ্টি ম্যাম এই পুরো যাত্রায় ছিলেন পথপ্রদর্শক। হতাশার মুহূর্তে তিনি অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, গবেষণার প্রতিটি ধাপে সহায়তা করেছেন। ফিল্ডওয়ার্কে তানভীর আকিক স্যার ছিলেন বড় সহায়। ফুড টেকনোলজি বিভাগের হয়েও তার প্রকৃতি ও পাখির প্রতি ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে।”

তিনি আরো বলেন, “ক্যাম্পাসের প্রাণীদের টিকিয়ে রাখতে পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা জরুরি। আবাসস্থল ধ্বংস ও মানুষের সঙ্গে সংঘাত এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে পরিবেশ রক্ষায় প্রশংসনীয় কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এই গবেষণাটি ছিল প্রাথমিক ধাপ; ভবিষ্যতে আরো বিস্তৃত গবেষণা দরকার, যাতে প্রাণীগুলোর সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়।”

গবেষণার সুপারভাইজার নাসরিন আক্তার বৃষ্টি বলেন, “আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করি, তখন জীববৈচিত্র্য আরো বেশি ছিল। কিন্তু অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল নষ্ট হচ্ছে। আমাদের উন্নয়ন করতে হবে, কিন্তু জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও সচেষ্ট থাকতে হবে। মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সহাবস্থানের মাধ্যমেই আামাদের পরিবেশ সুন্দর থাকবে।”

গবেষণাটি নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসের মেরুদণ্ডী প্রাণীদের একটি প্রাথমিক ধারণা দিয়েছে, যা বিভিন্ন ধরনের আবাসস্থল প্রাণিবৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা তুলে ধরেছে। তবে উন্নয়নমূলক কাজ, আবাসস্থল ধ্বংস এবং মানুষের চাপ এখনো জীববৈচিত্র্যের জন্য বড় হুমকি। গবেষকদল মনে করেন, সচেতনতা ও পরিকল্পিত সংরক্ষণই পারে নোবিপ্রবির জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করতে।

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ