রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বেয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে নিহত শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার আবুল কালাম আজাদের (৩৫) দুই সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে তিনি নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে নিহত আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন এবং দুই শিশু সন্তানের লেখাপড়ার খরচ দেওয়ার আশ্বাস দেন।

আরো পড়ুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিবের জামিন

ঝালকাঠিতে ১০ বছর পর মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন ৪৭ আসামি 

২৬ অক্টোবর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের ৪৩৩ নং পিলারের বিয়ারিং প্যাড খুলে মাথায় পড়ে পথচারী আবুল কালামের মৃত্যু হয়। 

স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে আবুল কালাম নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় থাকতেন। রাজধানীর মতিঝিলের ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কাজ করতেন তিনি। তার বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামে। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন। তার ছেলের বয়স পাঁচ বছর আর মেয়ের বয়স তিন বছর।

নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন শফিকুর রহমান কিরণ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শুধু একটি সন্তান হারাইনি, আমার এলাকার এক কর্মক্ষম তরুণকেও হারিয়েছি। এই কষ্ট সরকার ভোগ করবে না, ভোগ করবে পরিবার ও আমাদের সমাজ। কোনো ক্ষতিপূরণ দিয়ে একজন কর্মক্ষম মানুষকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তারপরও পরিবারের কথা চিন্তা করে আমি ১০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। ক্ষতিপূরণ যদি তা না পায়, তাহলে আদালতের আশ্রয় নিতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং আমরা ন্যায়বিচার পাব ইনশাআল্লাহ।’’ 

শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, ‘‘আজাদের বাচ্চাগুলো ছোট। তাদের লেখাপড়ার সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমি নিয়েছি। পাশাপাশি বিএনপি আগামী নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলে নিহত আজাদের স্ত্রীকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।’’

তিনি জানান, জেলা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকেও নিহতের পরিবারের জন্য অনুদান অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় আছে, যা সপ্তাহ খানেকের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে।

এ সময় স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/আকাশ/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ সন ত ন র ব এনপ র আজ দ র পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

বাবার কবরে শায়িত বিজ্ঞানী ও লেখক রেজাউর রহমান

বাবার কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ড. রেজাউর রহমান। গতকাল বুধবার তাঁকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদ কমপ্লেক্স কবরস্থানে বাবা ফজলুর রহমানের কবরে দাফন করা হয়। এর আগে বাদ আসর এই মসজিদে মরহুমের তৃতীয় জানাজা হয়।

ধানমন্ডির ১২/এ সড়কের তাকওয়া মসজিদে বাদ জোহর রেজাউর রহমানের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এখানে মসজিদের মুসল্লিরা ছাড়াও মরহুমের আত্মীয়, সুহৃদ, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ী, স্কুল–কলেজের সতীর্থদের অনেকে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ পরে দাফনেও অংশ নিয়েছেন। জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, শিল্পী রফিকুন নবী, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, শিল্পী আবুল বার্‌ক্‌ আলভী, মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক, প্রাণিবিজ্ঞানী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, এথিকস অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান, লেখক আনিসুল হকসহ কবি, শিল্পী, চিকিৎসকদের অনেকে।

প্রথম জানাজার পরে শেষবারের মতো রেজাউর রহমানের মরদেহ তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে আনা হয়। এখানে পরিবারের সদস্য, বিশেষত নারী আত্মীয়স্বজনসহ অনেকে শেষবারের মতো তাঁকে দেখতে আসেন। বাসভবন ছেড়ে যাওয়ার আগে এখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেশী ও স্বজনেরা জানাজায় অংশ নেন। এরপর দাফনের জন্য মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদে আনা হয়।

রেজাউর রহমান ৮১ বছর বয়সে ২৬ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।

আরও পড়ুনরেজাউর রহমানের চলে যাওয়া শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়…২৭ অক্টোবর ২০২৫

ব্যক্তিগত জীবনে বিনয়ী ও সদাচারী ছিলেন রেজাউর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৬৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। পরে ১৯৭৯ সালে চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস-প্রাগ থেকে কীটতত্ত্বে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর কাজ করেছেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে। পেশাগত জীবনে কীটপতঙ্গ নিয়ে দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন তিনি।

পেশাগতভাবে বিজ্ঞানী হলেও লেখক

হিসেবে রেজাউর রহমান বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দেশের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন বিশিষ্ট স্থানে। বিজ্ঞানে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সাহিত্যচর্চা ও বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি দেশের বিজ্ঞানচর্চার বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন রেজাউর রহমান।

আরও পড়ুনগ্রহান্তরে ভালো থাকবেন ড. রেজাউর রহমান২৮ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ