রাজধানীতে মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে শাহবাগ অংশে আবার ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিয়ারিং প্যাড পড়ে গিয়ে ফার্মগেটের যে স্থানে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেখানে কিছুটা কম্পন হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ জন্যে নিরাপত্তার স্বার্থে রাত সোয়া নয়টা থেকে আগারগাঁও থেকে শাহবাগ অংশ মেট্রো চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তবে মতিঝিল থেকে শাহবাগ এবং উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে মেট্রোরেল চলাচল অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন ডিএমটিসিএলের জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা জাহিদুল ইসলাম।

গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফার্মগেট স্টেশনের ঠিক পশ্চিম পাশের পিলার ও উড়াল পথের সংযোগে থাকা বিয়ারিং প্যাড খুলে নিচে পড়ে যায়। এ ঘটনায় আবুল কালাম নামে এক যুবক মারা গেছেন। এরপর মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে বিকেল তিনটার দিকে প্রথমে উত্তরা থেকে আগারগাঁও এবং সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে মতিঝিল থেকে শাহবাগ অংশে মেট্রোরেল চালু করা হয়। বিয়ারিং প্যাড স্থাপন করার পর পুরো পথে মেট্রোরেল চালু করা হয় সোমবার (২৭ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে।

অবশ্য পুরো পথে মেট্রোরেল চালু হলেও ফার্মগেটে দুর্ঘটনাস্থলে গত তিন দিন ধরে ধীর গতিতে চলেছে মেট্রোরেল। সতর্কতার অংশ হিসেবেই দুর্ঘটনাস্থলে গতি কমিয়ে চালানো হয় বলে কর্তৃপক্ষ জানায়।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। প্রতিষ্ঠানটির সূত্র বলছে, আজ ফার্মগেটে দুর্ঘটনাস্থলে ট্রেন চলার সময় কিছুটা কম্পন অনুভব করে চালক। পরে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। এরপরই এই অংশে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

সময়সূচি অনুসারে, উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে রাতে সর্বশেষ ট্রেন ছাড়ে রাত সাড়ে ৯টায়। অন্যদিকে মতিঝিল থেকে সর্বশেষ ট্রেন উত্তরা উত্তর স্টেশনের দিকে ছেড়ে যায় ১০টা ১০ মিনিটে। ফলে আজ আগারগাঁও-শাহবাগ অংশে মেট্রোরেল চালুর সম্ভাবনা নেই বলে ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হব গ অ শ ফ র মগ ট দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

বাবার কবরে শায়িত বিজ্ঞানী ও লেখক রেজাউর রহমান

বাবার কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ড. রেজাউর রহমান। গতকাল বুধবার তাঁকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদ কমপ্লেক্স কবরস্থানে বাবা ফজলুর রহমানের কবরে দাফন করা হয়। এর আগে বাদ আসর এই মসজিদে মরহুমের তৃতীয় জানাজা হয়।

ধানমন্ডির ১২/এ সড়কের তাকওয়া মসজিদে বাদ জোহর রেজাউর রহমানের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এখানে মসজিদের মুসল্লিরা ছাড়াও মরহুমের আত্মীয়, সুহৃদ, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ী, স্কুল–কলেজের সতীর্থদের অনেকে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ পরে দাফনেও অংশ নিয়েছেন। জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, শিল্পী রফিকুন নবী, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, শিল্পী আবুল বার্‌ক্‌ আলভী, মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক, প্রাণিবিজ্ঞানী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, এথিকস অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান, লেখক আনিসুল হকসহ কবি, শিল্পী, চিকিৎসকদের অনেকে।

প্রথম জানাজার পরে শেষবারের মতো রেজাউর রহমানের মরদেহ তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে আনা হয়। এখানে পরিবারের সদস্য, বিশেষত নারী আত্মীয়স্বজনসহ অনেকে শেষবারের মতো তাঁকে দেখতে আসেন। বাসভবন ছেড়ে যাওয়ার আগে এখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেশী ও স্বজনেরা জানাজায় অংশ নেন। এরপর দাফনের জন্য মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদে আনা হয়।

রেজাউর রহমান ৮১ বছর বয়সে ২৬ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।

আরও পড়ুনরেজাউর রহমানের চলে যাওয়া শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়…২৭ অক্টোবর ২০২৫

ব্যক্তিগত জীবনে বিনয়ী ও সদাচারী ছিলেন রেজাউর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৬৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। পরে ১৯৭৯ সালে চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস-প্রাগ থেকে কীটতত্ত্বে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর কাজ করেছেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে। পেশাগত জীবনে কীটপতঙ্গ নিয়ে দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন তিনি।

পেশাগতভাবে বিজ্ঞানী হলেও লেখক

হিসেবে রেজাউর রহমান বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দেশের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন বিশিষ্ট স্থানে। বিজ্ঞানে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সাহিত্যচর্চা ও বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি দেশের বিজ্ঞানচর্চার বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন রেজাউর রহমান।

আরও পড়ুনগ্রহান্তরে ভালো থাকবেন ড. রেজাউর রহমান২৮ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ