শিবলী ও আলমগীরকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ
Published: 6th, February 2025 GMT
দুর্নীতির পৃথক দুই মামলায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
দুজনকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে আজ আদালতে হাজির করে দুদক। তাঁদের ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন আগেই করা হয়েছিল। আজ আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এই আবেদন নাকচ করে জামিনের আরজি জানান। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন রাতে গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনশিবলী রুবাইয়াত ও গোলাম মোহাম্মদ কারাগারে, রিমান্ড শুনানি বৃহস্পতিবার২১ ঘণ্টা আগেগতকাল বিকেলে দুজনকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত বৃহস্পতিবার (আজ) রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানির দিন রাখেন। আর দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে গতকাল বুধবার মামলা করে দুদক।
অন্যদিকে গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের বিরুদ্ধে ২৭ কোটি ৮৬ লাখ ২০ হাজার ৯০৮ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ৪ ফেব্রুয়ারি মামলা করে দুদক।
আরও পড়ুনশিবলী রুবাইয়াতসহ ৯ জনের পাসপোর্ট বাতিল২৯ জানুয়ারি ২০২৫ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ২০২০ সালের ১৭ মে প্রথম দফায় বিএসইসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। চার বছর দায়িত্ব পালনের পর পুনর্নিয়োগ পেয়ে গত বছরের ১৬ মে তিনি আবার বিএসইসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ আছে। অভিযোগ রয়েছে, শেয়ারের দাম বাড়াতে তিনি কারসাজিকারকদের নানাভাবে সহায়তা করতেন। তাঁর প্রশ্রয়ে শেয়ারবাজারে একটি চক্র গড়ে ওঠে। এই চক্র শেয়ারবাজার থেকে অর্থ লোপাটে নানাভাবে তাঁর কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা পেত।
আরও পড়ুনবিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াতসহ আটজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত২০ আগস্ট ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।
গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।