জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষ পরীক্ষার ফরম পূরণ চলছে, জেনে নিন সম্পূরক তথ্য
Published: 16th, February 2025 GMT
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের অনার্স তৃতীয় বর্ষ পরীক্ষার শিক্ষার্থীদের আবেদন ফরম পূরণ, ডাটা এন্ট্রি ও সোনালী সেবার মাধ্যমে ফি জমাদান চলছে। আবেদন ফরম পূরণ করা যাবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ডাটা এন্ট্রি নিশ্চয়নের শেষ তারিখ: ২৬/০২/২০২৫ থেকে ২৭/০২/২০২৫ রাত ১১: ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। সোনালী সেবার মাধ্যমে টাকা জমার শেষ তারিখ ০৪/০৩/২০২৫ বিকেল চারটা পর্যন্ত।
বিবরণী ফরম ও অন্যান্য কাগজপত্র জমাদান/সংরক্ষণ সম্পর্কিত: বিবরণী ফরম ও অন্যান্য কাগজপত্র ২০২৩ সালের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের তারিখ থেকে ৪ মাস পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করবেন। (আঞ্চলিক কেন্দ্রে জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই)
আরও পড়ুনবিদেশে পড়াশোনা, বিশ্ববিদ্যালয়–বিষয় বেছে নিতে অনুসরণ করুন এই ১২ ধাপ ৪ ঘণ্টা আগে২০১৪–২০১৫ ও ২০১৫–২০১৬ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের শর্তাবলি
*বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়ের সুপারিশ করা শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনার্স ১ম বর্ষ ও ২য় বর্ষে Promoted কিন্তু অনার্স ৩য় বর্ষের এক বা একাধিক কোর্সে (F) গ্রেড রয়েছে এবং অনার্স ৪র্থ বর্ষে অংশগ্রহণ করেননি বা অংশগ্রহণ করে এক বা একাধিক কোর্সে (F) গ্রেড রয়েছে, সেসব শিক্ষার্থী অনার্স ৩য় বর্ষের এক বা একাধিক কোর্সে ফরম পূরণ বাবদ ২ হাজার টাকা ও জরিমানা বাবদ ৩ হাজার টাকা সর্বমোট ৫ হাজার টাকা ফি প্রদান করে শুধু ২০২৩ সালের অনার্স ৩য় বর্ষ পরীক্ষার ফরম পূরণের সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুনজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেশনাল মাস্টার্স, ফি ৩০০ টাকা১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫*কোনো শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করতে ব্যর্থ হলে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারলে বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হলে কোনো অবস্থাতেই পরবর্তী সময়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ চেয়ে আবেদন করতে পারবেন না।
*এক বা একাধিক কোসে৴ ফরম পূরণের জন্য মোট ৫ হাজার টাকা লাগবে। বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়েবসাইট:
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ র এক ধ ক ক য় বর ষ অন র স
এছাড়াও পড়ুন:
তদন্ত করে ভুয়া নাম বাদ দিন
সরকারি নথিপত্রে যেকোনো ঐতিহাসিক ঘটনার ভুল কিংবা মিথ্যা তথ্যের ইচ্ছাকৃত অন্তর্ভুক্তি সন্দেহাতীতভাবে ইতিহাস বিকৃতির সবচেয়ে খারাপ ধাপ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারগুলোর প্রায় প্রত্যেকে এই গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি করা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রাজাকারদের, আর রাজাকারের তালিকায় সুবিদিত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের অন্তর্ভুক্তি দেখা গেছে। কিন্তু হাজারো তরুণের রক্তস্নাত জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব নেওয়া অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে, তা অকল্পনীয় ছিল।
কিন্তু বাস্তবতা দেখিয়েছে, আগের সেই রেশ থামেনি। দেখা যাচ্ছে, সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শহীদদের যে তালিকা করেছে, তাতে এমন অর্ধশতাধিক লোকের নাম এসেছে, যাঁরা জুলাই শহীদ নন।
জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে: শুধু রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী অথবা আওয়ামী শাসক দলের লোকদের হাতে নিহত ব্যক্তিরাই জুলাই শহীদ বলে গণ্য হবেন। কিন্তু প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, সরকারের তৈরি করা জুলাই শহীদদের তালিকায় কমপক্ষে ৫২ জনের নাম আছে, যাঁরা জমিসংক্রান্ত বিরোধ বা অন্য কারণে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন কিংবা নানা ঘটনা-দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এ ছাড়া তালিকায় তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন ছাত্রলীগ নেতা আছেন। এমনকি তালিকায় এমন একজনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যিনি প্রতিবাদীদের ওপর হামলায় যুক্ত ছিলেন।
প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে এককালীন মোট ৩০ লাখ টাকা দেবে সরকার। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরে দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক শহীদ পরিবার মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছে। ঢাকায় তাদের ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।
জনমানসের যৌক্তিক ধারণা, এই অর্থনৈতিক সুবিধার প্রলোভন তালিকা প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় প্রতারণা, শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং অপকৌশলের সুযোগ তৈরি করেছে। শুধু জালিয়াতি করে শহীদ দেখিয়ে শুধু সহায়তা নেওয়া নয়; সংশ্লিষ্ট নিহতের ঘটনায় মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার নজিরও মিলেছে।
এই পরিস্থিতি প্রমাণ করছে, তালিকাভুক্তকরণের প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক ও আর্থিক স্বার্থ কাজ করে থাকতে পারে। ঘটনাটিকে দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু কর্মকর্তার মিলিত কৌশল এবং সুযোগসন্ধানীদের চক্রান্ত হিসেবে বিবেচনা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় ধরনের ব্যর্থতা। তবে প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি সরকার আমলে নিয়েছে, এ জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাতে চাই।
বহু শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকার এক মহান দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। তাদের মনে রাখতে হবে, শহীদের মর্যাদাকে সরকারি পরিসরে আর্থিক প্রলোভন, সংকীর্ণ রাজনৈতিক সুবিধা বা স্বার্থপর উদ্দেশ্যে বিকৃত করা হলে সেটি ইতিহাস, নৈতিকতা ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব লঙ্ঘনের অমার্জনীয় অন্যায় হয়ে ওঠে।
এ অন্যায় থেকে বাঁচতে ও মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপনে অবিলম্বে বিতর্কিত সব নামের সব সরকারি সুবিধা অবিলম্বে স্থগিত করতে হবে। স্বাধীন ও অরাজনৈতিক কমিটি গঠন করে প্রতিটি নামের পুনঃ যাচাই নিশ্চিত করা জরুরি। বাদ পড়া শহীদদের নামও তালিকায় যুক্ত করতে হবে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে যাদের গাফিলতি বা দুর্নীতির কারণে এই অনিয়ম হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে এক অমর মাইলফলক। এর শহীদদের তালিকায় নকল বা অপ্রাসঙ্গিক নাম সংযোজন করা হলে ‘বীরের এ রক্তস্রোত, মাতার এ অশ্রুধারা’ সব ‘ধরার ধুলায় হবে হারা’। সরকারকে এ সত্য উপলব্ধি করতে হবে।
আশার কথা হলো, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কোনো প্রকার ভুয়া প্রমাণিত হলে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কথা ও কাজের সম্মিলিত প্রয়াস আমরা দেখব, সেটিই কাম্য।