রাজশাহীতে আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 22nd, February 2025 GMT
ধর্ষকের শাস্তির দাবি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাজশাহী।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, ‘‘বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে নারীদের ধর্ষণ করে ধর্ষক সেঞ্চুরি উৎসব পালন করেছে। সেই সময় আইনশৃঙ্খলা অবনতি ও বিচারহীনতার কারণে ধর্ষকেরা ছাড় পেয়ে গেছে। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে, তারপরও কেন দেশের আনাচে-কানাচে ধর্ষণের ঘটনা দিন দিন বেড়ে চলেছে? বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আইনশৃঙ্খলার এতই অবনতি, কোথাও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। মা-বোনেরা নিরাপদে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারছে না। এখনো আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আসছে না।’’
তারা বলেন, ‘‘এখন তো আর দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত-পা বাঁধা নেই। তারপরও কেন থানায় মামলা নেওয়া হচ্ছে না? ধর্ষকেরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে না। ধর্ষকদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না। প্রশাসন যদি চুপ করে বসে থাকে তাহলে দেশের জনতা ধর্ষণকারীদের ধরে জনসমক্ষে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবে যেন কেউ নারীদের দিকে কুদৃষ্টিতে তাকাতে সাহস না পায়।’’
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী মহানগরের সদস্য সচিব হযরত আনাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো.
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলা, ওসি প্রত্যাহার
আওয়ামীপন্থিকে উপ-উপাচার্য হিসেবে চান না যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
ঢাকা/কেয়া/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
নড়াইলের কালিয়ায় মোটরসাইকেল চালক রফিকুল মোল্যার (৪০) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়নি। এ ঘটনায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছে প্রতিপক্ষ। গতকাল বুধবার সকালে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা অভিযোগ করেন, তাদের পক্ষের ফরিদ হত্যা মামলা দুর্বল করতে ও ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত রফিকুল মোল্যা উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ রিকাইল শেখের বাড়ির পেছনে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই রফিকুলের দাফন হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একই গ্রামের মিলন মোল্যার লোকজনের সঙ্গে আফতাব মোল্যার পক্ষের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এর জেরে ১১ এপ্রিল দু’পক্ষের সংঘর্ষে খুন হন ফরিদ মোল্যা (৫৭)। এ ঘটনায় বাবলা-হাসলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক পিকুলকে প্রধান আসামি করে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা হয়। নিহত রফিকুল মামলাটির ১৮ নম্বর আসামি। এই দু’পক্ষের মধ্যে ২০২৪ সালের ১ ও ৪ সেপ্টেম্বর দুই দফায় সংঘর্ষ হয়।
বাবলা-হাসলা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের লোকজনের বিরুদ্ধে এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এর পরই চলতি মাসে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্যমতে, ফরিদ মোল্যা হত্যার জেরে আসামি পক্ষের ২৫টি পরিবারের প্রায় ৫০টি বাড়িতে আগুন, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল রফিকুলের মা ফাতেমা বেগম কালিয়া থানায় মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় প্রতিপক্ষ আফতাব মোল্যা পক্ষের লোকজনকে। এর এক দিন পরই তাঁর ছেলের লাশ পাওয়া যায়।
রিকাইল শেখের বাড়ির সামনে তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসীর ব্যানারে বুধবার সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন মুস্তারি বিল্লাহ, রিকাইল শেখের মেয়ে ইভা খানম, ফিরোজ মোল্যা, হানেফ মোল্যা, আব্দুল গফুর ও জামিলা বেগম। তারা অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ও ফরিদ হত্যা মামলা দুর্বল করতে পরিকল্পিতভাবে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত করলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে।
এ সময় বক্তারা দাবি করেন, রফিকুল হত্যার জেরে মঙ্গলবার রাতে ওই গ্রামের পূর্বপাড়া হামলা হয়। এতে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে ২০০ মণ ধান ও ১৫টি গরু লুট করা হয়েছে।
রফিকুলের শ্যালক শামিম আহমেদ প্রতিপক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শোকাহত পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। কারা কোথায় কী করছে (ভাঙচুর), তা আমাদের জানা নেই।’ রফিকুল হত্যায় তারা এখনও মামলা করেননি বলেও জানান।
রফিকুলের স্ত্রী অজুহা বেগমের ভাষ্য, সোমবার মাগরিবের আজানের পর স্বামীর সঙ্গে ফোনে সর্বশেষ কথা হয় তাঁর। রাত ৩টার দিকে কল দিলে ফোন নম্বরে সংযোগ পাননি। মঙ্গলবার সকালে স্বামীর লাশ উদ্ধারের খবর পান।
কালিয়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রফিকুল হত্যার বিষয়টি রহস্যজনক। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই এলাকায় কোনো বাড়ি ভাঙচুর বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। কিছু লোক গবাদি পশু ও বাড়ির মালপত্র সরিয়ে নিয়েছেন বলে জেনেছেন।