সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় ধাপের ৬৫৩১ জনের নিয়োগপত্র আগামীকাল, জেলায় যোগদান ১২ মার্চ
Published: 3rd, March 2025 GMT
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে সুপারিশ পাওয়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র জারি, যোগদান ও পদায়নের বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে আগামীকাল মঙ্গলবার নিয়োগপত্র জারি এবং ১২ মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তাঁদের যোগদান করার ব্যবস্থা করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
আজ সোমবার বিকেলের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক আদেশে অধিদপ্তরকে এই নির্দেশ দেয়। এর আগে ওই ৬ হাজার ৫৩১ জনের প্রকাশিত ফল বাতিলসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো.
আদেশের পর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় স্থগিত করা হয়েছে। লিভ মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। ৬ হাজার ৫৩১ জনের যোগদানে আর কোনো অসুবিধা রইল না।’
এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সময়সূচি উল্লেখ করে অধিদপ্তরকে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়ে নির্দেশনাপত্র পাঠায়। এতে বলা হয়, নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিয়েছেন তাঁদের অনুকূলে আগামীকাল ৪ মার্চ নিয়োগপত্র জারি করতে হবে। এরপর নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করতে হবে ১২ মার্চ। আর ১৩ মার্চের মধ্যে প্রার্থীদের পূরণ করা পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম জেলা পুলিশ সুপার (এসবি) বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে পাঠাতে হবে। একই দিনে শিক্ষকদের পদায়নের আদেশ জারি করতে হবে। তারপর নির্ধারিত সময়ে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত কোনো প্রার্থীর অনুকূলে নিয়োগপত্র জারি না হলে, জেলা কার্যালয়ে যোগ না দিলে বা পদায়িত বিদ্যালয়ে যোগ না দিলে কারণসহ সেই তালিকা ২০ মার্চ অধিদপ্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা করার কথা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে।
২০২৩ সালের ১৪ জুন এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ৬ হাজার ৫৩১ প্রার্থীকে নির্বাচন করে গত বছরের ৩১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ১১ নভেম্বরের এ-সংক্রান্ত আদেশ অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীদের অনুকূলে ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যু করার কথা ছিল। কিন্তু বিষয়টি আদালতে গড়ায়। ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা অনুসরণের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন প্রার্থী নভেম্বরে রিট করেছিলেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন এবং চূড়ান্ত ফলাফল ও নিয়োগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্তের কার্যক্রম স্থগিত করেন। রুলে ৩১ অক্টোবরের ফলাফল প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগের বিষয়ে ১১ নভেম্বরের নির্দেশনা-সংবলিত স্মারক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৫৩১ জনের যোগদানের পথ খুলল৯ ঘণ্টা আগেচূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে গত ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ৬ হাজার ৫৩১ জনকে নিয়োগ দিতে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফল ও নির্বাচিত ব্যক্তিদের অনুকূলে নিয়োগপত্র ইস্যুর সিদ্ধান্ত আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের পর বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে ২৫ দিন ধরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন নিয়োগ বাতিল হওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের একাংশ। গতকাল আপিল বিভাগের আদেশের পর তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন য় গপত র জ র র ন য় গপত র র অন ক ল ফল ফল
এছাড়াও পড়ুন:
চুয়েটে দিনভর তারুণ্যের ‘তর্ক-যুদ্ধ’
তীব্র উত্তেজনা চলছে তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে। একদিকে তাইওয়ানের স্বাধীনতা রক্ষার আকাঙ্ক্ষা, অন্যদিকে চীনের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা রক্ষার দৃঢ় অবস্থান। এর মাঝখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ঘিরে তৈরি হচ্ছে বৈশ্বিক কূটনৈতিক টানাপোড়েন। সামরিক মহড়া, যুদ্ধজাহাজের টহল আর রাজনৈতিক হুমকিতে যখন অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বাড়ছে, ঠিক তখনই এসব জটিল আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে তর্ক-যুদ্ধে মেতে ওঠেন তরুণ বিতার্কিকেরা।
আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল ভবনে বিতার্কিকদের দেখা গেল। তাইওয়ান ও চীনের সাম্প্রতিক উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা, অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্র ও সমন্বয়কের অন্তর্ভুক্তির ভালো-মন্দ—এমন আরও নানা আলোচিত বিষয় নিয়ে বিতার্কিকেরা যুক্তি, পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটি। আয়োজনের সহযোগী পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে প্রথম আলো।
এবারের আয়োজনের নাম ছিল ‘তারুণ্য উৎসব’। এতে দেশের ২৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ দল অংশ নেয়। তিন দিনের আয়োজনে গতকাল ছিল দ্বিতীয় পর্ব। সকাল ৯টায় শুরু হয়ে এ প্রতিযোগিতা চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। যুক্তির এই লড়াই চলে চারটি ধাপে। প্রতিটি ধাপ শুরুর ১৫ মিনিট আগে প্রতিযোগীদের বিতর্কের বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর চটপট যুক্তি সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিতার্কিকেরা। পরে তাঁদের মধ্য থেকে বাছাই করা ৮টি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় কোয়ার্টার ফাইনাল।
আয়োজকেরা জানান, কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিজয়ী চারটি দল নিয়ে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে সেমিফাইনাল রাউন্ড। এরপর সেমিফাইনালের বিজয়ী দুটি দল সরাসরি অংশগ্রহণ করবে চূড়ান্ত পর্বে। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন অতিথিরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এদিন বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে বই বিনিময়, ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ ও গুপ্তধন খোঁজা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন।
চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি গোলাম মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, বিতর্কের মাধ্যমে নানা বিষয়ে জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিতর্ক আমাদের চিন্তা, চেতনা ও মেধা বিকশিত করে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের অংশগ্রহণের ফলে নতুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিক্ষার্থীদের এ সুযোগ তৈরি করে দিতেই নবমবারের মতো এই বিতর্ক উৎসব বা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এসেছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস। আলাপকালে তিনি বলেন, এ রকম প্রতিযোগিতায় সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্ক করার ফলে জ্ঞানের পরিধি সমৃদ্ধ হয়। পাশাপাশি অনেকের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
দিনভর বিতর্ক শেষে সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটকসহ বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি কনসার্টে মঞ্চ মাতায় জনপ্রিয় গানের দল ‘সহজিয়া’ ও ‘লেভেল ফাইভ’।