আনন্দ-উচ্ছাসে বাড়ি ফিরছে মানুষ, চট্টগ্রাম স্টেশনে ভোগান্তি কম
Published: 27th, March 2025 GMT
আনিসুল ইসলাম। চাকরি করেন চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায়। পরিবার থাকেন ঢাকায়। ঈদের ছুটিতে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে আজ বৃহস্পতিবার বাসায় ফিরছেন তিনি।
শুধু আনিসুল ইসলাম নন, ঈদের টানা ছুটিতে বাড়ি ফিরছেন সাধারণ মানুষ। আজ ছিল ছুটির আগে শেষ কর্মদিবস। এদিন ছুটি শেষে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় তৈরি হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছাড়ছে। তাই স্টেশনে যাত্রীদের ভোগান্তি তুলনামূলক কম।
ট্রেনের ছাদে কিংবা হুড়োহুড়ি করে কাউকে ট্রেনে চড়তে দেখা যায়নি। গত বুধবার থেকে নিয়মিত ট্রেনের পাশাপাশি চলছে বিশেষ ট্রেন চলাচল। বাতিল করা হয়েছে আন্তঃনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটিও।
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্টেশনে শত শত মানুষের ভিড় ছিল। কারও গন্তব্য চাঁদপুর, কারও আবার ফেনী, কুমিল্লা বা ঢাকা। আবার কেউ কেউ যাচ্ছেন ময়মনসিংহ ও সিলেটে। তাদের সবাই জীবিকার তাগিদে চট্টগ্রামে থাকেন। কেউ পরিবার নিয়ে থাকেন। কেউ আবার একা। কারও হাতে ঈদ উপহার। কেউ আবার এলাকায় গিয়ে করবেন ঈদ মার্কেট। ঈদ আনন্দ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন সবাই।
আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘ছুটি না থাকায় কয়েক মাস পরপর বাড়ি যাওয়া হয়। এবার লম্বা ছুটি পেয়েছি। তাই বাড়িতে গিয়ে ছেলেদের নিয়ে মার্কেটে যাবো। পরিবারের অন্য সদস্যদের কেনাকাটা করবো। সবাই মিলে ঘোরাঘুরি করে কেনার অন্যরকম আনন্দ রয়েছে।’
চট্টগ্রামের চন্দনাইশের মোরশেদুল আলম। তার কর্মস্থল ব্রাহ্মণবাড়িয়া। গত ঈদেও ছুটি পাননি। এবার ঈদে ছুটি পেয়ে চট্টগ্রাম ফিরেছেন। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে নেমেই আনন্দে উচ্ছসিত তিনি।
কক্সবাজারগামী ট্রেনে করে যাবেন চন্দনাইশ। মোরশেদুল আলম বলেন, ‘বাড়িতে মা ও ভাই বোন সবাই আছে। ঈদে বাড়ি ফিরতে না পারলে কষ্ট হয়। মন খারাপ থেকে। এবার ছুটি পেয়ে ভালো লাগছে। পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে ভালো সময় কাটবে বলে আশা করছি।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।