মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র যেন পর্যটন স্পট, দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়
Published: 5th, April 2025 GMT
সাগরের বুকে পাহাড়ি দ্বীপ কক্সবাজারের মহেশখালী। মৈনাক পাহাড়, আদিনাথ মন্দির, সোনাদিয়া দ্বীপসহ নানা পর্যটন স্পট ঘিরে বছরজুড়েই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে দ্বীপটিতে। তবে এর সঙ্গে নতুন করে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা। এবার ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে এলাকাটিতে। বাইরে থেকে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো দেখার পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন সড়ক ও সেতু এবং মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর এলাকা ঘুরে দেখছেন এসব দর্শনার্থী।
বঙ্গোপসাগর ঘেঁষে মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকার ১ হাজার ৬০০ একরের পরিত্যক্ত লবণ মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের বৃহৎ ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ধারণক্ষমতার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি। গতকাল শুক্রবার বিকেলে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাজুড়ে দর্শনার্থীদের ভিড়। দূরদূরান্ত থেকে যেমন অনেকে এসেছেন, তেমনি রয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারাও। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটির চারপাশে দেয়াল দিয়ে ঘেরা, এর ওপর রয়েছে কাঁটাতার। বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাইরের কারও প্রবেশের অনুমতি নেই। এরপরও দর্শনার্থীরা দেয়ালের বাইরে থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যতটুকু পারেন, দেখার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফটকের সামনে ছবি তুলতেও ব্যস্ত দেখা যায় দর্শনার্থীদের।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের পূর্ব পাশে কুহেলীয়া নদী। সেই নদীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মাণ করা জেটিতেও দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যায়। সেখানেও দর্শনার্থীদের কেউ ছবি তুলছেন, কেউ আবার ভিডিও করছেন। চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেখতে আসা নুরুল আলমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বাঁশখালীর চাম্বল এলাকার বাসিন্দা। নুরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং বিভিন্ন টেলিভিশনে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেখেছেন। এটি সামনাসামনি দেখার ইচ্ছা ছিল। তাই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘নদীর এক পাশে পাহাড়, অন্য পাশে বিদ্যুৎকেন্দ্র। খুব ভালো লেগেছে।’
বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে দর্শনার্থীরা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ত রব
এছাড়াও পড়ুন:
হামলার পর আশা ও আতঙ্কের মধ্যে পেহেলগামে ধীরে ধীরে ফিরছেন পর্যটকেরা
ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহাড়ি পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামের কাছে এক প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর শহরটিতে এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। অবশ্য সেখানে অল্প অল্প করে পর্যটক ফিরতে শুরু করেছেন।
গত সপ্তাহে শহরের প্রধান মহাসড়ক একেবারে ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। দোকানপাট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, খালি হয়ে গিয়েছিল হোটেলগুলো। এখন সেখানে আবার অল্প অল্প করে প্রাণ ফিরছে।
গত মঙ্গলবার পেহেলগাম থেকে তিন মাইল (৫ কিলোমিটার) দূরে পাহাড়চূড়ার উপত্যকা বৈসারানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের ওপর গুলি চালায় একদল বন্দুকধারী। এই বৈসারানকে অনেক সময় ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ বলা হয়।
বৈসারানের হামলাকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা অনেক পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে এবং ভারতজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
হামলার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কাশ্মীরের দুই অংশ দুই দেশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তরে পুরো অঞ্চলকে দুই দেশই নিজেদের বলে দাবি করে থাকে।
দিল্লি এ হামলার কোনো সামরিক জবাব দেবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।
১৯৮৯ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে কাশ্মীরে প্রায়ই হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় কখনো নিরাপত্তা বাহিনী আবার কখনো বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটকদের এভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা বিরল এবং তা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের হতবাক ও আতঙ্কিত করেছে।১৯৮৯ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে কাশ্মীরে প্রায়ই হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় কখনো নিরাপত্তা বাহিনী আবার কখনো বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটকদের এভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা বিরল এবং তা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের হতবাক ও আতঙ্কিত করেছে।
পেহেলগামের মতো এলাকার অর্থনীতি পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। হামলার জেরে সেখানে বহু মানুষের জীবিকা স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনকাশ্মীরে ব্যাপক ধরপাকড়, ভাঙা হচ্ছে বাড়ি: ‘আমার ভাই জড়িত থাকলেও পরিবারের অপরাধ কী’১৮ ঘণ্টা আগেহামলার পরদিন (২৩ এপ্রিল) ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা পেহেলগামের বৈসারান এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালান