প্রায় ১০ বছর আগে টাকা-পয়সার লেনদেনকে কেন্দ্র করে সদরঘাটের কাপড় ব্যবসায়ী কামরুল হাসান হত্যা মামলায় এক দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলামের আদালত এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সোহেল রানা ও তার স্ত্রী রুমা আক্তার ওরফে সুমনা। যাবজ্জীবন দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, হত্যার পর লাশ গুমের দায়ে তাদের আরো তিন বছর করে কারাদণ্ড, তিন হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও এক মাস করে বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে।

রায় ঘোষণার আগে জামিনে থাকা দুই আসামি আদালতে হাজির হন। রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন,'ভিকটিম তাদের কাছে আড়াই লাখ টাকা পেত। টাকা যেন না দিতে হয় এজন্য তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে হত্যা করে।”

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম কামরুল হাসানকে অনেক খুঁজাখুঁজি করে না পাওয়া গেলে তার খালা অ্যাডভোকেট রেহেনা পারভীন ঢাকার সিএমএম আদালতে ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। আদালত মামলাটি পল্টন থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। পল্টন থানা পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। তবে ওই চার্জশিটে নারাজি দাখিল করেন রেহানা পারভীন। পরে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই'র পুলিশ পরিদর্শক হারুনর রশীদ তদন্ত শেষে দুই জনকে অভিযুক্ত করে গত ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তদন্তে কামরুল হাসানকে খুন করে লাশ ঘুমের রহস্য ওঠে আসে। ভিকটিমের লাশ খণ্ডখণ্ড করে বস্তায় ভরে বিলের মধ্যে ফেলে দেয় তারা। 

২০১৮ সালের ৫ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

দণ্ডিত সোহেল রানা ২০২৩ সালে রাজধানীর উত্তরার ডাচ বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা ডাকাতির মামলার চার্জশিটভূক্ত আসামি।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী রেহানা পারভীন। উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলার পর ইউক্রেন–যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি সই

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলার পর দেশ দুটি একটি চুক্তিতে সই করেছে। এর ফলে ওয়াশিংটন কিয়েভের মূল্যবান দুর্লভ খনিজসম্পদে প্রবেশাধিকার পাবে ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে তার পুনর্গঠনে তহবিল জোগান দেবে।

গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এ চুক্তি সই হয়। এ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে জোর দরকষাকষি করে দুই দেশ। চুক্তি সই হওয়ার ব্যাপারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কিছু অনিশ্চয়তা থাকলেও অবশেষে এটি সম্পন্ন হয়।

যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ চুক্তি একটি অগ্রগতি নির্দেশ করছে। গত মার্চে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বৈঠকের পর এ সম্পর্ক তলানিতে নেমেছিল।

চুক্তি সইয়ের ঘোষণা দিয়ে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল’ প্রতিষ্ঠা রাশিয়ার প্রতি একটি বার্তা যে, ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘমেয়াদে এক স্বাধীন, সার্বভৌম ও সমৃদ্ধ ইউক্রেন গড়ার শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ চুক্তি একটি অগ্রগতি নির্দেশ করছে। গত মার্চে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বৈঠকের পর এ সম্পর্ক তলানিতে নেমেছিল।

স্কট বেসেন্ট আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের জনগণের মধ্যে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার এ ভাবনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের; যা একটি টেকসই শান্তি ও সমৃদ্ধ ইউক্রেনের প্রতি উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতিই প্রতিফলিত করে।’

‘স্পষ্ট করে বলতে গেলে, রাশিয়ার যুদ্ধচেষ্টায় অর্থ বা অন্যান্য সহায়তাদানকারী কোনো রাষ্ট্র বা ব্যক্তিকে ইউক্রেনের পুনর্গঠন থেকে উপকৃত হতে দেওয়া হবে না’, বলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী।

ট্রাম্প প্রশাসন এ চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।

ইউক্রেনের অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ইউক্রেন পুনর্গঠন তহবিলে’ যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি বা সামরিক সহায়তার মাধ্যমে অবদান রাখবে এবং কিয়েভ তার প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে পাওয়া রাজস্বের ৫০ শতাংশ তহবিলে দেবে।

স্পষ্ট করে বলতে গেলে, রাশিয়ার যুদ্ধচেষ্টায় অর্থ বা অন্যান্য সহায়তাদানকারী কোনো রাষ্ট্র বা ব্যক্তিকে ইউক্রেনের পুনর্গঠন থেকে উপকৃত হতে দেওয়া হবে না।স্কট বেসেন্ট, মার্কিন অর্থমন্ত্রী

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, তহবিলের সম্পূর্ণ অর্থ প্রথম ১০ বছর শুধু ইউক্রেনে বিনিয়োগ করা হবে, এরপর ‘লাভ অংশীদারদের মধ্যে বণ্টন করা হতে পারে’। তহবিলে দুপক্ষের সমান সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকবে। এ চুক্তি শুধু ভবিষ্যতের মার্কিন সামরিক সহায়তায় নজর দেব, অতীতের সহায়তা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়।

ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সিরিদেনকো বলেন, ‘আমরা শুধু বিনিয়োগই পেতে যাচ্ছি না; বরং এমন একটি কৌশলগত অংশীদারকেও পাচ্ছি, যারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনে সহায়তা করতে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার ফাঁকে এক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গতকাল ভ্যাটিকান সিটিতে

সম্পর্কিত নিবন্ধ