ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদার আসর ফেডারেশন কাপের ফাইনাল ম্যাচে সৃষ্টি হলো এক নজিরবিহীন ঘটনা। কালবৈশাখীর তাণ্ডবের পর এবার আলোর অভাবে অসমাপ্ত রইল শিরোপা লড়াই। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আবাহনী লিমিটেড ও বসুন্ধরা কিংসের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচে উত্তেজনা যেমন ছিল তুঙ্গে। তেমনি বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রকৃতি ও অব্যবস্থাপনা।

ম্যাচের শুরুটা ছিল একদম ঠিকঠাক। রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ায় জমে উঠেছিল লড়াই। প্রথমার্ধে দুই দলই একটি করে গোল করে সমতায় ছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র দুই মিনিটের মাথায় হঠাৎ করেই আকাশ কালো করে আসে। শুরু হয় তীব্র কালবৈশাখী ঝড়। সঙ্গে বজ্রপাতের শঙ্কা। খেলার দায়িত্বে থাকা রেফারি সায়মন হাসান সানি খেলা তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন। ঝড়ের তীব্রতায় উড়ে যায় দুই দলের ডাগআউট টেন্ট, সাংবাদিকদের অস্থায়ী প্রেসবক্সও। গ্যালারিতে কোনো ছাউনি না থাকায় দর্শকরাও নিরাপত্তার খোঁজে মাঠে নেমে আসেন।

প্রায় এক ঘণ্টা পর খেলা আবার শুরু হলেও মাঠ তখনও কাদা-পানিতে একাকার। আধুনিক ড্রেনেজ সিস্টেম কিংবা দক্ষ গ্রাউন্ড স্টাফের অভাবে পানি সরাতে মাঠে নামেন খেলোয়াড়, কোচ, এমনকি কর্মকর্তারাও। ডাগআউট না থাকায় খেলোয়াড়দের বসতে হয় সাধারণ প্লাস্টিক চেয়ারে। মাঠের এক পাশে জমে থাকা পানিতে আক্রমণ শানাতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ে আবাহনী। আর অপর পাশে অপেক্ষাকৃত শুষ্ক স্থানে বারবার আক্রমণে উঠে আসে কিংস। তবে সেই কাদামাটিতে সবচেয়ে বড় সুযোগটি নষ্ট করেন কিংসের সোহেল রানা।

আরো পড়ুন:

হামজা ও শমিতের পর লাল-সবুজের জার্সি পরতে যাচ্ছেন সান্ডারল্যান্ডের মিচেল

লাল-সবুজের জার্সিতে খেলবেন সামিত, জানিয়ে দিলেন আনুষ্ঠানিক সম্মতি

নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে ১-১ গোলে সমতা থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু এখানেই বাধে বিপত্তি। স্টেডিয়ামে নেই কোনো ফ্লাডলাইট। ফলে সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে অন্ধকারে ঢেকে যায় মাঠ। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ শেষ হলেও আলোকস্বল্পতার কারণে দ্বিতীয়ার্ধ আর শুরু করতে পারেননি রেফারি। ম্যাচ স্থগিত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করবে বাফুফের লিগ কমিটি।

এই ফাইনালের নাটকীয়তায় শেষ রঙ মেশান কিংসের মিডফিল্ডার ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে আবাহনীর এক খেলোয়াড়কে পেছন থেকে লাথি মেরে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন তিনি। এতে দশ জনের দলে পরিণত হয় কিংস। যার প্রেক্ষিতে আবাহনী আপত্তি তোলে খেলা স্থগিতের সিদ্ধান্তে।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ঘরোয়া ফুটবলে আবারও প্রশ্ন উঠে গেল— আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা সত্ত্বেও কেন দিনের আলোয় ফাইনাল সম্পন্নের যথাযথ প্রস্তুতি ছিল না? কেন আজও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত দেশের মাঠগুলো?

শিরোপার নিষ্পত্তি এখন সময়ের অপেক্ষা। তবে এই ফাইনাল ম্যাচ নতুন করে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে ঘরোয়া ফুটবলের কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে। যা দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলার শিকার। আর দর্শকদের মনে প্রশ্ন—এভাবে কি একটানা টুর্নামেন্ট চালিয়ে যাওয়া সম্ভব?

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

একদিনে আয় ৮১ লাখ, ৬ কোটির ক্লাবে শাকিব খানের তাণ্ডব!

শাকিব খান মানেই যেন বক্স অফিসে উত্তাপ। আর এবারের ঈদে রায়হান রাফী পরিচালিত ‘তাণ্ডব’ সিনেমা সেই উত্তাপকে নিয়ে গেল নতুন উচ্চতায়। মুক্তির অষ্টম দিনেও সিনেমাটি রেকর্ড গড়েছে বলে খবর এসেছে। একদিনে সর্বোচ্চ আয় করে-পেছনে ফেলেছে নিজেরই সপ্তম দিনের রেকর্ড কালেকশন! 

সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছর শুরুর পর এবার তৃতীয় সিনেমা হিসেবে ‘তাণ্ডব’ প্রবেশ করলো ৫ কোটির ক্লাবে।

প্রযোজনা সংস্থা ও মাল্টিপ্লেক্সের বরাতে পাওয়া তথ্য মোতাবেক গতকাল দেশের বিভিন্ন মাল্টিপ্লেক্সে ‘তাণ্ডব’-এর মোট ৯২টি শো চলেছে। যার মধ্যে ৭১টি শো ছিল সম্পূর্ণ হাউজফুল, আর ৪টি ছিল অলমোস্ট ফুল। শুধু স্টার সিনেপ্লেক্সেই ছিল ৫২টি শো, যার ৪৯টিই হাউজফুল। লায়ন সিনেমাসে ১৩টির মধ্যে ৫টি হাউজফুল, ২টি অলমোস্ট ফুল। গ্র্যান্ড সিলেটে ৩টি, মম ইনে ৩টি হাউজফুল এবং আরও একটি অলমোস্ট ফুল। মণিহার সিনেপ্লেক্সে ৫টি শোর মধ্যে ২টি হাউজফুল, মধুবন সিনেপ্লেক্সে ৩টি হাউজফুল, ১টি অলমোস্ট ফুল। কুষ্টিয়ার স্বপ্নীল সিনেপ্লেক্সে ছিল ২টি হাউজফুল শো। এমনকি গ্র্যান্ড রিভারভিউ সিনেপ্লেক্সেও ৫টির মধ্যে ৪টি শো হাউজফুল গিয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গিয়েছে।

একদিনে সর্বোচ্চ সেলের তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে নির্মাতা রায়হান রাফী বলেন, তান্ডব থামবার নয়। অন্য কোনো মাধ্যমে নয় হলে এসে বাংলা সিনেমা দেখুন। 

এদিকে পাইরেসির কবরে পড়েছে তাণ্ডব। তাই অন্যকোনো মাধ্যমে না দেখে সরাসরি হলে এসে দেখার আহ্বান জানালেন নির্মাতা। 

ঈদ উপলক্ষে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমা মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে এখন পর্যন্ত আয় করেছে মোট ৫.৭৬ কোটি টাকা, যা এক সপ্তাহের মধ্যে রেকর্ড বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আজই সিনেমাটি পা রাখতে যাচ্ছে ৬ কোটির ক্লাবে। সিনেমাটির দর্শক চাহিদা এতটাই বেশি যে, অনেকেই এখনো টিকিট পাচ্ছেন না মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে।

‘তাণ্ডব’ সিনেমাটি দারুণ এক শাকিব খানকে দেখিয়েছেন পরিচালক রায়হান রাফী। সিনে বিশ্লেসকরা বলছেন পরিচালকের মুন্সিয়ানারও প্রমাণ এই তাণ্ডব। অ্যাকশন, থ্রিল আর ইমোশনের এক বর্ণাঢ্য মিশেলে সিনেমাটি পরিণত হয়েছে ঈদ ২০২৫-এর সবচেয়ে আলোচিত এবং বাণিজ্যিকভাবে সফল ছবিতে। 

এদিকে মুক্তির নবম দিনেও সিনেমার টিকিট পাচ্ছে না দর্শক। এমনকি কাউন্টারেও খোঁজ নিয়েও মিলছে না কোনো আশার আলো। বসুন্ধরা শাখার স্টার সিনেপ্লেক্সের টিকিট ডেস্কে কর্মীরা জানালেন, "তাণ্ডব-এর টিকিট এখনই চাইলে সম্ভব নয়, আগামী তিন দিন পর্যন্ত সব শো একেবারে বুকড। চাইলে ‘ইনসাফ’, ‘উৎসব’, ‘নীলচক্র’ বা ‘এশা মার্ডার’ দেখতে পারেন।”।

এই পরিস্থিতিতে নির্মাতা পরামর্শ দিয়েছেন অনলাইন অগ্রিমি টিকিট কেটে এরপর তাণ্ডব দেখতে আসার। না হলে টিকিটি না পেয়ে সিনেমা না দেখেই ফিরে যেতে হতে পারে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ