গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় দেশের তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগাতে নতুন কর্মসূচি নিয়েছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদল। বিএনপির এই তিন সংগঠন যৌথভাবে আগামী মে মাসে চারটি বৃহত্তর বিভাগে দুই দিনব্যাপী সেমিনার ও সমাবেশ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে।

আজ রোববার দুপুরের দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে চারটি বৃহত্তর ভাগে বিভক্ত করে এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য হলো তরুণদের জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করা এবং একটি গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক ও ন্যায্য রাষ্ট্র নির্মাণের ভিত্তি রচনা করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য কেবল একটি রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ নয়, বরং একটি উন্নয়ন ও উৎপাদনমুখী তথা জনবান্ধব সরকার ব্যবস্থার প্রয়াস। যেখানে তরুণেরা কেবল ভোটার নয়, বরং আগামীর নীতিনির্ধারক, চিন্তাশীল অংশীদার ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামোর নির্মাতা।’

আব্দুল মোনায়েম মুন্না আরও বলেন, আমরা প্রতিটি বিভাগে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি আয়োজন করতে যাচ্ছি। প্রথম দিন একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে, যার শিরোনাম ‘তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ।’ এই সেমিনারে রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে, গণতন্ত্রকামী সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার তরুণ প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, উদীয়মান চিন্তাবিদ, তরুণ বক্তা ও উদ্যোক্তারা অংশ নেবেন। আলোচনায় উঠে আসবে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ, নগরায়ণ, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক অধিকার, এবং তারুণ্যের ক্ষমতায়নে একটি আধুনিক, মানবিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ নির্মাণ।

সংলাপের ভিত্তি বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলসমূহ ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রদত্ত দিকনির্দেশনা ও রাজনৈতিক দর্শন হবে বলেও জানান এই যুবদল নেতা।

কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান আব্দুল মোনায়েম মুন্না। তিনি বলেন, ‘সার্বভৌম বাংলাদেশে যেন গণমানুষের স্বাধীনচেতা আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ঘটে, সাম্য ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজে প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের যেন পরিবর্তন ঘটে-সেটিই আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য।’

চারটি কর্মসূচির সময়সূচি ও বিষয়বস্তু

তিন সংগঠন আয়োজিত যৌথ কর্মসূচির মধ্যে প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রামে। এই বিভাগে আগামী ৯ মে ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। আর ১০ মে হবে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’। দ্বিতীয় কর্মসূচি হবে খুলনায়; ১৬ থেকে ১৭ মে। এর মধ্যে ১৬ মে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার এবং ১৭ মে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে তৃতীয় কর্মসূচি তথা রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কর্মসূচি হবে বগুড়াতে। ২৩ মে ‘কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ সেমিনার এবং ২৪ মে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষ কর্মসূচি হবে ঢাকায়; ২৭ ও ২৮ মে। এই কর্মসূচিতে ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ অংশ নেবে। এর মধ্যে ২৭ মে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা ও অর্থনৈতিক মুক্তি’ শীর্ষক সেমিনার এবং ২৮ মে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ