সংবিধান ও গণতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

তিনি বলেছেন, “ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো- ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সংবিধান ও গণতন্ত্রের মধ্যে সুষম ভারসাম্য বজায় রাখা। এটি এরিস্টটলের ‘আইনের শাসন, ব্যক্তির শাসন নয়’- এই আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হতে হবে।”

রবিবার (৪ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ মিলনায়তনে সপ্তম একে খান মেমোরিয়াল আইন বক্তৃতা-২০২৫ অনুষ্ঠানে মূল বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘ন্যায়বিচারের ভবিষ্যৎ পুনঃকল্পনা’।

আরো পড়ুন:

সৈকতে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করল চবি বিএনসিসি

অপহরণের ৯ দিন পর চবির ৫ শিক্ষার্থী মুক্ত

আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.

এম. জাফর উল্লাহ তালুকদারের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, একে খান ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি সচিব সালাহউদ্দিন কাসেম খান ও ট্রাস্টি এএম জিয়াউদ্দিন খান।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের আদালতের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নিতে হবে:

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সুনির্দিষ্টভাবে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের আদালতের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নিতে হবে। এ উদ্যোগ নিতে হবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। ভোটের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুসংহত থাকবে। 

শুক্রবার (২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এবি পার্টির পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরে দেশের সিপাহী-জনতাও এ বার্তাটি দিয়েছিল। গণতন্ত্র ও জনগণের স্বাধীনতার বার্তা উপেক্ষা করে পতিত পলাতক স্বৈরাচার দীর্ঘ দেড় দশক স্বাধীন বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। ভবিষ্যতে যাতে আর কখনো বাংলাদেশকে তবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার দুঃসাহস না দেখায় পরাজিত তাবেদার অপশক্তি, তাদের দোসররা যেন আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সেটি হোক বাংলাদেশের রাজনীতির বন্দোবস্ত। লাখো প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের স্বাধীন বাংলাদেশ, পঁচাত্তরের আধিপত্যবিরোধী তাবেদারমুক্ত বাংলাদেশ,নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী বাংলাদেশ এবং ২০২৪ এর ফ্যাসিবাদবিরোধী বাংলাদেশ; বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে মানুষ কেন অকাতরে জীবন দিয়েছিলেন? কী ছিল এই শহীদদের স্বপ্ন? তারা কেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন? একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এসব প্রশ্ন খোঁজার জন্য ৫৪ বছর সময় খুব কম নয় বোধহয়। সেজন্য আমি মনে করি, শুধু শহীদদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণের মধ্যে দিয়েই রাজনৈতিক কর্মী বা নেতা হিসেবে আমাদের দায়িত্ববোধ শেষ হয়ে যায় না। শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠনের মাধ্যমেই কেবল আমরা তাদের সুমহান আত্মত্যাগের প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করতে পারি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমি রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে সরকার গঠন ও পরিবর্তনে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো অভ্যস্ত হয়ে উঠলে বাংলাদেশকে আর কেউ তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করে রাখতে সক্ষম হবে না।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫টি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। রাজনীতির ময়দানে আমরা তাদের স্বাগত জানাই। গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক আদর্শের ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে, আমি বিশ্বাস করি, দেশের স্বার্থের প্রশ্নে বাংলাদেশের পক্ষের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান এক ও অভিন্ন। উদ্দেশ্য এবং গন্তব্য এক ও অভিন্ন। কী সেটি? সেটি হচ্ছে দেশের স্বার্থ রক্ষা এবং অবশ্যই জনগণের কল্যাণ সাধন। তবে, যে রাজনৈতিক দলটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে, গণতন্ত্র হারিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসনের জন্ম দিয়েছিল; মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছিল, গুম-খুন-অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিল, বাংলাদেশকে একটি তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল, রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। গণতন্ত্রকামী জনগণ দেশের স্বার্থবিরোধী অপশক্তিকে কখনোই মেনে নেবে না।

তারেক রহমান বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে পলাতক স্বৈরাচার জনগণের ভোট ছাড়াই তিন বার অবৈধ সরকার গঠন করে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ আজ জানতে চায়, সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের আগামী দিনের রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক করে দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বা নিয়েছে? ব্লেইম গেম দিয়ে কিন্তু দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার আগামী দিনে অবশ্যই সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

“পলাতক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে যারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছেন, তাদের আমি বলতে চাই, লুটপাট ও দুর্নীতির শত শত কোটি টাকা হাতে নিয়ে সারা দেশে স্বৈরাচারের দোসররা পুনর্বাসিত হওয়ার অপেক্ষায়। স্থানীয় নির্বাচন পলাতক স্বৈরাচারের জন্য পুনর্বাসিত হওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ। যারা বলেছেন, তারা হয়ত এই বিষয়টি বিবেচনা করেননি। আমি অনুরোধ করব, বিষয়টিকে এভাবে বিবেচনা করার জন্য,” যোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। 

তারেক রহমান বলেন, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা না গেলে শেষ পর্যন্ত কোনো সংস্কারই হয়ত টেকসই হবে না। এ কারণেই রাষ্ট্র-রাজনীতির গুণগত সংস্কার এবং নাগরিকদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সব সময় জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, নির্বাচিত জাতীয় সংসদ এবং নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দল নির্বাচনের দাবি জানাবে, এটাই স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রীতি। অথচ, আমরা খেয়াল করছি, কিছুদিন ধরে অত্যন্ত সুকৌশলে দেশে এমন একটি আবহ তৈরির প্রচেষ্টা চলছে, যেখানে নির্বাচনের দাবি জানানোই যেন এক অপরাধ। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অবজ্ঞাসূচক বক্তব্য-মন্তব্য কিন্তু পলাতক স্বৈরাচারকে আনন্দ দেয়। অপরপক্ষে, এটি গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য অপমানজনক। রাষ্ট্র-রাজনীতি মেরামতের জন্য সংস্কারের কর্মযজ্ঞ চলছে। তবে, চলমান সংস্কারের জন্য যদি রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের দাবিকে অবজ্ঞা করতে হয়, তাহলে সংস্কারের তাৎপর্য কী? এটি বহু মানুষের প্রশ্ন আজ।

দেশের প্রতিটি দল সংস্কারের পক্ষে, এ দাবি করে তারেক রহমান বলেন, সংস্কার নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কেন এত সময়ক্ষেপণ করছে, এই নিয়ে জনগণের মনে ধীরে ধীরে প্রশ্ন বাড়ছে।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন—বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হকসহ এবি পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীরা।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফেসবুক পোস্টে নিজের কার্টুন জুড়ে দিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাইলেন তারেক রহমান
  • ন্যূনতম ঐকমত্যে পৌঁছে জাতীয় নির্বাচনের দাবি ১২ দলীয় জোটের
  • আসুন, সাংবাদিকের সুরক্ষার জন্য একত্রিত হই: তারেক রহমান
  • কোনো কমিশনের প্রস্তাব বাতিল করার বিপক্ষে বাসদ (মার্ক্সবাদী)
  • সংস্কারের ধোঁয়া দিয়ে এই সরকারকে দীর্ঘায়িত করার সুযোগ নেই: ড. মঈন খান
  • মানবিক সহায়তা করিডরের সঙ্গে জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা জড়িত
  • বিএনপির সমর্থনে ড. ইউনূস টিকে আছেন: দুদু
  • গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা এবং বামপন্থিদের উদ্যোগ 
  • রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের আদালতের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নিতে হবে: