বলিউডের প্রয়াত অভিনেতা ইরফান খানের ছেলে অভিনেতা বাবিল খানের একটি আবেগঘন ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ভিডিওতে বলিউডকে ‘ভুয়া’ বলে উল্লেখ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন ইরফানপুত্র বাবিল। পরে তার পরিবার ও টিমের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বাবিলের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা সেই ভিডিওতে অনন্যা পাণ্ডে, শনায়া কাপুর, সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী, রাঘব জুয়াল, আদর্শ গৌরব, অর্জুন কাপুর ও গায়ক অরিজিৎ সিংয়ের নাম উল্লেখ করেন বাবিল।

এ ঘটনার পর আজ একটি বিবৃতিতে বাবিলের মানসিক অবস্থার বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয় এবং তার ভক্তদের আশ্বস্ত করা হয় তিনি নিরাপদে আছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত কয়েক বছরে বাবিল খান তার কাজ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোলামেলা কথাবার্তার জন্য অনেক ভালোবাসা ও প্রশংসা পেয়েছেন। প্রত্যেক মানুষের মতো তারও কিছু কঠিন দিন থাকতে পারে। এটি ছিল তেমনই একটি দিন। আমরা তার সকল শুভানুধ্যায়ীদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, বাবিল সম্পূর্ণ নিরাপদে আছেন এবং খুব শিগগিরই ভালো বোধ করবেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে বাবিল সত্যিকার অর্থেই কিছু সহশিল্পীর প্রতি সম্মান প্রকাশ করেছেন, যাদের তিনি বিশ্বাস করেন। তারা বলিউডে আন্তরিকতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন।

অনন্যা পাণ্ডে, শনায়া কাপুর, সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী, রাঘব জুয়াল, আদর্শ গৌরব, অর্জুন কাপুর এবং অরিজিৎ সিংয়ের প্রতি তার এই শ্রদ্ধা এসেছে তাঁদের কাজের প্রতি ভালোবাসা, সততা এবং আবেগপূর্ণ প্রয়াস থেকে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কায় আতঙ্ক 

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নবম দিনে প্রবেশ প্রবেশ করেছে। গতকাল শনিবারও ইরান-ইসরায়েল দু’দেশই পাল্টাপাল্টি হামলা চালায়। ইসরায়েলি বাহিনী তেহরান, খোজেস্তান প্রদেশসহ ও ইরানের কয়েকটি শহরে হামলা করেছে। ইরানও নতুন করে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। সংঘাতে উভয়পক্ষে বেসামরিক নাগরিক হতাহত হচ্ছে প্রতিদিন। ইসরায়েল টার্গেট করে ইরানের সামরিক কমান্ডারদের হত্যা করছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের কর্মকর্তারা। সমঝোতার কোনো লক্ষণ নেই। এই অবস্থায় সংঘাত দীর্ঘ হওয়ার শঙ্কায় উপসাগরীয় দেশগুলো।  

সংঘাত বেশিদিন চলতে থাকলে এই অঞ্চল ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়বে অঞ্চলটি। কূটনীতিকরা হুশিয়ারি দিয়েছেন, কূটনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে সংঘাত থামানো না গেলে, এই অঞ্চলে দীর্ঘ বিপর্যয় নেমে আসবে। ইসরায়েলের সামরিক প্রধান ইয়াল জামির সতর্ক করে দিয়েছেন, তার দেশকে ইরানের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংঘাতের জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত।  

সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে ভয়াবহ পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের কূটনৈতিক উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ। তিনি বলেছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত উপসাগরীয় দেশগুলোকে পেছনে ফেলে দিচ্ছে। সংকট যতই দীর্ঘায়িত হবে ততই এই অঞ্চল বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। এজন্য দুইপক্ষের উচিত উত্তেজনা হ্রাস করা। তিনি এ ব্যাপারে কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর জোর দেন।  

গারগাশ বলেন, উপসাগরীয় দেশগুলো যে আঞ্চলিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়, এই সংঘাত সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে দেবে।   তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০০৩ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ফল এখন বহন করছে মধ্যপ্রাচ্য। ওই যুদ্ধের পরও মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা নেমে এসেছিল। বর্তমান চলমান সংঘাতে হরমুজ প্রণালী ঝুঁকিতে রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য আবারও বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।  
 
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে লক্ষ্যবস্তু করে, তাহলে উপসাগরীয় দেশগুলোর সামনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসে যাবে। তারা ইরানের পক্ষে যাবে, নাকি ইসরায়েল ও মিত্রদের পক্ষে থাকবে। এই সংঘাত পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোকে ভূ-রাজনৈতিক বিপদের ঘূর্ণিতে ফেলে দিয়েছে। এই অবস্থায় উপসাগরীয় দেশগুলো সূক্ষ্ম ভারসাম্যমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছে। যাতে নিরাপত্তা, জ্বালানি রপ্তানি এবং বিমান চলাচলসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলো ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানো যায়।   

ইরান গতকাল শনিবার ভোরে মধ্য ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের আগ্রাসনে যোগ দেয় তবে তা সবার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে হুশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলকে তিনি আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ কমাতে চাপ দেবেন এমন সম্ভবনা কম। তিনি মনে করেন এই অনুরোধ করা কঠিন। তবে আমরা প্রস্তুত, আমরা ইরানের সাথে কথা বলছি। ‘ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে এমন কোনও প্রমাণ নেই’ এই মন্তব্যের জন্য ট্রাম্প মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডকে প্রকাশ্যে তিরস্কার করছেন। তিনি মনে করেন, তুলশির বক্তব্যটি ভুল। পরে তুলশি তার বক্তব্য পরিবর্তন করে বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইরান পরমাণু অস্ত্র বানানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে।’   

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। পেজেশকিয়ান তাকে আশ্বস্ত করেছেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনে কাজ করছে না। 

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা ইসরায়েলি হামলার পর ইরানের নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনার ভেতরে তেজস্ক্রিয় এবং রাসায়নিক দূষণের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছে। তবে বর্তমানে সাইটের বাইরে তেজস্ক্রিয়তার কোনো পরিবর্তন হয়নি। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস সব পক্ষকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তা না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি কারও থাকবে না। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ