বন্দরে ব্যবসায়ীর দাঁত উপড়ে ফেলে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা
Published: 4th, May 2025 GMT
বন্দরে এক ব্যবসায়ীর দাঁত উপড়ে ফেলে নগদ আড়াই লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৬ জনকে আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার ১২ দিন পর শনিবার (৩ মে) রাতে ভুক্তভোগী দীল মোহাম্মদ (৪৫) বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
গত ২১ এপ্রিল নবীগঞ্জ পরিক্তাক্ত ফার্মেসী সংলগ্ন জাতীয় পার্টির বন্ধ অফিসের সামনে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। মামলার আসামিরা হলেন, । সিমান্ত (২৮), মেহেদি (২৯), হিমেল (২৬),আলিফ (৩০), তসিফ (২৭), মিরান (২৭)।তারা সকলেই নবীগঞ্জ (ইসলাম বাগ) এলাকার বাসিন্দা, সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, নাসিক ২৩ নং ওয়ার্ড নবীগঞ্জ কামাল উদ্দিনের মোড় এলাকার মৃত আলী হোসেনের ছেলে দীল মোহাম্মদ, পেশায় হুসিয়ারী ব্যবসায়ী। তিনি সাইনবোর্ড এলাকা থেকে গত ২১ এপ্রিল রাতে ব্যবসার নগদ দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে নবীগঞ্জ ঘাট পার হয়ে পায়ে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন।
এসময় নবীগঞ্জ পরিক্তাক্ত ফার্মেসী সংলগ্ন জাতীয় পার্টির বন্ধ অফিসের সামনে পৌঁছালে স্থানীয় একটি ছিনতাইকারী চক্র পথ গতিরোধ করে জোরপূর্বক টাকা, মোবাইল নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
পরে তাদের বাধা প্রদান করায় মুখের উপরের পার্টির সামনের দুই টি দাঁত উপড়ে ফেলে মারাত্বক রক্তাক্ত জখম করে। এসময় প্যান্টের বাম পকেটে থাকা নগদ দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা, প্যান্টের ডান পকেটে থাকা খুচরা এক হাজার ছয়শত) টাকা ও একটি বাটন সিম্ফনি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
পরে ওই ব্যবসায়ীর ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বন্দর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য নারায়নগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ ছ নত ই ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
ধামরাইয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে হেনস্তার শিকার পুলিশ
ঢাকার ধামরাইয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্য হেনস্তার শিকার হয়েছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির পরিবারের সদস্যদের দাবি, তারা পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন। এমনকি মারধরের অভিযোগও করেন তারা।
এ ঘটনায় ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছে পরিবারের এক সদস্য। ঘটনার জেরে প্রাথমিকভাবে পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।
রবিবার (৪ মে) ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পজেলার বালিয়া ইউনিয়নের পাবরাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
হেনস্তার শিকার দুই পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমান। তারা ধামরাই থানায় কর্মরত ছিলেন। তাদের থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্যরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে মো. সুমন নামে সিআর মামলায় (২৩৭/২৪) ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি ধরতে পাবরাইল এলাকায় একটি বাড়িতে যায় পুলিশের দুইজন এএসআই ও দুইজন কনস্টেবল। সেখানে আসামির বাড়িতে থাকা এক ব্যক্তি পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্যদের দেখে সন্দেহজনকভাবে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় এএসআই সেলিম তাকে ধরার চেষ্টা করেন। তবে ওই ব্যক্তি সেলিমকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা এক কনস্টেবল তাকে আটক করে হাতকড়া পরান। সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। আটকের পরিবারের সদস্যরাও পুলিশকে কিল-ঘুষি দেন। এসময় আটককৃত ব্যক্তি নিজেকে বিমানবাহিনীর কর্পোরাল পরিচয় দেন। এরপর তাৎক্ষণিক তার হাতকড়া খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সেখান থেকে চলে যান। এরমধ্যে হাতকড়া পরানোর কারণে তারা তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করে। ধস্তাধস্তিতে চার পুলিশ সদস্যই শরীরে আঘাত পান।
এদিকে এ ঘটনার জেরে জসীম উদ্দিন নামে ওই বিমান বাহিনির সদস্য ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন।
সাধারণ ডায়রিতে তার দাবি, পুলিশ সদস্যরা তার বাড়ি এসে তাকে উঠানে ডেকে নিয়ে হাতে হাতকড়া পরায় ও রাস্তার দিকে টানতে থাকে। এসময় পুলিশ সদস্যদের দেখে তিনি নিজের পরিচয় দেন ও তার স্ত্রী বিমানবাহিনীর পরিচয়পত্র দেখান। তবে পুলিশ সদস্যরা সেই পরিচয়পত্র ছুড়ে ফেলে। এএসআই সেলিম তার স্ত্রীকে চুলের মুঠি ধরে টেনে পেছনে কয়েকটি লাথি মারে। এরপর তাকে টেনে এনে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে শুকনা ভুট্টা গাছের স্তুপের ওপর ফেলে দেয়। তার লুঙ্গি খুলে উলঙ্গ করে লাঠি দিয়ে শরীরে আঘাত করে। এতে তার মুখে রক্তাক্ত জখম হয়।
ঘটনার শুরু থেকে একাধিকবার তিনি পরোয়ানা আছে কিনা জানতে চাইলেও পুলিশ কোনো পরোয়ানা দেখায়নি। তার পিতা আক্কাছ আলী এগিয়ে এলে তাকেও পুলিশ মারধর করে বলে অভিযোগে লেখা হয়েছে। পরবর্তীতে এএসআই সেলিম তার ফোনে কথা বলার পর তার হাতকড়া খুলে দেন। পরে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, “ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের উপস্থিতি পেয়ে এক ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ তাকে আটকানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে তিনি এএসআই সেলমিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তখন পুলিশের অন্য সদস্যরা আটক করে হ্যান্ডকাফ পরালে তিনি নিবৃত হন।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজের নাম জসিম ও বিমান বাহিনিতে কর্মরত বলে জানান। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি তারই আপন ভাই। পরিচয় পেয়ে তার হ্যান্ডকাফ খুলে দেওয়া হয়। সেখানে অন্য কাউকে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুই পুলিশ সদস্যকে জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তদন্ত করা হবে। এরপর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/আরিফুল/এস