ঢাকার ধামরাইয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্য হেনস্তার শিকার হয়েছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির পরিবারের সদস্যদের দাবি, তারা পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন। এমনকি মারধরের অভিযোগও করেন তারা। 

এ ঘটনায় ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছে পরিবারের এক সদস্য। ঘটনার জেরে প্রাথমিকভাবে পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।

রবিবার (৪ মে) ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পজেলার বালিয়া ইউনিয়নের পাবরাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

হেনস্তার শিকার দুই পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমান। তারা ধামরাই থানায় কর্মরত ছিলেন। তাদের থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্যরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে মো. সুমন নামে সিআর মামলায় (২৩৭/২৪) ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি ধরতে পাবরাইল এলাকায় একটি বাড়িতে যায় পুলিশের দুইজন এএসআই ও দুইজন কনস্টেবল। সেখানে আসামির বাড়িতে থাকা এক ব্যক্তি পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্যদের দেখে সন্দেহজনকভাবে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় এএসআই সেলিম তাকে ধরার চেষ্টা করেন। তবে ওই ব্যক্তি সেলিমকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। 

একপর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা এক কনস্টেবল তাকে আটক করে হাতকড়া পরান। সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। আটকের পরিবারের সদস্যরাও পুলিশকে কিল-ঘুষি দেন। এসময় আটককৃত ব্যক্তি নিজেকে বিমানবাহিনীর কর্পোরাল পরিচয় দেন। এরপর তাৎক্ষণিক তার হাতকড়া খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সেখান থেকে চলে যান। এরমধ্যে হাতকড়া পরানোর কারণে তারা তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করে। ধস্তাধস্তিতে চার পুলিশ সদস্যই শরীরে আঘাত পান।

এদিকে এ ঘটনার জেরে জসীম উদ্দিন নামে ওই বিমান বাহিনির সদস্য ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন।

সাধারণ ডায়রিতে তার দাবি, পুলিশ সদস্যরা তার বাড়ি এসে তাকে উঠানে ডেকে নিয়ে হাতে হাতকড়া পরায় ও রাস্তার দিকে টানতে থাকে। এসময় পুলিশ সদস্যদের দেখে তিনি নিজের পরিচয় দেন ও তার স্ত্রী বিমানবাহিনীর পরিচয়পত্র দেখান। তবে পুলিশ সদস্যরা সেই পরিচয়পত্র ছুড়ে ফেলে। এএসআই সেলিম তার স্ত্রীকে চুলের মুঠি ধরে টেনে পেছনে কয়েকটি লাথি মারে। এরপর তাকে টেনে এনে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে শুকনা ভুট্টা গাছের স্তুপের ওপর ফেলে দেয়। তার লুঙ্গি খুলে উলঙ্গ করে লাঠি দিয়ে শরীরে আঘাত করে। এতে তার মুখে রক্তাক্ত জখম হয়। 

ঘটনার শুরু থেকে একাধিকবার তিনি পরোয়ানা আছে কিনা জানতে চাইলেও পুলিশ কোনো পরোয়ানা দেখায়নি। তার পিতা আক্কাছ আলী এগিয়ে এলে তাকেও পুলিশ মারধর করে বলে অভিযোগে লেখা হয়েছে। পরবর্তীতে এএসআই সেলিম তার ফোনে কথা বলার পর তার হাতকড়া খুলে দেন। পরে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, “ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের উপস্থিতি পেয়ে এক ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ তাকে আটকানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে তিনি এএসআই সেলমিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তখন পুলিশের অন্য সদস্যরা আটক করে হ্যান্ডকাফ পরালে তিনি নিবৃত হন। 

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজের নাম জসিম ও বিমান বাহিনিতে কর্মরত বলে জানান। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি তারই আপন ভাই। পরিচয় পেয়ে তার হ্যান্ডকাফ খুলে দেওয়া হয়। সেখানে অন্য কাউকে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুই পুলিশ সদস্যকে জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তদন্ত করা হবে। এরপর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/আরিফুল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এএসআই স ল ম প ল শ সদস য কর মকর ত ঘটন র এ ঘটন হ তকড়

এছাড়াও পড়ুন:

সেপটিক ট্যাংকে ভাসছিল দুই শিশুর লাশ

ফেনীর ছাগলনাইয়ায় পৌরসভায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পৌরসভার পশ্চিম ছাগলনাইয়ার সাতমন্দির রোড এলাকা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। 

ছাগলনাইয়া থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম এ খবর নিশ্চিত করেছেন। মৃত দুই শিশুর বাবাই প্রবাসে থাকেন।

মৃতরা হল– ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পূর্ব শিলুয়া গ্রামের কাতার প্রবাসী ইকবাল হোসেনের ছেলে ফয়সাল ফারাবী (৯) ও ঘোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী সামছুল হকের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (৮)। তাদের পরিবার ছাগলনাইয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাত মন্দির রোড এলাকার শেখ ভবনে ভাড়া বাসায় থাকে। এদের মধ্যে ফারাবী স্থানীয় ইম্পেরিয়াল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এবং লিহান ছাগলনাইয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃত দুই শিশু খেলার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন ভবনে যায়। সেখানে খেলার সময় অসাবধানতাবশত তারা হয়তো সেপটিক ট্যাংকে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিকেলে দুই শিশু খেলার জন্য বাসা থেকে বের হয়। সন্ধ্যার পর তারা বাসায় না ফিরলে স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে রাতে স্থানীয় এক যুবক নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংকের মুখে এক জোড়া জুতা দেখতে পায়। পরে পানিতে ভর্তি ট্যাংকের ভেতরে আলো দিয়ে দুই শিশুকে পড়ে থাকতে দেখে। দ্রুত পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলে রাত ১০টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহযোগিতায় দুই শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

দুই শিশুর এমন মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার দুটির আহাজারিতে ভরে উঠেছে বাতাস। মর্মান্তিক এ ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না কেউই। স্থানীয় লোকজন এটাকে নিছক দুর্ঘটনা বলছেন না। তাদের অভিযোগ, নির্মাণাধীন ভবনের মালিকের অবহেলার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেফটি ট্যাংকটির ঢাকনা খোলা ছিল। এটি বন্ধ রাখলে এ দুর্ঘটনা এড়ানো যেতো।

ছাগলনাইয়া থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দুই শিশু খেলার ছলে অসাবধানতাবশত সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যায়। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেপটিক ট্যাংকে ভাসছিল দুই শিশুর লাশ
  • চা বিক্রেতা জুলাই যোদ্ধাকে মারধর, পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত
  • ইবির ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ভর্তি শুরু ২৯ জুন
  • হাওরতীরের ব্যাটনবাড়ি
  • মায়ের মৃত্যুর খবরে দেশে আসা প্রবাসীকে পিটিয়ে হত্যা
  • চাঁদপুরে পরিত্যক্ত কক্ষে চলছে আরএনবি অফিসের কার্যক্রম
  • মাদক কারবারিদের গুলিতে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে হাসপাতালে আইজিপি
  • ক্লাব বিশ্বকাপে দুর্দান্ত সূচনা চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটির
  • পল্টনে মাদক কারবারিদের গুলিতে ডিবির ২ সদস্য আহত
  • ঢাকার পল্টনে মাদক কারবারিদের গুলিতে ডিবির দুই সদস্য আহত: পুলিশ