ধামরাইয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে হেনস্তার শিকার পুলিশ
Published: 4th, May 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্য হেনস্তার শিকার হয়েছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির পরিবারের সদস্যদের দাবি, তারা পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন। এমনকি মারধরের অভিযোগও করেন তারা।
এ ঘটনায় ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছে পরিবারের এক সদস্য। ঘটনার জেরে প্রাথমিকভাবে পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।
রবিবার (৪ মে) ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
হেনস্তার শিকার দুই পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমান। তারা ধামরাই থানায় কর্মরত ছিলেন। তাদের থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্যরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে মো. সুমন নামে সিআর মামলায় (২৩৭/২৪) ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি ধরতে পাবরাইল এলাকায় একটি বাড়িতে যায় পুলিশের দুইজন এএসআই ও দুইজন কনস্টেবল। সেখানে আসামির বাড়িতে থাকা এক ব্যক্তি পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্যদের দেখে সন্দেহজনকভাবে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় এএসআই সেলিম তাকে ধরার চেষ্টা করেন। তবে ওই ব্যক্তি সেলিমকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা এক কনস্টেবল তাকে আটক করে হাতকড়া পরান। সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। আটকের পরিবারের সদস্যরাও পুলিশকে কিল-ঘুষি দেন। এসময় আটককৃত ব্যক্তি নিজেকে বিমানবাহিনীর কর্পোরাল পরিচয় দেন। এরপর তাৎক্ষণিক তার হাতকড়া খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সেখান থেকে চলে যান। এরমধ্যে হাতকড়া পরানোর কারণে তারা তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করে। ধস্তাধস্তিতে চার পুলিশ সদস্যই শরীরে আঘাত পান।
এদিকে এ ঘটনার জেরে জসীম উদ্দিন নামে ওই বিমান বাহিনির সদস্য ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন।
সাধারণ ডায়রিতে তার দাবি, পুলিশ সদস্যরা তার বাড়ি এসে তাকে উঠানে ডেকে নিয়ে হাতে হাতকড়া পরায় ও রাস্তার দিকে টানতে থাকে। এসময় পুলিশ সদস্যদের দেখে তিনি নিজের পরিচয় দেন ও তার স্ত্রী বিমানবাহিনীর পরিচয়পত্র দেখান। তবে পুলিশ সদস্যরা সেই পরিচয়পত্র ছুড়ে ফেলে। এএসআই সেলিম তার স্ত্রীকে চুলের মুঠি ধরে টেনে পেছনে কয়েকটি লাথি মারে। এরপর তাকে টেনে এনে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে শুকনা ভুট্টা গাছের স্তুপের ওপর ফেলে দেয়। তার লুঙ্গি খুলে উলঙ্গ করে লাঠি দিয়ে শরীরে আঘাত করে। এতে তার মুখে রক্তাক্ত জখম হয়।
ঘটনার শুরু থেকে একাধিকবার তিনি পরোয়ানা আছে কিনা জানতে চাইলেও পুলিশ কোনো পরোয়ানা দেখায়নি। তার পিতা আক্কাছ আলী এগিয়ে এলে তাকেও পুলিশ মারধর করে বলে অভিযোগে লেখা হয়েছে। পরবর্তীতে এএসআই সেলিম তার ফোনে কথা বলার পর তার হাতকড়া খুলে দেন। পরে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, “ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের উপস্থিতি পেয়ে এক ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ তাকে আটকানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে তিনি এএসআই সেলমিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তখন পুলিশের অন্য সদস্যরা আটক করে হ্যান্ডকাফ পরালে তিনি নিবৃত হন।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজের নাম জসিম ও বিমান বাহিনিতে কর্মরত বলে জানান। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি তারই আপন ভাই। পরিচয় পেয়ে তার হ্যান্ডকাফ খুলে দেওয়া হয়। সেখানে অন্য কাউকে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুই পুলিশ সদস্যকে জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তদন্ত করা হবে। এরপর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/আরিফুল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এএসআই স ল ম প ল শ সদস য কর মকর ত ঘটন র এ ঘটন হ তকড়
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিক দিবসে রিকশাচালকদের পাশে নারায়ণগঞ্জ ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ’
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে তীব্র তাপদাহ মোকাবেলায় নারায়ণগঞ্জ শহরের রিকশা চালকদের মাঝে গামছা এবং টুপি বিতরণ করেছে 'বসুন্ধরা শুভসংঘ'র নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে শহরের মিশনপাড়া এলাকায় শতাধিক রিকশাচালকদের হাতে এসব সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।
এসময় এসব সামগ্রী পেয়ে উচ্ছ্বসিত রিকশা শ্রমিকেরা জানান, বসুন্ধরা গ্রুপের কারণে আরও অনেক মানুষের উপকার হয় সেজন্য তাদের জন্য আল্লাহ'র কাছে অনেক অনেক দোয়া করি। তীব্র রোদের কারণে এতোদিন আমাদের রিকশা চালাতে অনেক কষ্ট হতো। এগুলো পাওয়াতে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। আমরা মহাখুশি।
বসুন্ধরা শুভসংঘ'র নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী মামুন বলেন, শ্রমিক দিবস উপলক্ষ্যে আমরা রিকশাচালকদের মাঝে গামছা এবং ক্যাপ বিতরণ করে তাদের জন্য একটু স্বস্থির ব্যবস্থা করেছি। আগামীতে আরও বড় পরিসরে এই কার্যক্রম করার ইচ্ছা রয়েছে।
বসুন্ধরা শুভসংঘ'র নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএসএ মনির বলেন, রিকশা চালকেরা তীব্র রোদে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। আমাদের এই উদ্যোগের ফলে তাদের কষ্ট যদি কিছুটাও লাঘব হয় তাহলেই আমাদের এই কার্যক্রম স্বার্থক বলে মনে করি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির উপদেষ্টা নিউজ টুয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি শরীফ সুমন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি মোবাশ্বির শ্রাবণ, কালের কণ্ঠ'র জেলা প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম রাজু, সহ-সভাপতি কামাল হোসেন কালিম, যুগ্ম সম্পাদক দীপ বাপ্পি, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী মঞ্জুর বকুল, প্রচার সম্পাদক রাসেল চৌধুরী, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মনজুর আহমেদ আকাশ, সাংবাদিক মেহেদী হাসান সজীব, নাহিন মুজতবা সোহান, ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম সানু প্রমুখ।