যুক্তরাষ্ট্রে চোখের মণি স্ক্যান করে ডিজিটাল পরিচিতি তৈরির কার্যক্রম শুরু করছেন স্যাম অল্টম্যান
Published: 5th, May 2025 GMT
বিশ্বজুড়ে একটি নতুন ডিজিটাল পরিচয়ব্যবস্থা এবং আর্থিক লেনদেনের নতুন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যান। এ জন্য ২০১৯ সালে ম্যাক্স নভেনস্টার্ন ও অ্যালক্সে ব্লানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ‘ওয়ার্ল্ড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের চোখের মণি বা আইরিস স্ক্যান করে ডিজিটাল পরিচিতি তৈরি করা, যা ভবিষ্যতে ডিজিটাল পাসপোর্ট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। ২০২৩ সাল থেকে চোখের মণি স্ক্যান করে ডিজিটাল পরিচিতি তৈরি করা প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে ২০টি দেশের ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষের চোখের মণি স্ক্যান করেছে। এবার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারীদের চোখের মণি স্ক্যান করে ডিজিটাল পরিচিতি তৈরি করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি।
চোখের মণি স্ক্যান করে ডিজিটাল পরিচিতি তৈরির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা, অস্টিন, লস অ্যাঞ্জেলেস, মিয়ামি, ন্যাশভিল ও সান ফ্রান্সিসকো শহরে ‘অর্ব’ যন্ত্র স্থাপন করেছে ওয়ার্ল্ড। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, গোলক আকৃতির অর্ব যন্ত্রটি মানুষের চোখের মণি স্ক্যান করে ‘আইরিসকোড’ নামে একটি ডিজিটাল পরিচয়সংকেত তৈরি করে। এরপর সেটি যুক্ত করা হয় ‘ওয়ার্ল্ড আইডি’–এর সঙ্গে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এই ডিজিটাল আইডির মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী অনলাইনে বেনামে নিজের পরিচয় যাচাই করতে পারবেন। ওয়েবসাইটে লগইন, সরকারি সেবা গ্রহণ বা ভবিষ্যতে এমনকি ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
ওয়ার্ল্ডের দাবি, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে প্রায় সাড়ে সাত হাজার অর্ব যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ছয়টি শহরের নির্ধারিত কেন্দ্রে যন্ত্রটি বসানো হলেও রেইজার গেমিং স্টোর, ক্যাফে ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আরও অর্ব স্থাপন করা হবে। ব্যবহারকারীদের চোখের তথ্য বা আইরিসকোড কোনো কেন্দ্রীয় সার্ভারে রাখা হচ্ছে না। ব্লকচেইনে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এটি একটি বিকেন্দ্রীকৃত ও নিরাপদ তথ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তি।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড জ ট ল পর চ ত র চ খ র মণ স ক য ন কর ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
ভোক্তার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের স্বার্থও দেখতে হবে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তায় জোর দিতে গিয়ে কৃষকের দিকটা সেভাবে দেখা হয় না। শহুরে মানুষের খাদ্য জোগান এবং দাম নাগালে রাখতে আমদানির মাধ্যমে কৃষকের ক্ষতি করার চেষ্টা করা হয়। আমাদের খাদ্যে সার্বভৌমত্ব অর্জন করতে হবে, যাতে ভোক্তা এবং কৃষক দুই পক্ষই উপকৃত হন। তাই ভোক্তার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের স্বার্থও দেখতে হবে।
সোমবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে বণিক বার্তার আয়োজনে 'কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষকের ন্যায্যতা সম্মেলন ২০২৫' এর প্রথম অধিবেশন 'খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষকের ন্যায্যতা' অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের কথা বলা হচ্ছে। সেটা করতে গিয়ে কোনো ক্ষতি করছি কি না সেটিও দেখতে হবে। এর কারণে গবাদিপশুর ব্যবহার কমে যাচ্ছে। এখানে ভোক্তার দিকটাও দেখতে হবে যেন তারা নিরাপদ খাদ্য পায়। আবার কৃষকের দিকটাও দেখতে হবে যেন তারা উৎপাদন করে লাভবান হন। খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে যদি প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে ফেলি তাহলে আবার সেটি খাদ্য পণ্য হবে কি? সেটা শিল্প পণ্য হয়ে যাবে। যদি কৃষি পণ্যকে শিল্প পণ্যের মত উৎপাদন করি তাহলে সেটি খাদ্য থাকবে না এবং সেখানে কৃষকও থাকবে না।
উপদেষ্টা বলেন, এক সময় কৃষির অধীনেই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ছিল। এখন এগুলো আলাদা হয়েছে। পণ্যভিত্তিক কৃষকও আলাদা হয়েছে। মৎস্যের ক্ষেত্রে আমরা যদি দেখি, উন্মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ আরোহণে বাংলাদেশ ভারতের পরই ২য় স্থানে আছে। অথচ হাওর, নদী-নালা ধ্বংস করছি আমরা। জলাশয়গুলোকে রক্ষা করতে চাচ্ছি যখন তখন আবার দেখা যাচ্ছে কৃষিতে ব্যবহৃত কীটনাশকে মাছ মারা যাচ্ছে।
হাওরে কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাওর মাছের অনেক বড় একটি উৎস। আবার অনেক সময় আগাছা পরিষ্কার না করে কীটনাশক দিয়ে সেগুলো ধ্বংস করা হয়। এতে করে গরু ছাগলসহ অন্যান্য প্রাণীর ক্ষতি হচ্ছে। এমন ঘটনাও আমরা দেখেছি, জমির বাঁধাকপি খেয়ে ছাগল মরে গেছে। কারণ সেখানে কীটনাশক ছিল। সেই বাঁধাকপি কিন্তু মানুষও খাচ্ছে! ফলে এখানে একটা নীতি গ্রহণ করা দরকার। এসব বিষয়ে কৃষক পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের এখানে মাংস উৎপাদন চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। আগস্টের বন্যার কারণে ডিমের দাম যখন বেড়ে গিয়েছিল, তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানি করে। তখন এখানে যারা উৎপাদক তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এখন আবার যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা থেকে মাংস আমদানির জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। তারা কম দামে মাংস দেবে। এখন আমাদের তো লাখ লাখ খামারি আছে। আমাদের এখানে এক কোটি ২৪ লাখের বেশি গরু ছাগল মজুদ আছে। ২২ লাখের মত চাহিদার চেয়ে বেশি আছে। এটি করলে এখানে খামারিরা টিকে থাকতে পারবে না।
বণিক বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম, টি.কে গ্রুপের গ্রুপ ডিরেক্টর মোহাম্মদ মুস্তফা হায়দার, এসিআই এগ্রি বিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী, ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান, সরকারি-বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।