মাওলানা রঈস হত্যা: দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ
Published: 5th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগরীর সাবেক সভাপতি ও গাজীপুরের এক মসজিদের ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ রঈস উদ্দিনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত ও এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসেনাসহ বিভিন্ন সংগঠন।
চট্টগ্রাম:
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম মহানগরীর অক্সিজেন, সল্টগোলা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত ও ইসলামী ছাত্রসেনা।
পরে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনী লাঠিচার্জ করে ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করে।
রাঙামাটি:
সোমবার সকালে রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন পার্বত্য ইমাম পরিষদের রাঙামাটি শাখার নেতাকর্মীরা।
মানববন্ধনে তারা বলেন, মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার পর ১০ দিন অতিবাহিত হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন পর্যন্ত চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করেনি। এ ঘটনায় একদিকে যেমন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তেমনই ইমামদের প্রতি সরকারের বিমাতাসুলভ আচরণও প্রকাশ পায়।
পার্বত্য ইমাম পরিষদের আহ্বায়ক আলহাজ মাওলানা এম এ মুস্তফা হেজাজীর সভাপতিত্বে ও সদস্য মাওলানা বোরহান উদ্দিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন শান্তিনগর জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শফিউল আলম আল ক্বাদেরী, রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, তৈয়বিয়া পাহাড় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা রেজাউল করিম নঈমী, কাঁঠালতলী জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা সেকান্দর হোসেন রেজভী, আমানতবাগ জামে মসজিদের খতিব আলহাজ মাওলানা মো.
গত ২৭ এপ্রিল সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দারাবাদ এলাকার মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ রঈস উদ্দিনকে শিশু বলাৎকারের অভিযোগে গাছে বেঁধে মারধর করে একদল লোক। সকাল ১০টার দিকে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরদিন ভোরে কারাগারে মারা যান তিনি।
ঢাকা/রেজাউল/শঙ্কর/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিঠা ব্যবসায়ী শাকিলার অনৈতিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী, মানববন্
রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের ১২ নম্বর সেক্টর এলাকায় পিঠা ব্যবসায়ী শাকিলা ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে চরম অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী ও আশপাশের ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা একত্র হয়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, শাকিলা দীর্ঘদিন ধরে পিঠা বিক্রির আড়ালে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। তার বিরুদ্ধে খাবারের দাম বেশি রাখা, ক্রেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, প্রতিবাদ করলে গালিগালাজ ও শারীরিক নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, পিঠার দোকান ঘিরে মাদকসেবীদের আড্ডা, রাতে অসামাজিক কার্যকলাপ এবং প্রতিনিয়ত ঝগড়া-বিবাদের ঘটনায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, গত সোমবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় শাকিলার স্বজন দিপু, রাসেল, শাকিলসহ আরও কয়েকজন মিলে ‘নিপা পিঠাঘর’ নামে একটি নারীর দোকানে পিঠা খেতে গেলে পিঠা দিতে বিলম্ব হওয়ায় তারা দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করে। প্রতিবাদ করলে দোকানদার নারীকে বেধড়ক মারধর করে, এমনকি তার শরীরের কাপড়ও টেনে ছিঁড়ে ফেলে। তার চিৎকারে খালা ছুটে এলে তাকেও আঘাত করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনাস্থলে থাকা পূর্বাচল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে ওই নারীকে আঘাত করা হয়, ফলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দুইজন হামলাকারীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও কিছুক্ষণ পরই পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ সহযোগিতা করেনি, বরং অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে সাফাই গেয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শেষমেশ বুধবার নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।
এ বিষয়ে পূর্বাচল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং অভিযুক্তদের আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে আসি। পরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের অনুরোধে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশের পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে হামলা করার অভিযোগ সত্য নয়, তবে অভিযুক্তরা মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।”
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, “ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন। পুলিশি দায়িত্বে অবহেলা বা পিস্তল ছিনতাইয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলাকাবাসীর দাবি, পিঠা ব্যবসার আড়ালে চলা এসব অপকর্ম বন্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। একই সঙ্গে শাকিলা ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।